ঈদযাত্রায় মহাসড়কে যারা ফিটনেসবিহীন গাড়ি চালানোর চেষ্টা করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে হুশিয়ারি দিয়েছেন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন। তিনি বলেন, এবারের ঈদযাত্রায় কোনোভাবেই মহাসড়কে ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলাচল করবে না। চলবে না নছিমন করিমন ভটভটিও। যারা চালানোর চেষ্টা করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নিয়ন্ত্রণহীন গতিতে গাড়ি না চালানোর জন্য অনুরোধ জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) দুপুরে গাবতলীর কোরবানির পশুর হাট ও বাস টার্মিনাল পরিদর্শন শেষে তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন।
আইজিপি বলেন, বরাবরের মতো এবারও আমরা ঈদ উপলক্ষ্যে পশুর হাট, রেল, সড়ক ও নৌপথে ঈদযাত্রার নিরাপত্তা নিশ্চিতে সবকিছু মিলিয়ে ব্যবস্থা নিয়েছি।
কোরবানির ঈদের চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, রোজার ঈদে একমুখী চাপ থাকে। কিন্তু কোরবানির ঈদে সাধারণত যেটা ঘটে সেটা হচ্ছে, ঘরমুখো মানুষের চাপ সড়কে যেমন থাকে তেমনি, পশুবাহী ট্রাক-পিকআপও চলাচল করে। অর্থাৎ মানুষ বাড়ি যায়, গরু আসে। সড়কে দ্বিমুখী চাপ মোকাবিলা করতে হয়। পুরো বিষয় বিবেচনায় রেখে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও সঠিক রাখার জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
আইজিপি বলেন, নির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া মহাসড়কে কোনো গরুর গাড়ি কেউ থামাতে পারবে না। এ ব্যাপারে হাইওয়ে পুলিশসহ পুলিশের সব ইউনিটকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে তারা সজাগ রয়েছে। ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করার জন্য এবং কোরবানির পশুর হাটে নিরাপত্তা নিশ্চিতে আমরা আন্তঃমন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন বিভাগে মিটিং করেছি। প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পুলিশ, পরিবহন, হাট মালিক কর্তৃপক্ষ ইজারাদার ও স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছি। সবাই মিলে আমরা কাজ করছি। আশা করছি এই ঈদে নির্বিঘ্ন হবে সব কিছু।
আইজিপি বলেন, গরুর হাটে গরু কিনতে গিয়ে কেউ যদি হয়রানির শিকার হন তাহলে পুলিশকে জানান। প্রয়োজনে ৯৯৯-এ কল করে জানান, পুলিশ তড়িৎ ব্যবস্থা নেবে। নৌপথে ও সড়ক পথে কোরবানির পশুবাহী গাড়ির সামনে ব্যানারে লেখা থাকতে হবে কোন হাটে যাবে। তাহলে পুলিশের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নিতে সুবিধা হবে। কেউ সমস্যায় পড়লে আর পুলিশকে দ্রুত জানালে আমরাও দ্রুত সহায়তা করতে পারব।
ট্রাক ও ট্রলারে অতিরিক্ত পশু পরিবহন না করার অনুরোধ জানিয়ে আইজিপি বলেন, অতিরিক্ত লোডের কারণে দুর্ঘটনার আশঙ্কা তৈরি হয়। তাতে পশু মানুষ উভয়ে মারা যেতে পারে। তাই নিজেদের নিরাপত্তার বিষয়টি আগে খেয়াল রাখুন।
কোরবানির ঈদকে ঘিরে নগদ টাকার চেয়ে ব্যাংকে লেনদেন করার পরামর্শ দেন আইজিপি। তিনি বলেন, বড় অংকের আর্থিক লেনদেন করলে বা পরিবহন যদি করতে হয় তাহলে ব্যাংকে যান পুলিশের সহযোগিতা নিন। অনেক সময় অনেকে সমস্যায় পড়েন। অপরাধীরা অপরাধ করার সুযোগ পায়। এটা করবেন না, পুলিশের সহযোগিতা নিন। পুলিশ সেবা দিতে প্রস্তুত রয়েছে। হয়ত ১০-২০ মিনিট দেরি হতে পারে, কিন্তু এর জন্য আপনি ঝুঁকি নিতে যাবেন কেন?
জাল টাকা সম্পর্কে সবাইকে সতর্ক ও সজাগ থাকতে অনুরোধ জানিয়ে আইজিপি বলেন, জাল টাকার লেনদেন যাতে না হয় সেজন্য প্রত্যেকটি মার্কেটে জাল টাকা শনাক্তকরণ মেশিন স্থাপন করেছি। কেউ যদি জানতে পারেন বুঝতে পারেন পুলিশকে সহযোগিতা করেন পুলিশকে জানান পুলিশ ব্যবস্থা নেবে।
হাটে অতিরিক্ত হাসিল আদায়ের অভিযোগের প্রমাণ পেলে আইন অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে হুঁশিয়ারি দিয়ে আইজিপি বলেন, অজ্ঞান পার্টি মলম পার্টি অতিরিক্ত হাসিল আদায়ের কোনো বিষয় থাকলে অভিযোগ থাকলে পুলিশকে জানান, পুলিশ ব্যবস্থা নেবে। পশুর হাটে পরিবহন সেক্টরে কোনো ধরনের চাঁদাবাজকে ছাড় দেওয়া হবে না।