মিয়ানমারে সাধারণ নির্বাচনে আজ সোমবার পর্যন্ত ভোট গণনা চলছে। রোববার সেখানে ভোট গ্রহণ করা হয়েছে। বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এবারের নির্বাচনেও অং সান সু চির সরকারের আবার ক্ষমতায় ফেরার বিষয়টি প্রত্যাশিত। রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হলেও অং সান সু চি মিয়ানমারে জনপ্রিয়তা ধরে রাখতে পেরেছেন। তবে বিদেশে তাঁর সুনামে ধস নেমেছে।
সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) এই নির্বাচনের মাধ্যমে দ্বিতীয়বারের মতো ক্ষমতায় আসছে বলে বিভিন্ন জরিপে উঠে এসেছে। মিয়ানমারে অর্ধশত বছরের বেশি সময় ধরে সেনাবাহিনী ও সেনা-সমর্থিত সরকারের অবসান ঘটিয়ে ২০১৫ সালের সাধারণ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় পায় এনএলডি।
একসময় স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করে খ্যাতি অর্জন করা সু চি রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে কার্যত কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় আন্তর্জাতিক সমালোচনার মুখে পড়েন। কিন্তু মিয়ানমারের জনগণের মধ্যে তিনি এখনো জনপ্রিয়।
এএফপি জানিয়েছে, অং সান সু চি এবারের নির্বাচনেও ব্যাপক সংখ্যাগরিষ্ঠতা ধরে রাখবেন। তিনি জনগণকে করোনার ভয় না করে ব্যাপকভাবে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন। দেশটিতে সূর্য ওঠার আগেই অনেকে ভোট দেওয়ার জন্য দাঁড়িয়ে যান। ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে অনেকে ভোট দিয়েছেন।
মিয়ানমারে ৩ কোটি ৭০ লাখের বেশি নিবন্ধিত ভোটার রয়েছে। দেশটিতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়লেও মানুষ ভোট দিতে বের হয়েছিলেন। মিয়ানমারের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালাই।
এটি করোনার হটস্পট বলে চিহ্নিত। গতকাল সেখানে ভোটকেন্দ্রের বাইরে মানুষের ব্যাপক উপস্থিতি দেখা যায়। করোনার সংক্রমণ প্রতিরোধে তাঁদের মুখে মাস্ক থাকলেও সামাজিক দূরত্বের নিয়ম মানা হয়নি।
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস শুক্রবার মিয়ানমারে শান্তিপূর্ণ, নিয়মতান্ত্রিক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের আহ্বান জানালেও সেখানকার ভোটের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
সেখানকার প্রায় ৩ লাখের বেশি মুসলিম রোহিঙ্গা ভোট দেওয়ার সুযোগ পাননি।
বার্মা ক্যাম্পেইন ইউকে নামের অধিকার গ্রুপ এবারের নির্বাচনকে জাতিবিদ্বেষী নির্বাচন হিসেবে অভিহিত করেছে। তারা বলছে, মিয়ানমারের নির্বাচন উন্মুক্ত ও স্বচ্ছ হয়নি। দেশটির বিভিন্ন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ২০ লাখ মানুষ ভোটবঞ্চিত হয়েছেন।
মিয়ানমারের রাজনীতিতে সেনাবাহিনীর প্রভাব প্রবল। সংবিধান অনুযায়ী, পার্লামেন্টের ২৫ শতাংশ আসন সেনাসদস্যদের জন্য বরাদ্দ। গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়গুলোর দেখভালও সেনাবাহিনী করে।