২০২২ সালে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ৫৩২ শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন। তাদের মধ্যে স্কুল ও কলেজ পর্যায়ে ৪৪৬ জন এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত ৮৬ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যার পথ বেঁছে নিয়েছেন।
স্কুল ও সমমান পর্যায়ের ৩৪০ এবং কলেজ পর্যায়ে ১০৬ জন শিক্ষার্থী রয়েছেন। এসব শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৫৪ জন মাদ্রাসার শিক্ষার্থী।
শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বেসরকারি সংস্থা আঁচল ফাউন্ডেশন।
আঁচল ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, আত্মহত্যাকারী স্কুল ও কলেজ শিক্ষার্থীরা তাদের জীবদ্দশায় নানা বিষয়ের সম্মুখীন হন যা তাদের আত্মহননের পথে ঠেলে দিতে বাধ্য করে।
আত্মহত্যার পেছনে জরিপে উঠে আসা তথ্যে দেখা যায়; মান- অভিমান তাদের সবচেয়ে বেশি আত্মহত্যাপ্রবণ করে তোলে। ২৭.৩৬ শতাংশ স্কুল ও কলেজ শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন অভিমানে। তাদের বড় অংশেরই অভিমান পরিবারের সঙ্গে। অন্য কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে প্রেমঘটিত কারণ যা ২৩.৩২ শতাংশ, পারিবারিক কলহ ৩.১৪ শতাংশ, হতাশাগ্রস্থতা ২.০১ শতাংশ, মানসিক সমস্যা ১.৭৯ শতাংশ, আর্থিক সমস্যা ১.৭৯ শতাংশ, উত্ত্যক্ত, ধর্ষণ ও যৌন হয়রানির শিকার হয়ে আত্মহত্যার পথে ধাবিত হয়েছেন ৩.১৩ শতাংশ শিক্ষার্থী।
সংস্থাটির তথ্যমতে; ২০২২ সালে প্রতি মাসে গড়ে প্রায় ৩৭ জন স্কুল এবং কলেজগামী শিক্ষার্থী আত্মহননের পথ বেঁছে নিয়েছেন যাদের মধ্যে নারী ২৮৫ জন এবং পুরুষ ১৬১ জন।
আঁচল ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, স্কুল ও কলেজে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে গত বছরের জানুয়ারিতে ৩৪ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৩৯ জন, মার্চে ৪১ জন, এপ্রিলে ৫০ জন, মে মাসে ৪৫ জন, জুনে ৩১ জন, জুলাইয়ে ৪০ জন, আগস্টে ২১ জন, সেপ্টেম্বরে ৩২ জন, অক্টোবরে ৩০ জন, নভেম্বরে ৪৯ জন এবং সবশেষ ডিসেম্বরে ৩৪ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেন। দেখা যায়, এপ্রিল মাসে সর্বোচ্চ সংখ্যক স্কুল এবং কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেন যা ছিল ৫০ জন।
সারাদেশের মোট ৮টি বিভাগে আত্মহত্যাকারী স্কুল ও কলেজ শিক্ষার্থীদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি ঢাকা বিভাগে যা ২৩.৭৭ শতাংশ। এরপর রয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগ যা ১৭.২৭ শতাংশ এবং রাজশাহী বিভাগ যা ১৬.৮১ শতাংশ। এ ছাড়া খুলনা বিভাগে ১৪.১৩ শতাংশ, রংপুরে ৮.৭৪ শতাংশ, বরিশালে ৮.৫৩ শতাংশ, ময়মনসিংহে ৬.২৭ শতাংশ এবং সিলেটে ৪.৪৮ শতাংশ স্কুল ও কলেজ পড়ুয়া আত্মহত্যাকারী শিক্ষার্থী রয়েছেন।
আত্মহত্যাকারী স্কুল ও কলেজ শিক্ষার্থীদের মধ্যে নারী রয়েছেন ৬৩.৯০ শতাংশ এবং পুরুষ রয়েছেন ৩৬.১ শতাংশ। শুধু স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের মধ্যে আত্মহত্যাকারী নারী শিক্ষার্থীর পরিমাণ ৬৫.৩০ শতাংশ এবং পুরুষ শিক্ষার্থী ৩৪.৭০ শতাংশ। অন্যদিকে, শুধু কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে আত্মহননকারী নারী ৫৯.৪৪ শতাংশ এবং পুরুষ ৪০.৫৬ শতাংশ রয়েছে।