জীবনের একটা গল্প থাকে,কাহিনি থাকে। হতে পারে সেটা সব সময় খুব একটা বর্ণময় হয় না। আবার কখনও এতটাই বর্ণাঢ্য হয় যে, তা সিনেমাকেও হার মানিয়ে দেয়। কিন্তু গল্প একটা থেকেই যায়। আবার কারও জীবনের গল্প এমন হয় যে, সেখানে সে নিজেই অনেকগুলো চরিত্র একসঙ্গে বেছে নেয়। অনেকটা সিনেমার মতো। এদের অতীত আর বর্তমানের মধ্যে সীমারেখা খুব ধূসর হয়। আপনাকে যদি প্রশ্ন করা হয় “আপনি কি পর্ন দেখেন?” আমরা জানি শতকরা নিরানব্বই শতাংশ লোক প্রশ্নটা শুনে আঁতকে উঠবে। আঁতকে উঠবে, লজ্জা পাবে, মিথ্যে বলবে! আরও একধাপ এগিয়ে যদি বলি, “একটি মেয়ে আপনার বাড়িতে ভাড়া থাকতে চায়, সে পর্ন ছবির নায়িকা! থাকতে দেবেন?” জানি এর উত্তর কী হতে পারে। প্রশ্নগুলো সহজ, উত্তর জানা বলেই আমরা এড়িয়ে যাই।
সানি লিওনির ছোটবেলা
সানির ছোটবেলাটা খুব অদ্ভুত। অদ্ভুত মানে এই নয় যে তাঁকে ছোটবেলায় খুব কষ্ট করতে হয়েছে, মানে ওই সিনেমায় যেমন দেখানো হয়। একদমই না। অদ্ভুত বললাম, কারণ, ছোটবেলা থেকে সানি জানতেন তিনি কী করতে চান! কোনওদিন কিছু লুকোতেন না। অসম্ভব সাহসী আর ডানপিটে ছিলেন তিনি।
১৯৮১ সালের ১৩ মে, কানাডার অন্টারিও শহরে জন্ম হয় করণজিৎ কৌর ভোহরার। যার মা হিমাচলের মেয়ে আর বাবা শিখ, তাঁর মধ্যে যে এনার্জির অভাব হবে না সেটা বলাই বাহুল্য। ছোটবেলায় নাকি খুব দুরন্ত ছিলেন সানি। পাড়ার ছেলেদের সঙ্গে রাস্তায়-রাস্তায় হকি খেলে বেড়াতেন। মারামারি করতেন। আজ যার দ্রবীভূত লাস্যে হাবুডুবু খায় পুরুষেরা, মেয়েরা যাকে মুখে না বললেও মনে-মনে হিংসে করে, সেই মেয়ে কানাডার রাস্তায় ছেলে পিটিয়ে বেড়াতেন! তাঁর বাবা-মা ছিলেন মুক্তমনা মানুষ। তাঁরা চাইতেন, মেয়ের মধ্যে সৌজন্যবোধ আসুক, শৃঙ্খলাবোধ আসুক এবং পাশ্চাত্য ধারাতেই করণজিৎ বড় হয়ে উঠুক। খানিকটা বাকি পরিবারের বিরুদ্ধে গিয়েই তাঁকে ক্যাথলিক মিশনারি স্কুলে পাঠালেন সানির বাবা-মা। তবে এক জায়গায় স্থিতু হয়ে থাকা সানির কপালে ছিল না। ১৩ বছর বয়সে সানির পরিবার পাড়ি দিলেন মিশিগান। সেখানকার পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে ওঠার আগেই সানির ঠিকানা গেল পাল্টে। তিনি হলেন ক্যালিফোর্নিয়ার বাসিন্দা। দীর্ঘদিন ধরে সানির দাদু ঠাকুরমা চাইছিলেন গোটা পরিবার এক ছাদের তলায় আসুক। এতদিনে সেই স্বপ্ন সফল হল। তবে বদল শুধু জায়গারই হয়নি। বদল হয়েছে সানির শরীর আর মনেও। এখন তিনি ১৪ বছরের কিশোরী। সঙ্গে আছে কানাডা আর আমেরিকার যৌথ নাগরিকত্ব। আর? তাঁর অনেক আগেই বাবা-মায়ের চোখ এড়িয়ে তিনি স্বাদ পেয়েছেন প্রথম চুম্বনের!
ভারতে আসার আগে কেমন ছিল সানির জীবন
কোনওদিন যে এই দেশে আসবেন, সেটা বোধ হয় স্বপ্নেও ভাবেননি করণজিৎ! আসলে তখন এত দ্রুত ঘটছিল সব কিছু যে সানি নিজেও বোধ হয় খানিকটা ঘাবড়ে গিয়েছিলেন! অসম্ভব ছটফটে আর প্রাণশক্তিতে ভরপুর একটি মেয়ে। ওই বয়সে যেমন হয় আর কী! যেটা চোখের সামনে আসে বা হাতের মুঠোয় ধরা দেয়, সেটাই আঁকড়ে ধরতে ইচ্ছে করে। সানিও যে তার ব্যতিক্রম তা নন। কিন্তু শরীর নিয়ে কোনও ছুঁতমার্গ তাঁর কোনওকালেই ছিল না। আমার মন, আমার শরীর, তাকে নিয়ে আমি কী করব, সেটা সম্পূর্ণ আমার ব্যাপার। এই ধারণাতেই তিনি বরাবর বিশ্বাস করে এসেছেন। তার মানে কিন্তু এই নয় যে, ছোটবেলা থেকেই তিনি পর্ন ছবিতে অভিনয় করার বাসনা মনের মধ্যে পোষণ করে এসেছেন! সেটা কি সম্ভব? আপনারাই বলুন। তবে সানি একটু অন্যরকমের মেয়ে, এ নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। ভার্জিনিটি নিয়ে এখনও যেখানে আমাদের দেশে এত ট্যাবু রয়ে গেছে, এখনও যেখানে কুমারী মেয়ে না হলে তাঁর বিয়ে হয় না, সানি সেই ‘ভার্জিন’ ট্যাবু ত্যাগ করলেন স্বইচ্ছায়। মাত্র ১৬ বছর বয়সে তাঁর বাস্কেটবল খেলার কোনও এক সাথীর সঙ্গে প্রথম শারীরিক মিলনের স্বাদ পেলেন তিনি। চমক এখানেই শেষ নয়। যখন তাঁর আঠেরো হব-হব করছে সানির শরীর অন্য ইঙ্গিত দিল। তিনি বুঝতে পারলেন, তাঁর আকর্ষণ শুধু পুরুষদের নিয়ে নয়, সুন্দরী মেয়ে দেখলেও তিনি তাঁর প্রতি আকর্ষিত হন। অর্থাৎ তিনি বাইসেক্সুয়াল। আর এটা তিনি নিজেই স্বীকার করেছেন। বহু জায়গায়, বহুবার। আজ যেখানে নিজেদের সম্পর্ক লুকিয়ে রাখেন বলিউডের বহু তারকা, স্বীকার করেন না তাঁদের নাক বা ঠোঁটে সার্জারির কথা। সেখানে সানি সব বলে দেন, নির্দ্বিধায়!
পর্ন তারকা কেন হলেন সানি?
পর্ন তারকার জীবন ঠিক কেন বেছে নিলেন সানি, সেই নিয়ে কিছু ধোঁয়াশা আছে। আসলে সানি যেখানে জন্মেছেন আর যেখানে বড় হয়েছেন সেখানে পর্ন ইন্ডাস্ট্রি একটি বৃহৎ ইন্ডাস্ট্রি। সেখানে কাজ করাটা কোনও অসম্মানের নয়। বরং হলিউড, বলিউড বা নিদেনপক্ষে আমাদের বাংলা ছবিতে কাজ করে নিজের জায়গাটুকু তৈরি করতে গেলে যে লড়াই করতে হয়, ওখানকার পর্ন ইন্ডাস্ট্রিতেও তাই করতে হয়। বিনামূল্যে ইন্টারনেটের দৌলতে যখন খুশি আপনি দেখতে পারছেন বলে একবারও এটা ভাববেন না যে কাজটা খুব সোজা। বারবার ‘কাজ’ বলছি বলে হয়তো আপনার ভুরু কুঁচকে যাচ্ছে, তবে এটা কাজই। সানির কাছেও আর তাঁর মতো অন্যান্য পর্ন শিল্পীদের কাছেও।
তবে পর্ন জগতে পা রাখার আগে একটি জার্মান বেকারি, জিফি লিউবের মতো নামজাদা পেট্রোলিয়াম সংস্থা আর একটি ট্যাক্স সংক্রান্ত সংস্থায় কাজ করেছেন তিনি। আর তার সঙ্গে-সঙ্গে চলছিল সানির পড়াশোনা। হ্যাঁ, সেবিকা হতে চাইতেন করণজিৎ কৌর! নিচ্ছিলেন নার্সের প্রশিক্ষণ। হঠাৎ সুযোগ এল ‘পেন্টহাউজ’-এর মতো বিখ্যাত পত্রিকার কভারগার্ল হওয়ার। বিখ্যাত পত্রিকা নাকি কুখ্যাত? কারণ এই পত্রিকায় কাজ করে রাতারাতি স্টার হয়ে গেলেন সানি। পর্দার আড়াল চলে গেলেন করণজিৎ কৌর। জন্ম হল এক নতুন তারকার। তাঁর নাম সানি, সানি লিওনি। তবে যে সময়টা তিনি পর্ন ছবি করেছেন, তার সঙ্গে-সঙ্গে কিন্তু মেনস্ত্রিম ইন্ডাস্ট্রিতেও বেশ কিছু কাজ করেছেন। কিছু ছবিতে ক্যামিও রোল করেছেন, রিয়ালিটি শোয়েও অংশগ্রহণ করেছেন।
বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে সানি জানিয়েছেন, তাঁর ডাকনাম সানি আর লিওনি পদবি দিয়েছিলেন বব গুচিওনে, পেন্টহাউজ পত্রিকার প্রাক্তন কর্ণধার। ২০০৩ সালে সানি নির্বাচিত হলেন ‘পেন্টহাউজ পেট অফ দ্য ইয়ার’। আর পর আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে। একের পর এক পত্রিকা থেকে এল কভারশুটের অফার। ভিভিড এন্টারটেনমেন্টের সঙ্গে চুক্তি সই করলেন তিনি। ২০০৭ সালে ভিভিডের সাথেই পুনর্বার চুক্তি হল তাঁর। একই বছরে নিজের স্তন আপলিফটমেন্ট করালেন। হ্যাঁ, এবারেও সবাইকে সবটা বলে দিয়েই করলেন। এর পরের বছরটা সানির খুব একটা ভাল যায়নি। ২০০৮ সালে মাতৃহারা হলেন সানি। জীবনে ঘনিয়ে এল দুঃখের মেঘ।
প্রেম, ভালবাসা, বিয়ে
সানির মতো সুন্দরীর জীবনে প্রেম যে বহুবার এসেছে, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। পর্ন জগতে পা রাখার আগে কিশোরীবেলার প্রেমের কথা বলছি না। শুরুর দিকে ভারতীয়-কানাডিয়ান স্ট্যান্ড আপ কমেডিয়ান রাসেল পিটারের সঙ্গে তাঁর প্রেম ছিল যেটা পরে ভেঙে যায়। তবে সিনেমায় অভিনয় করার সময় তাঁর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল ম্যাট এরিকসনের। তিনি ছিলেন ম্যাটের বাগদত্তা। এক সময় এও দাবি করেন যে, ম্যাট ছাড়া অন্য কোনও পুরুষ অভিনেতার সঙ্গে তিনি অভিনয় করবেন না। সানির এই সিদ্ধান্ত তাঁর কেরিয়ারে ছাপ ফেলছিল। ২০০৮-এ সানি আবার অন্য অভিনেতাদের সঙ্গে অভিনয় শুরু করলেন। ম্যাটের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ভেঙে গেল। সানির সর্বশেষ পর্ন ছবিতে দেখা গেল অন্য একজন অভিনেতাকে। ড্যানিয়েল ওয়েবার। করণজিৎ বুঝতে পারলেন তিনি আবার প্রেমে পড়েছেন! সাড়া পাওয়া গেল ড্যানিয়েলের দিক থেকেও। অভিনয় জীবন থেকে এক কদম এগিয়ে দু’জনে শুরু করলেন নিজেদের ব্যবসা। তৈরি হল সানলাস্ট পিকচার। সানি নিজেই পর্ন ছবি লিখে পরিচালনা করতে শুরু করলেন। সেই ছবি পরিবেশনার দায়িত্ব নিল ভিভিড এন্টারটেনমেন্ট। আবার এল সাফল্য। সানির একের পর এক ছবি ভাল ব্যবসা করল। ড্যানিয়েল প্রস্তাব দিলেন বিয়ের। সানি ফিরিয়ে দলেন সেই প্রস্তাব। প্রায় দু’মাস ধরে প্রতিদিন একের পর এক ফুলের তোড়া পাঠাতে লাগলেন ড্যানিয়েল। সানি বুঝতে পারলেন, এই ছেলে সহজে তাঁর পিছু ছাড়বে না! ২০১০ এ ড্যানিয়েলকে নিজের জীবনসঙ্গী হিসেবে বেছে নিলেন সানি। চার হাত এক হল তাঁদের।
ভারতে এলেন সানি
বিয়ের এক দু’বছরের মাথায়, কেন জানি না পর্ন ছবিতে ক্লান্তি এসে গেল সানির। মনে হল নাম, যশ, খ্যাতি,অর্থ সবই তো পেলাম। এবার তো জীবনটা অন্যভাবেও শুরু করা যায়। মিডিয়াকে জানিয়েই পর্ন ইন্ডাস্ট্রি থেকে অবসর নিলেন ‘টপ হানড্রেড পর্নস্টার’ আর ‘বিবিসি ১০০ উওম্যান’এর তালিকায় থাকা সানি লিওনি। সানি জানতেন, তাঁর ভক্তদের মধ্যে বেশিরভাগই এশিয়ান। আর এশিয়াতে নিজের মৌরসিপাট্টা তৈরি করার একটাই রাস্তা, বলিউড! কিন্তু সেখানে জায়গা তৈরি করে নেওয়া অতটা সোজা নয়। সানির পক্ষে তো একেবারেই নয়। তিনি হিন্দি বলতে পারেন না, তাঁর কাছে ভারতের নাগরিকত্ব নেই আর সব কিছু ছাপিয়ে যেটা বেশি স্পষ্ট, সেটা হল, তিনি একজন প্রাক্তন পর্ন তারকা!
