The news is by your side.

যাঁর সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট হওয়ার, তাঁর সঙ্গে এমনিতেই নষ্ট হবে:  ভাবনা

যে সম্পর্ক থাকার না, সেটা নষ্ট হওয়াই ভালো

0 95

‘ওভারট্রাম্প’–এ অভিনয় করবেন না, এ কথা বলতেই পরিচালকের অফিসে গিয়েছিলেন ভাবনা। কিন্তু পরিচালক বাশার জর্জিসের এককথা, ‘রমা’ চরিত্রে তাঁকেই লাগবে। চরকির সেই সিরিজ দিয়ে এখন প্রশংসায় ভাসছেন অভিনেত্রী। সিরিজ, সিনেমা ও অন্যান্য প্রসঙ্গে ভাবনার সঙ্গে কথা বলল ‘বিনোদন’।

‘ওভারট্রাম্প’ কেন করতে চাননি?

তখন আমার সিনেমার শুটিং, ডাবিং নিয়ে ব্যস্ততা ছিল। গল্পটি নিয়ে আমার অনেক সময় দেওয়ার দরকার ছিল। সব মিলে আউটপুট কতটা দিতে পারব, এই নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলাম। কারণ, সিরিজে অনেক চরিত্র, অনেক ভালো অভিনেতা ছিলেন। সেখানে ভালো করতে না পারলেই ফেল করতাম। পরে পরিচালক বললেন, ‘আমাকে লাগবেই। তখন চরিত্রে সময় দিয়েই কাজটি করেছি। সব শেষে আমি যে চরিত্রটি নিয়ে বের হয়ে আসতে পেরেছি, আমাকে নিয়ে কথা হচ্ছে, এটাই বড় প্রাপ্তি।’

রমা চরিত্র নিয়ে কোনো চাপ ছিল?

চরিত্রটিকে মানুষ অশ্লীল বলতে পারত—এমন ঝুঁকি ছিল। সেটাকে আমি রোমান্টিক ও কমেডিতে নিয়ে গেছি। আবার চরিত্রটি আহ্লাদি। বাস্তবে আমি কিন্তু আহ্লাদি মেয়ে নই, ভীষণ প্রতিবাদী। এ জন্য চরিত্রটির সঙ্গে গভীরভাবে মিশতে হয়েছে, চরিত্রের সঙ্গে বোঝাপড়া করতে হয়েছে। বড় এই চ্যালেঞ্জ ভাবনা নিতে পেরেছে। এখন বাইরে বের হলেই দর্শকের কাছ থেকে শুনতে হচ্ছে, ‘টাকার মুখ এত কালা’ সংলাপ খুবই পছন্দ করেছেন, কেউ কেউ বলছেন, ‘আপু একটু আব্বো বলে শোনান।’

আপনি খুব স্পষ্ট কথা বলেন। এসব নিয়ে সহকর্মী বা অন্যদের সঙ্গে সম্পর্কে নষ্ট হয়েছে?

বুঝতে শেখার পর থেকে সত্য, স্পষ্টবাদী থাকার চেষ্টা করি। এখন স্পষ্টবাদী কথা শুধু নয়, যাঁর সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট হওয়ার, তাঁর সঙ্গে এমনিতেই নষ্ট হবে। আর যে সম্পর্ক থাকার নয়, সেটা নষ্ট হওয়াই ভালো। কিন্তু আমি আমার মতো করেই সময়ে, সত্যে বাঁচার চেষ্টা করি।

কদিন আগে মাছের বাজারে গিয়ে ছবি আঁকলেন। মাঝেমধ্যে এমন ছবি পোস্ট করেন, সেগুলো নিয়ে কেউ কেউ সমালোচনা করেন, এগুলো কীভাবে নেন?

