ভোলার টবগী-১ অনুসন্ধান কূপে থেকে প্রতিদিন ২০ মিলিয়ন ঘনফুট হারে গ্যাস তোলা যাবে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এমন তথ্য জানান তিনি।
এ সময় পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান নাজমুল আহসান এবং বাপেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহম্মদ আলী উপস্থিত ছিলেন।
নসরুল হামিদ জানান, অনুসন্ধান কূপে গ্যাসের সম্ভাব্য মজুত ধরা হয়েছে প্রায় ২৩৯ বিলিয়ন ঘনফুট (বিসিএফ)। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের মধ্যে বিশ্ববাজারে যে সংকট তৈরি হয়েছে তারমধ্যেই এ সুখবর দিলেন তিনি ।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা এখন থেকে দৈনিক ২০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করতে পারব। গ্রাহক পর্যায়ে এর মূল্য ১১ টাকা করে যদি ধরি, তবে ৮ হাজার কোটি টাকার মতো পাওয়া যাবে এখান থেকে। আর যদি এলএনজির মূল্য ধরি, তাহলে অনেক মূল্য হবে।
তিনি জানান, আগামী জুন ২০২৩ সালের মধ্যে পর্যায়ক্রমে আরও দুটি কূপ (ইলিশা-১ ও ভোলা নর্থ-২) খনন কার্যক্রম সম্পন্ন করা হবে। প্রকল্প বাস্তবায়ন শেষে ৩টি কূপ হতে সর্বমোট দৈনিক ৪৬ থেকে ৫৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হতে পারে।
ভোলার গ্যাস এখনই জাতীয় গ্রিডে যোগ হবে না জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রসেস প্ল্যান্ট বসাতে হবে। এজন্য অন্তত দেড় বছর সময় প্রয়োজন হবে। তবে অফগ্রিডের গ্যাস আনার জন্য কী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এখন স্বল্প পরিসরে গ্যাস আনা হবে। পরে স্থায়ীভাবে ভোলা-বরিশাল হয়ে পাইপলাইন করা হবে।
তিনি বলেন, দেশীয় জ্বালানির উৎস অনুসন্ধানে কাজ করছে সরকার। এ লক্ষ্যে ২০২২-২৫ সময়কালের মধ্যে পেট্রোবাংলা মোট ৪৬টি অনুসন্ধান, উন্নয়ন ও ওয়ার্কওভার কূপ খননের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এরই অংশ হিসেবে বাপেক্সের তত্ত্বাবধানে গৃহীত প্রকল্পের আওতায় গ্যাজপ্রমের মাধ্যমে গত ১৯ আগস্ট ভোলা জেলার শাহবাজপুর গ্যাসক্ষেত্রের টবগী-১ অনুসন্ধান কূপটি প্রায় ৩৫০০ মিটার গভীরতা পর্যন্ত খনন লক্ষ্যে কাজ শুরু হয়। গত ২৯ সেপ্টেম্বর ৩৫২৪ মিটার গভীরতায় খননকাজ সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
কূপে সম্ভাব্য গ্যাস মজুত ও উৎপাদন হার নিরূপণে গৃহীত কারিগরি পরীক্ষামূলক টেস্টিং (ডিএসটি) কার্যক্রম গত ১ নভেম্বর সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। সর্বশেষ পরিচালিত ডিএসটি কার্যক্রমে ৩২/৬৪ ইঞ্চি চোক সাইজ ব্যবহার করে ওই কূপ হতে গড়ে দৈনিক ২০ মিলিয়ন ঘনফুট হারে গ্যাস ফ্লো টেস্ট করা হয়েছে, যা আশাব্যঞ্জক।
শাহবাজপুর গ্যাস ফিল্ড হতে টবগী-১ কূপ এলাকাটি আনুমানিক ৩.১৭ কিমি. দূরে অবস্থিত। ভূতাত্ত্বিক তথ্যাদি এবং ডিএসটি রিপোর্ট অনুযায়ী এ অনুসন্ধান কূপে গ্যাসের সম্ভাব্য মজুত প্রায় ২৩৯ বিলিয়ন ঘনফুট (বিসিএফ)।
আগামী ৭ নভেম্বর নাগাদ কূপটি দ্রুত উৎপাদনক্ষম করার লক্ষ্যে কূপের কমপ্লিশন এবং ক্রিসমাস ট্রি স্থাপন কার্যক্রম সম্পন্ন হবে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।
এছাড়া ইলিশা-১ ও ভোলা নর্থ-২ এই দুই কূপ থেকে ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে ৫৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়া যবে বলে তিনি জানান।