শুরু হল পায়ের তলায় মাটি খুঁজে নেওয়ার লড়াই
২০১১-তে আরও একবার ভারতে এলেন সানি। আরও একবার বলছি কারণ, এর আগে পর্ন ছবিতে কাজ করাকালীনই তিনি এমটিভি ইনডিয়ার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে রেড কার্পেট রিপোর্টার হয়েছিলেন। সেই সময় পরিচালক মোহিত সুরি তাঁর ‘কলিযুগ’ ছবির জন্য নায়িকা খুঁজছিলেন। সানিকে এই রোলের জন্য নির্বাচিত করেন তিনি। ভুল করলেন সানি। মস্ত বড় ভুল। বলিউডে ডেবিউ করার জন্য চেয়ে বসলেন এক লক্ষ মার্কিন ডলার! বিনীতভাবে মোহিত জানিয়ে দিলেন, এত টাকা দেওয়া তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়।
বলিউডে কাজ শুরু করলেন
মাঝখানে বেশ কিছু বছর কেটে গেছে। সানি বুঝতে পারলেন, বলিউডে তাঁর কেরিয়ার শুরু করায় কোথায় যেন একটা ভুল হচ্ছে। অফার যে আসছে না, তা নয়। বেশিরভাগ ছবিই খুব নিম্নমানের এবং নিম্ন রুচির। সানি চাইছিলেন না যে, জীবন তিনি স্বেচ্ছায় ছেড়ে এসেছেন সেখানে আবার ফিরে যেতে। ড্যানিয়েল পরামর্শ দিলেন, “গো স্লো!” অর্থাৎ একবারে সবটুকু জয় না করে আস্তে-আস্তে পা ফেলতে। সেটাই করলেন তিনি। ‘বিগ বস ৫’ চলাকালীন বিগ বসের বাড়িতে প্রবেশ করলেন সানি। তখন তিনি অনেক সতর্ক। ধীরে-ধীরে মুছে ফেলতে চাইছেন নিজের পর্ন তারকা ইমেজ। বিগ বসের বাড়ির আর-এক সদস্য পূজা বেদীকে তিনি বললেন যে, তিনি আদতে একজন আমেরিকান মডেল ও অভিনেত্রী। তৈরি হল বিতর্ক। যে চ্যানেলে এই অনুষ্ঠান দেখানো হত, তার বিরুদ্ধে মামলা করা হল সানির মতো পর্ন তারকাকে নিয়ে আসার জন্য। তবে শাপে বর হল সানির। তাঁর টুইটার অনুরাগীর সংখ্যা মাত্র দুদিনে বেড়ে গেল আট হাজার। গুগলে তাঁকে নিয়ে অসংখ্য সার্চ হল। কিন্তু রাজনৈতিক দলের চাপে এবং দর্শকদের এক পক্ষের মুখ ফিরিয়ে থাকায় খেলা থেকে বাদ পড়লেন সানি।
খেলা থেকে কি সত্যিই বাদ পড়লেন? কারণ, এই শো চলার সময়ই ডাক এল মহেশ ভট্টের কাছ থেকে। ‘জিসম ২’ দিয়ে শুরু হল সানির সাফল্যের নতুন অধ্যায়। এর পর ছোট-বড় অনেক ছবি করলেন। তাঁকে ডেকে পাঠালেন একতা কপূর। ‘রাগিণী এমএমএস ২” বক্স অফিসে সব রেকর্ড ভেঙে দিল। সানি বুঝতে পারলেন বলিউডে তাঁর আসন পাকা হয়েছে। কাজ শুরু করলেন কন্নড় আর তেলুগু ছবিতেও। লাস্যময়ী তো তিনি ছিলেনই। একের পর এক হিট আইটেম নাম্বার তাঁর মহিমা আরও উজ্জ্বল করল। ডাক এল মরাঠী আর বাংলা ছবি থেকেও। এখানেও দুটো হিট আইটেম ডান্স করে গেলেন তিনি। করণজিৎ কৌর আগেই হারিয়ে গেছিল। এবার সানি লিওনিকে হারিয়ে দিল আর এক সানি লিওনি। সে পর্ন তারকা নয়। একজন অভিনেত্রী, একজন শিল্পী!