The news is by your side.

শেখ হাসিনার প্রত্যাশিত বিজয় মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন্য ধাক্কা : ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল

0 105

রবিবার বাংলাদেশে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এই প্রেক্ষাপটে প্রভাবশালী মার্কিন সংবাদপত্র ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের মতামত বিভাগে প্রকাশিত লেখায় বলা হয়েছে, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টানা চতুর্থবারের মতো নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন বলেই ব্যাপকভাবে মনে করা হচ্ছে।

পত্রিকাটির কলামে মন্তব্য করা হয়েছে, শেখ হাসিনার এই প্রত্যাশিত বিজয় হবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জন্য একটি ধাক্কা। কারণ বাইডেন বাংলাদেশ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির কেন্দ্রস্থলে রেখেছেন ‘গণতন্ত্র’ প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টাকে।

শেখ হাসিনা বর্তমানে বিশ্বের যেকোনো নির্বাচিত নারী নেতার চেয়ে বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় আছেন। তিনি কট্টরপন্থীদের দমন করেছেন, সেনাবাহিনীর ওপর বেসামরিক প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করেছেন এবং দেশকে চরম দারিদ্র্য থেকে বের করে এনেছেন। এসব অর্জনের পাশাপাশি ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কৌশলকে ‘গেম অব থ্রোনস’-এর সঙ্গে তুলনা করেছে।

মতামতে বলা হয়, বাইডেন প্রশাসন শেখ হাসিনার সরকারকে মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং গণগ্রেপ্তার করে বিরোধী দলগুলোকে ভয় দেখানোর অভিযোগ তুলে শাস্তি দেওয়ার চেষ্টা করেছে।

এটি তারা করেছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের সঙ্গে নিজেদের পার্থক্য দেখাতে। তবে এসব মার্কিন পদক্ষেপকে ‘বৃদ্ধাঙ্গুলি’ দেখিয়েছেন শেখ হাসিনা।

বাংলাদেশে মার্কিন ব্যর্থতা দৃশ্যমান হয়ে উঠেছে। কারণ দেশটি তাত্ত্বিকভাবে বাইডেনের মূল্যবোধকেন্দ্রিক পররাষ্ট্রনীতির জন্য একটি আদর্শ পরীক্ষার ক্ষেত্র ছিল।

যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নে বাংলাদেশের ৩২ বিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানির বাজারের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার একটা সুযোগ আমেরিকার হাতে ছিল। তা সত্ত্বেও বাইডেন প্রশাসনের উদ্যোগ খুব পরীক্ষামূলক পর্যায়ের ছিল বা শেখ হাসিনার সরকারকে সংস্কারের জন্য চাপ দেওয়ায় নিজেদের ক্ষমতার ওপর অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী ছিল।

ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বাংলাদেশের নির্বাচন সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন। এ ছাড়া পররাষ্ট্র দপ্তর বাংলাদেশের নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার অভিযোগে কিছু ব্যক্তির ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার ঘোষণা দেয়। রাশিয়া, চীন এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভারতের মতো দেশের সঙ্গে শক্ত ঐক্য করে শেখ হাসিনা দক্ষভাবে মার্কিন চাপ মোকাবেলা করেছেন।

বাংলাদেশে উদার নীতি এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে ভারতকে যুক্ত করতে ব্যর্থ হওয়া বা যুক্ত করতে না চাওয়া ছিল তাদের ভুল পদক্ষেপ। এর বদলে বাইডেন প্রশাসন ভারতীয় নীতিনির্ধারকদের একটি বড় অংশকে বিচ্ছিন্ন করেছে, যাঁরা বাংলাদেশের ওপর মার্কিন চাপকে বিপজ্জনক হিসেবে দেখেন। এই নীতিনির্ধারকরা আশা করেন, বাংলাদেশে চীনা প্রভাব রোধে যুক্তরাষ্ট্র নয়াদিল্লির সঙ্গে আরো ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে।

ভারতীয় দৃষ্টিকোণ থেকে, শেখ হাসিনার দুর্বলতা যা-ই হোক না কেন, তাঁর বিকল্প হিসেবে বিএনপির নেতৃত্বে সরকার গঠিত হলে তা আরো বেশি ঝুঁকি তৈরি করবে। বিএনপি দীর্ঘদিন ধরে ইসলামপন্থী দল জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে জোটবদ্ধ, যে দলটি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে নৃশংসতার জন্য দায়ী ছিল। তারা বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ওপর নির্যাতনেও জড়িত এবং বিচ্ছিন্নতাবাদী ও সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে আশ্রয় দেয়, যাদের লক্ষ্য ভারত।

ওয়াশিংটনের প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা প্রায়ই তাদের সক্ষমতাকে ছাড়িয়ে গেছে। এর মাধ্যমে এটাই প্রমাণ হয় যে একটি জটিল সমাজব্যবস্থায় গণতন্ত্রকে এগিয়ে নেওয়ার চেয়ে মুখে তা নিয়ে কথা বলাটা বেশি সহজ।

Leave A Reply

Your email address will not be published.