জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও মহাসচিবের স্বেচ্ছাচারিতার প্রতিবাদে একযোগে পদত্যাগ করেছেন দলটির ঢাকা মহানগর শাখার ১০ থানার ৬৭১ জন নেতাকর্মী। আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের অডিটোরিয়ামে এ উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে গণপদত্যাগের তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগরের হাতিরঝিল থানা, শেরেবাংলা নগর থানা, মোহাম্মদপুর থানা, আদাবর থানা, পল্লবী থানা, মিরপুর থানা, বাড্ডা থানা, রূপনগর থানা, দারুস সালাম থানা ও ক্যান্টনমেন্ট থানা শাখা জাতীয় পার্টির ৬৭১ জন অংশ নেন। এ সময় এসব থানার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা বক্তব্য রাখেন।
দলের সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য শফিকুল ইসলাম সেন্টু বলেন, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও মহাসচিব একটি ফাঁদে পড়েছেন। তার আশপাশে এখন যারা আছেন তারা ঘুঘুর ফাঁদ পেতেছে। এ ফাঁদ থেকে তিনি (জি এম কাদের) বেরুতে পারবেন না। এ ফাঁদের সুতা মহাসচিবের হাতে, আর সে সুতায় ঘুরছেন জি এম কাদের।
জাতীয় পার্টিকে ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা জি এম কাদেরকে বহুবার বলেছি, আপনি এসব বেড়াজাল থেকে বেরিয়ে আসেন। তিনি বলেছেন, আমি পারি না। তিনি সারা দেশের কোনো খোঁজ-খবর রাখেন না। সকালে অফিসে এসে রাতে বেরিয়ে যান। একটা কর্মসূচি, সমাবেশ, মহাসমাবেশ কোনও কিছুই তিনি করেননি। আমরা দলের মহাসচিবের পদত্যাগ চাই। আমরা জি এম কাদেরের নেতৃত্বে আর দল করবো না। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের আদর্শ নিয়েই আমরা সামনে এগোবো।
লিখিত বক্তব্যে দলের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি ও ঢাকা মহানগর উত্তরের সাবেক সদস্য সচিব জাহাঙ্গীর আলম পাঠান বলেন, পার্টির চেয়ারম্যান এবং মহাসচিব ৩০০ আসন থেকে প্রার্থী মনোনীত করার পর মাত্র ২৬টি আসনে আওয়ামী লীগের কাছ থেকে ছাড় পাওয়ার বিনিময়ে গোটা পার্টিকেই বিক্রি করে দিয়েছেন। ফলে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির চরম ভরাডুবি হয়েছে। এমতাবস্থায় দলের নিবেদিতপ্রাণ নেতাকর্মী ও সমর্থকরা চেয়ারম্যান এবং মহাসচিবের ব্যর্থতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান। পার্টির তৃণমূল পর্যায় থেকে পার্টিকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাওয়ার জন্য চেয়ারম্যান ও মহাসচিবের পদত্যাগের দাবি ওঠে। পার্টির এই দুরবস্থার মধ্যেও চেয়ারম্যান স্বেচ্ছাচারিতার নিকৃষ্ট উদাহরণ সৃষ্টি করে দলের নিবেদিতপ্রাণ নেতাদের একের পর এক অব্যাহতি দিয়ে চলেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও ছিলেন দলের অব্যাহতিপ্রাপ্ত প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভ রায়সহ দলের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা।