The news is by your side.

আওয়ামী লীগ সরকারকে উৎখাত করা অসম্ভব: প্রধানমন্ত্রী

0 88

 

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘দেশবাসী আমাদের পক্ষে রয়েছে, কাজেই সরকারের পতন ঘটিয়ে দেশকে আবার অন্ধকারে ঠেলে দেওয়া সম্ভব হবে না।’

সোমবার (১৮ মার্চ) জাতির পিতার ‘১০৪তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস-২০২৪’ উদযাপন উপলক্ষে তেজগাঁওয়ের ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে আয়োজিত আলোচনাসভায় সভাপতির ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘তারা (বিএনপি-জামায়াত) আওয়ামী লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করার স্বপ্ন দেখছে। তারা কিভাবে ভুলে যায় যে, আওয়ামী লীগ সব সময় জনগণের পাশে থাকে। যার জন্য জনগণ তাদের বারবার ভোট দেয়।’

তিনি বলেন, বিএনপি রমজান মাসে গরিব মানুষের মধ্যে ইফতার বিতরণ না করে সরকারের সমালোচনা করে। নিজেরা ইফতার খায় আর আওয়ামী লীগের গিবত গায়। আর কবে আওয়ামী লীগকে উৎখাত করবে সেটাই স্বপ্ন দেখে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠন এবং নির্বাচিত প্রতিনিধিরা ইফতার পার্টি না করে সারা দেশে গরিবদের মাঝে ইফতার বিতরণ করছে। দেশবাসী ও আওয়ামী লীগকে বারবার সমর্থন করেছে। কারণ তারা তাদের প্রয়োজনে আওয়ামী লীগকে সব সময় পাশে পেয়েছে।

সরকারপ্রধান বলেন, ‘এই রমজান মাসে আমি সবাইকে বলব, আপনাদের আশপাশে যারা দরিদ্র সাধারণ মানুষ রয়েছেন, তাদের পাশে দাঁড়ান, সহযোগিতা করুন।

আমরা যেমন ইফতার বণ্টন, সহযোগিতা করছি। আপনাদেরকেও সেটা করতে হবে।’

সংযমের এই মাসে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাবে মূল্যস্ফীতিতে দেশের সাধারণ জনগণের পাশে না দাঁড়ানোয় বিএনপি রাজনীতির সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তারা ইফতার পার্টি করে করুক; কিন্তু আপনারা মানুষের পাশে থাকবেন। আর এ কারণেই তো মানুষ আমাদেরকে ভোট দেয়।’

প্রধানমন্ত্রী বিএনপির তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবির প্রসঙ্গে বলেন, এখন এই দাবির পেছনে ভিন্ন উদ্দেশ্য রয়েছে।

তিনি বলেন, তারা কোনো সাহসে সেটা চায় কারণ, ২০০৮ সালের নির্বাচনে তো তত্ত্বাবধায়ক সরকারই ছিল। খালেদা জিয়াও সুস্থ ছিলেন, যদিও রাজনীতি করবে না বলে তারেক রহমান মুচলেকা দিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়। তবে হাওয়া ভবনের খাওয়া খেয়ে লন্ডনে তো তখন তারও রমরমা অবস্থা। কিন্তু সে সময়েও তারা আসন পেয়েছিল ৩০টি, অন্যদিকে আওয়ামী লীগ পেয়েছিল ২৩৩টি। এটাও তো তাদের মনে রাখা উচিত। কাজেই কিসের আশায় তারা চায়, বুঝতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে এ দেশের গরিবের পেটে ভাত থাকে, গরিবের মাথা গোঁজার ঠাঁই হয়।’ তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের বাংলায় একটি মানুষও ভূমিহীন-গৃহহীন থাকবে না।

সরকারপ্রধান বলেন, ‘কোনো মানুষ ভূমিহীন-গৃহহীন যে থাকবে না, আমরা সেটারই বাস্তবায়ন ঘটিয়ে যাচ্ছি। সেটাই ওদের সহ্য হয় না। সাধারণ মানুষ, গরিব মানুষ ভালো থাকলে সেটা তাদের পছন্দ হয় না।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘কাজেই তারা যে চায় সেটা ইলেকশনের জন্য নয়, বাংলাদেশকে আবার অন্ধকার যুগে ঠেলে দেওয়ার জন্য। কাজেই এই দেশকে আর কখনো অন্ধকার যুগে ফেলে দিতে পারবে না। কারণ এটা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের দেশ। মুজিব জন্মগ্রহণ করেছেন এই দেশের দুঃখী মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য। আর তাঁর আদর্শ ধারণ করেই আমরা সেটা করে যাব ইনশাআল্লাহ।’