মানুষের কথা কানে নিই না। আমি মানুষের কথা শুনে তো তাঁর মতো জীবন যাপন করব না। আমার কোথায় ছবি আঁকতে যাওয়া উচিত, কোথায় কী পরে যাওয়া উচিত, সেসব নিয়ে আমি আমার মতো করে চলতে চাই। অন্যদের কথা শুনলে তাঁর মতো করে চলতে হবে। এটা কেই–বা চাইবেন? আমি পজিটিভ মানুষ। আমি মনে করি, যেদিন কেউ ইতিবাচকভাবে জীবনকে দেখার সুযোগ পাবেন, সেদিন থেকে জীবনটা মিরাকল হয়ে হবে।

বর্তমান ব্যস্ততা কী নিয়ে?

‘যাপিত জীবন’ সিনেমা শেষ করলাম। আগামী মাস থেকে এক্সকিউজ মি সিনেমার শুটিং হবে। সিনেমাটির রিহার্সাল নিয়েই ব্যস্ত আছি। এ ছাড়া সামনে ঈদ। প্রতিদিন অভিনয়ের প্রস্তাব পাচ্ছি। কিন্তু কোনো গল্প পছন্দ হচ্ছে না। ভালো কোনো চিত্রনাট্য পছন্দ হলেই নাটক করব। কিন্তু এখন নাটক নির্মাণ কেমন যেন হয়ে গেছে। মনে হয় চ্যানেলের কর্তারা ভালো নাটক চান না। যে কারণে ভালো নির্মাতারা বেশির ভাগই বসে আছেন। আর টাকা এলেই মাসে ৩০ দিন যেকোনো গল্পে শুটিং করতে হবে, এর মধ্যে আমি নেই।

অনেকেই তো মাসে ত্রিশ দিন শুটিং করছেন!

আমি তো এখনো ঈদের আগে ১০টি নাটকের শুটিং করতে পারি। ভালো অর্থও পাব। কিন্তু অভিনেতা হিসেবে আমার প্রস্তুতি কী? কাজগুলো কি আমাকে মানসিক শান্তি দেবে? আমি শিল্পের চর্চা করতে চাই। এমন অভিনেতা হতে চাই, আমাকে কেউ প্রতিস্থাপন করতে পারবেন না। শুনতে চাই, ভাবনাকেই দরকার। শিল্পচর্চা আর ব্যবসা এক জিনিস নয়। লোভকে আমি সংবরণ করতে শিখেছি। ভালো কাজের পেছনে ছুটতে চাই, যা আমাকে মানসিক শান্তি দেবে।

এই পরিবর্তনটা কীভাবে সম্ভব হয়েছে?

১০ বছর আগেও আমি যে পথে চলেছি। এখনো সেই পথেই চলছি। আমি অভিনয়শিল্পী হিসেবে কোথায় যেতে চাই, সেটা জানি। দীর্ঘ সময়ে সেই চলাটা আরও দৃঢ় হয়েছে। এই সময়ে আরও বেশি পড়াশোনা করেছি, অভিনয় নিয়ে অনেক জেনেছি। মনে করি একজীবনে টাকা ইনকাম সবাই করতে পারে। তাহলে আর অভিনয় করতে যাব কেন। টাকার জন্য অভিনয় করতে চাই না। তাই বলে আমার মেধা ফ্রি না। ৩০ দিন কাজ করতে হবে। অনেক টাকা আয় করতে হবে। এই লোভ কখনোই আমার মাথায় আসেনি। তাহলে আর জামিল আহমেদ স্যারের কাছে অভিনয় শেখার জন্য কোর্স করার দরকার হতো না।

আপনি আয় করে কী করেন?

বাবা–মায়ের টাকায় এসএসসি পাস করেছি। তার পর থেকে আমি নিজের আয়ে পড়াশোনা করেছি। ভাবনা বাপ–মায়ের টাকায় এখন পড়েন না। পড়া শেষ করতে টাকা পাউন্ড করে ভাবনাকে ফি দিতে হয়েছে। নিজের খরচ, গাড়ি কিনেছি, ড্রাইভারের বেতন সবই আমি নিজে আয় করে ব্যয় করি। তিন বছর বয়স থেকে নাচে আয় করেছি, তার পর থেকে এখনো আয় করছি।

 

 

 

 

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.