The news is by your side.

স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া: হৃদরোগ ও উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়ে

0 97

সবচেয়ে কাছের মানুষের সঙ্গেই সবচেয়ে বেশি ঝগড়া হয়। কাছেই আমাদের প্রত্যাশা থাকে বেশি। যেমন ঘটে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে।

একটি সম্পর্ক ভালো রাখার জন্য মাঝে মাঝে একটু হলেও ঝগড়ার প্রয়োজন আছে। এতে পরস্পরের মনের ক্ষোভগুলো পরিষ্কার হয়ে যায়। এদিকে মনোবিদরা বলছেন, ঝগড়ার সময় এমন কোনো কথা বলা যাবে না যাতে সম্পর্কটাই নষ্ট হয়ে যায়।

তবে প্রায়ই ঝগড়ার প্রবণতা কিন্তু সম্পর্কে বিচ্ছেদ ঘটাতে পারে, এমনকি কঠিন ব্যাধি যেমন হৃদরোগ থেকে মৃত্যুঝুঁকিও বাড়িয়ে তুলতে পারে দম্পতির মধ্যে।

উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়ে

চাপযুক্ত সম্পর্ক দীর্ঘমেয়াদি উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়ায়। ২০১৬ সালের এক সমীক্ষায় মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা দেখেন, বিবাহিতদের মধ্যে দাম্পত্য রেষারেষি ও নিত্যকলহের কারণে পুরুষদের মধ্যে রক্তচাপ বেড়ে যায়। এ ক্ষেত্রে নারীদের রক্তচাপও বাড়তে পারে তবে পুরুষের চেয়ে কম।

মানসিক অবসাদ বাড়ে

দাম্পত্যজীবন বিষাক্ত হয়ে উঠলে তা দীর্ঘস্থায়ী স্ট্রেসের কারণ হতে পারে।

দীর্ঘস্থায়ী চাপ মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে। প্রকৃতপক্ষে দীর্ঘস্থায়ী স্ট্রেস ইমিউন সিস্টেমের স্বাস্থ্য, থাইরয়েড ও মেজাজের ব্যাধির ঝুঁকি বাড়ায়।

প্রদাহ বাড়ে

স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কলহ শরীরে উচ্চ মাত্রার প্রদাহ সৃষ্টি হতে পারে। হার্ভার্ড হেলথের মতে, মানসিক উত্তেজনার কারণে শরীরে প্রদাহের মাত্রা বাড়তে পারে। যা ক্রমেই গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যার দিকে পরিচালিত করে।

সাইকোলজিক্যাল বুলেটিন জার্নালে প্রকাশিত ২০১৪ সালের এক সমীক্ষায় দেখা যায়, স্ট্রেস উল্লেখযোগ্যভাবে ইমিউন সিস্টেমকে পরিবর্তন করে ও প্রদাহ বাড়ায়।

বিষণ্ণতা বাড়ে

দাম্পত্যজীবন ভালো না থাকলে যে কারো বাড়বে বিষণ্ণতার ঝুঁকি। মেন্টাল হেলথ ফাউন্ডেশনের গবেষণায় উঠে এসেছে, একটি বিষাক্ত সম্পর্কে থাকার চেয়ে অবিবাহিত হওয়া ভালো। গবেষণায় দেখা গেছে, সামাজিকভাবে কোনো মানুষ প্রত্যাখ্যাত হলে মেজর ডিপ্রেসিভ ডিসঅর্ডারের (এমডিডি) ঝুঁকি বেড়ে যায়। দাম্পত্যে অশান্তি কিংবা বিচ্ছেদের কারণেও মানসিক এই সমস্যায় ভুগতে পারেন যে কেউ।

আয়ুও কমে যেতে পারে

দীর্ঘমেয়াদি দাম্পত্যে অশান্তি আয়ুও কমিয়ে দিতে পারে। দাম্পত্যে সুখী থাকলে যেমন আয়ু বাড়ে ঠিক তেমনই এর উল্টোটি ঘটে একটি বিষাক্ত সম্পর্কের মধ্য দিয়ে জীবন কাটালে। মানসিক চাপ মানুষের জীবনধারা পরিবর্তন করে দেয়। ফলে অস্বাস্থ্যকর খাওয়া, মাদকাসক্ত, কম ঘুম, মানসিক চাপ ইত্যাদি শারীরিক বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। ২০১৬ সালে প্রসিডিংস অব দ্য ন্যাশনাল একাডেমি অব সায়েন্সেসের রিপোর্ট করা এক সমীক্ষায় জানা যায়, সামাজিক সম্পর্ক ও মৃত্যুহারের মধ্যে সম্পর্ক আছে। সামাজিক চাপের সম্মুখীন ব্যক্তিদের মধ্যে বয়স বাড়তেই স্ট্রেসসম্পর্কিত রোগ ও প্রদাহের ঝুঁকি বেশি। যা অকালমৃত্যুর কারণ হতে পারে।

ওজন বেড়ে যায়

সাইকোলজি টুডেতে প্রকাশিত এক সমীক্ষার রিপোর্ট অনুসারে, যারা ব্যক্তিগত জীবনে খুশি নন কিংবা দাম্পত্য কলহের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন, তাদের মধ্যে ওজন বেড়ে যাওয়ার প্রবণতা বেশি। ফলে এমন ব্যক্তিদের মধ্যে ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের মতো স্থূলতা-সম্পর্কিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি। গবেষকরা ১১ বছর ধরে ৮০০০ মানুষের ওপর সমীক্ষা চালিয়ে এই তথ্য জানান।

হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে

তিক্ত সম্পর্কের কারণে হৃদরোগের ঝুঁকিও বাড়ে। দ্য জার্নাল অব জেরোন্টোলজি : সিরিজ বি’তে প্রকাশিত একটি সমীক্ষা অনুসারে, মানসিক চাপ রক্তচাপ বাড়ায়, যা অনেক গবেষণায় দেখা গেছে। দীর্ঘদিন এই সমস্যায় ভুগলে তা হৃদরোগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এ ছাড়া মানসিক চাপের কারণে শারীরিক আরো যেসব লক্ষণ দেখা দেয় সেগুলো হলো- মাথা ঘোরা, শরীর ব্যথা ও যন্ত্রণা, মাথা ব্যথা, পেশিতে টান, ঘুমের সমস্যা, হার্টবিট বেড়ে যাওয়া, চরম ক্লান্তি, পেট খারাপ কিংবা কাঁপুনি।

Leave A Reply

Your email address will not be published.