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সংসদ উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম ও ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ডা. দীপু মনি, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য অধ্যাপক মেরিনা জাহান কবিতা আলোচনায় অংশ নেন।

তিনি বলেন, ধন-দৌলত-সম্পদ কেউ কবরে নিয়ে যেতে পারে না। কাজেই এর জন্য মারামারি কাটাকাটি কেন? এগুলো তো ফেলে রেখেই চলে যেতে হয়। কাজেই এগুলো যতটা মানুষকে দিয়ে দেওয়া যায় এবং মানুষের কল্যাণ করা যায়, সেটুকুই সঙ্গে থাকে। এটাই সবাইকে মাথায় রাখতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন তোলেন, আওয়ামী লীগের অপরাধ কী? তারা গরিব মানুষের পাশে দাঁড়ায়? দেশটা আজ উন্নত করেছে, সেটাই কি অপরাধ? বিএনপি গণতন্ত্রের কথা বলে। অথচ আমরাই কিন্তু গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছি। কেননা জাতির পিতাকে হত্যার পর অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী সামরিক স্বৈরশাসকের পকেট থেকে ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে ওই (বিএনপি) দলের সৃষ্টি। কোনো গণতান্ত্রিক ধারায় নয়। কাজেই তারা না গণতন্ত্রের ভাষা বোঝে, না গণতন্ত্র বানান করতে জানে!

শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশে এবং নিজ দলের ভেতর গণতন্ত্র চর্চা করে আওয়ামী লীগ। অথচ তারা তোতা পাখির মতো বলেই যাচ্ছে, গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করছে। আজকে মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার আছে বলেই তারা এত কথা বলতে পারে। যদিও মিডিয়ার বিভিন্ন ‘টক শো’তে ঢালাও সমালোচনার পর এটাও বলা হয় যে, তাদের কথা বলতে দেওয়া হয় না।’

প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, আজ দেশের মানুষ যদি কিছু পেয়ে থাকে, তা আওয়ামী লীগের হাত থেকেই পেয়েছে। স্বাধীনতা পেয়েছে, গণতন্ত্র পেয়েছে, গণতান্ত্রিক অধিকার পেয়েছে। আজকের বাংলাদেশ বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। এ সময় ‘মুজিব একটি জাতির রূপকার’ চলচ্চিত্রটি সবাইকে দেখার পরামর্শ দিয়ে বলেন, স্বল্প পরিসরে হলেও এতে দেশমাতৃকার প্রতি তাঁর প্রগাঢ় ভালোবাসা এবং আত্মত্যাগের নিদর্শন রয়েছে। পাশাপাশি তিনি আওয়ামী লীগের প্রতিটি নেতাকর্মীকে জাতির পিতা রচিত ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’, ‘কারাগারের রোজনামচা’ ও ‘আমার দেখা নয়াচীন’ এবং পাকিস্তানের গোয়েন্দা রিপোর্ট নিয়ে রচিত ‘সিক্রেট ডকুমেন্ট অব ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চ অন ফাদার অব দ্য নেশন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’ সিরিজের বইগুলো পড়ার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন, যা তাদেরকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করবে।

সরকারপ্রধান বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম হয়েছিল বলেই আজ দেশ স্বাধীন হয়েছে। আর দেশ স্বাধীন হয়েছে বলেই আজকে দেশের সাধারণ মানুষ উন্নত জীবনের স্বপ্ন দেখতে পারছে। জাতির পিতা যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গড়ে তুলে আমাদের স্বল্পোন্নত দেশের মর্যাদা দিয়ে যান, সেখান থেকে উত্তরণ ঘটিয়ে আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জন করেছি। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়েছি। ইনশাআল্লাহ ২০৪১ নাগাদ জাতির পিতার স্বপ্নের উন্নত সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলব, আজকের দিনে এটাই আমাদের প্রতিজ্ঞা।’

Leave A Reply

Your email address will not be published.