The news is by your side.

বিরোধী দলগুলোকে নির্বাচন থেকে বিরত রাখার কৌশল বিএনপির

0 79

মামলা-হামলা ও গ্রেপ্তারে বিপর্যস্ত বিএনপি। প্রায় ২০ দিন দলীয় কার্যালয় বন্ধ থাকলেও আত্মগোপনে থেকে নেতাকর্মীরা হরতাল-অবরোধ চালিয়ে যাচ্ছেন। এখন সরকারবিরোধী চলমান আন্দোলন সফল করতে মরিয়া দলটির নেতারা।

গণতন্ত্র ও ভোটাধিকারের পাশাপাশি নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার এ লড়াই আরও তীব্র করতে দায়িত্বশীল নেতাদের সঙ্গে প্রতিদিনই কথা বলছেন হাইকমান্ড। দেওয়া হচ্ছে নানা দিকনির্দেশনা। যার যার অবস্থান থেকে আন্দোলন এগিয়ে নিতে কর্মকৌশল ঠিক করা হচ্ছে। কূটনৈতিক তৎপরতার পাশাপাশি যুগপৎ আন্দোলনের বাইরে থাকা দলগুলোর সঙ্গেও বাড়ানো হচ্ছে ঘনিষ্ঠতা।

বিএনপি নেতারা মনে করছেন, নির্বাচনের তপশিলের পর রাজপথে শক্ত আন্দোলন গড়ে তোলা ছাড়া বিএনপির সামনে পথ খোলা নেই। এ অবস্থায় সরকার পতন আন্দোলন আরও কঠোর এবং বিস্তৃত করার প্রস্তুতি নিচ্ছে দলটি। এজন্য তৃণমূলসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের রাজপথে নামতে দেওয়া হয়েছে বার্তা। এর বাইরে সরকারবিরোধী আন্দোলনে থাকা জামায়াতে ইসলামীসহ সমমনা অন্য দলগুলোকে সক্রিয় করতে চাচ্ছেন শীর্ষ নেতারা। তাদের মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে অল্প সময়ের মধ্যে আন্দোলনের শেষ ও চূড়ান্ত ধাপ শুরু করতে চাচ্ছে বিএনপি। বিরোধী দলগুলোকে ভোট থেকে বিরত রাখতেও নানা কৌশল নেওয়া হচ্ছে।

জানতে চাইলে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, এত মামলা-হামলা, গ্রেপ্তার-নির্যাতনের পরও নেতার্মীরা মাঠে থেকে কর্মসূচি সফল করছেন। আগামী দিনের আন্দোলন আরও তীব্র হবে। একতরফা নির্বাচনের তপশিল জনগণ মানে না। অধিকাংশ বিরোধী রাজনৈতিক দল তপশিল ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছে। বিএনপিসহ সমমনা দল ও জোট চূড়ান্ত কর্মসূচিতে মাঠে রয়েছে। অন্যান্য রাজনৈতিক দলও কঠোর কর্মসূচি পালন করছে। এ সরকারের পতন অনিবার্য।

নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দাবিতে কয়েক বছর ধরে আন্দোলন করলেও গত বছর জুলাইয়ে এটি ভিন্ন মাত্রা পায়। আর গত ডিসেম্বর থেকে রাজপথে জোরালো হয় সমমনা দল ও জোটকে নিয়ে যুগপৎ আন্দোলন। তবে গত ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশ রক্তাক্ত ও সংঘর্ষে রূপ নেয়। এর পরই হরতাল-অবরোধের মতো কঠোর আন্দোলনে নামে বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো। আন্দোলনের এক পর্যায়ে গণতান্ত্রিক বিশ্বের চাপ এলে এক দফা আন্দোলন নতুন মাত্রা পায়। বিএনপির নেতারা ভেবেছিলেন, দেশি-বিদেশি চাপে সরকার নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি মানতে বাধ্য হবে। কিন্তু সরকার সংবিধানের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই জানিয়ে শক্ত অবস্থান নেয়। আর গত বুধবার দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের তপশিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। এ অবস্থায় রাজপথে আরও শক্ত আন্দোলন গড়ে তোলা ছাড়া বিএনপির সামনে পথ খোলা নেই বলে মনে করছেন দলটির সর্বস্তরের নেতাকর্মী।

বিএনপির দপ্তরের তথ্য, ২৮ অক্টোবরের পর থেকে ২৮৯ মামলায় ১২ হাজার ৯০০ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও ক্ষমতাসীনদের হামলায় ৪ হাজার ১২১ আহত, এক সাংবাদিকসহ নিহত হয়েছেন ১৪ জন। এ ছাড়া গত ২৮ জুলাই থেকে সারাদেশে ৬৮২ মামলায় গ্রেপ্তার ১৫ হাজার ৮৮১ জন, আহত হয়েছেন ৬ হাজার ২১২ নেতাকর্মী। ২০০৯ সাল থেকে গত জুন পর্যন্ত দলটির নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ১ লাখ ৪৯ হাজার ৯৩৪ মামলায় আসামি করা হয়েছে ৪৯ লাখ ৪০ হাজার ৪৯২ জনকে।

দলের কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতা জানান, বিপুল সংখ্যক মামলার ভারে তারা ভারাক্রান্ত। সবাই নিঃস্ব হয়ে গেছেন। এখান থেকে তারা পরিত্রাণ চান। এ জন্য আন্দোলনের মাঠেই ফায়সালা করতে হবে। যারা এখনও নিষ্ক্রিয়, তাদের সক্রিয় করতে নেওয়া হয়েছে উদ্যোগ। দলের এই দুঃসময়ে যারা পাশে না থেকে বিশ্বাসঘাতকতা করবে, তাদের বিষয়েও রয়েছে কঠোর বার্তা। বেইমানদের আর কখনও ক্ষমা করা হবে না বলে দেওয়া হয়েছে হুঁশিয়ারি।

 

 

 

 

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.