ভর্তুকি তুলে দিতেই হবে, আইএমএফের শর্তে হোক বা না হোক: সিপিডি
জ্বালানি তেলের কর কমিয়ে মূল্যবৃদ্ধি এড়ানো যেত
জ্বালানি খাতের সংস্থাগুলোর দুর্নীতি-অপচয় বন্ধ করতে না পেরে জ্বালানি তেলের উচ্চ মূল্যবৃদ্ধি জনগণের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে মন্তব্য করেছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। সংস্থাটি বলছে, জ্বালানি তেলের কর প্রত্যাহার বা কমিয়ে মূল্যবৃদ্ধি এড়ানো যেত। কিন্তু এটি এনবিআরের রাজস্বের বড় উৎস, তারা ছাড় দেবে না।
আজ রাজধানীর ধানমন্ডির নিজস্ব কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সিপিডি বলেছে, ভর্তুকি সম্পদের অপচয় করে। এ ছাড়া এটি ধনী-গরিব সবাই পায়। তাই ভর্তুকি তুলে দিতেই হবে। এটি আইএমএফের শর্তে হোক বা না হোক। তবে এটি ধীরে ধীরে করা যেত।
অধ্যাপক ইজাজ হোসেন বলেন, ভর্তুকি প্রত্যাহার সমর্থন করি কিন্তু যেভাবে করা হয়েছে, এটাকে সমর্থন করি না। দেশের অর্থনীতির সবচেয়ে খারাপ সময়ে সরকার জ্বালানি তেলের কর তুলে দিতেই পারে। বরং দাম বাড়িয়ে সাধারণ মানুষের ওপর পরোক্ষ কর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে।
সিপিডির নিবন্ধে বলা হয়, মে পর্যন্ত শেষ আট অর্থবছরে ৪৬ হাজার ৮৫৮ কোটি টাকা মুনাফা করেছে বিপিসি। সরকার জ্বালানি তেলে প্রায় ৩৪ শতাংশ বিভিন্ন ধরনের কর নেয়। বিপিসির কাছ থেকে প্রতিবছর লভ্যাংশ নিচ্ছে। উদ্বৃত্ত অর্থ হিসাবে বিপিসির তহবিল থেকে ১০ হাজার কোটি টাকা নিয়েছে সরকার।
নিবন্ধ উপস্থাপন করেন সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন। সাবেক কৃষিসচিব আনোয়ার ফারুক বলেন, একবারে এত বেশি দাম বাড়ানোর মতো পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ এখনো আসেনি। ধান চাষে প্রতি বিঘা জমিতে এক হাজার টাকা খরচ বাড়বে কৃষকের।
বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় কিছু সুপারিশ করেছে সিপিডি। এতে বলা হয়, মূল্যবৃদ্ধি পুনর্বিবেচনা করে এটি কমিয়ে আনা। খোলাবাজারে কম দামে সরকারের পণ্য বিক্রি বাড়ানো। রেশন কার্ডের সংখ্যা আগের চেয়ে বাড়ানো। শুধু দরিদ্র নয়, নিম্ন আয়ের মানুষদেরও দিতে হবে। আর এটা যাঁর প্রয়োজন, তাঁকে দেওয়ার বিষয়টিও নিশ্চিত করা। মধ্যমেয়াদি ব্যবস্থা হিসেবে প্রাথমিক জ্বালানি নিশ্চিত করতে দেশে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে জোর দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে সিপিডি।