মৃত্যুচিন্তায় ডুবে রয়েছেন তসলিমা নাসরিন। যেন ওষুধের ঘোর, এক বার জাগছেন, আবার ঘুমে ঢলে পড়ছেন। তার ফাঁকে ফাঁকে একটি করে রহস্যাবৃত পোস্ট করছেন ফেসবুকে।
মঙ্গলবার সকালে লিখলেন, “সেই মৃত্যু আমার উচ্ছল উজ্জ্বল জীবনকে গ্রাস করে নিয়ে একটি স্তব্ধ স্থবির জীবন ফেলে রেখে গেছে। এই জীবনটি আমার নয়, অথচ আমার।”
স্পষ্টতই, এখনকার জীবনে কাহিল হয়ে পড়েছেন তসলিমা। নেপথ্যে কি হঠাৎ শারীরিক বদল? অল্পেই ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন তিনি? মেনে নিতে পারছেন না নিজের স্থবিরতা? তাই কি মৃত্যুকে আপন করতে চাওয়ার প্রবণতা দেখা দিচ্ছে বাংলাদেশের লেখকের মধ্যে? অতীতচারী হয়ে লিখলেন, “সেই মৃত্যুতে কেঁদেছিল আমার বোন। বোনের অনেকে আছে, পরিবার পরিজন। বোনের চোখের জল ছাড়া আমার সম্পদ কিছু নেই।”
কোন মৃত্যুর কথা বলছেন তসলিমা? সকলের অনুমান, সব কিছুর সূত্রপাত মরণোত্তর দেহদানের স্মৃতি ঘিরে। গত রবিবার রাত ১০টা ২০ মিনিট নাগাদও পোস্ট করেন তসলিমা। সেখানে দেখা যাচ্ছে, তিনি কোনও হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে রয়েছেন। তসলিমা যে সেখানে চিকিৎসা করাতে এসেছেন, তা ওই ছবি থেকেই স্পষ্ট হয়। পাশে পাঁচ জন দাঁড়িয়ে। চিকিৎসাকর্মীর পোশাকে নন কেউই। তাঁদের দেখে শুভানুধ্যায়ী বলেই মনে হচ্ছে।
‘অদ্ভুত’ পোস্টের সারির পর এমন একটা ছবি আলোড়ন ফেলেছিল— কী হয়েছে তসলিমার? আগের পোস্টগুলির সঙ্গে এই ছবির কি কোনও যোগসূত্র রয়েছে? তসলিমা যদিও তাঁর ছবির সঙ্গে কোনও লেখা পোস্ট করেননি সে বার। তার ফলে বিভ্রান্তি আরও বেড়েছিল।
তবে পোস্ট করার কিছু ক্ষণ আগে তসলিমা কিছু নথি আপলোড করেন। সেখানে দেখা যায়, ২০১৮ সালে দিল্লির এমসে তিনি মরণোত্তর দেহদান করেছেন। একাধিক নথির একটিতে লেখা ছিল, তাঁর মৃত্যুর অব্যবহিত পরেই যেন হাসপাতালে খবর দেওয়া হয়। কারণ তাঁর দেহ দান করা হয়েছে।
এ ছাড়া তিনি বেশ কিছু পুরনো পোস্টও শেয়ার করছেন কয়েক দিন ধরে। যেমন শেয়ার করা একটি পুরনো পোস্ট, যেটি তিনি লিখেছিলেন ২০১৬ সালের ১৫ জানুয়ারি। ওই পোস্টের শেষে লেখা ছিল, ‘‘বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের কত কিছু, জগৎ ও জীবনের কত কিছু অজানা রেখে আমাদের চলে যেতে হয়!’’