বাংলাদেশের নির্বাচনসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনার বিষয়টি সামনে এনে অবস্থান জানাতে চেয়েছে ভারত। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র চেয়েছে বিষয়টি প্রকাশ না করতে।
শুক্রবার নয়াদিল্লিতে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের পর ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিনয় কোয়াত্রা সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলেছেন, বাংলাদেশ নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়েছে। নির্বাচন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়।
বাংলাদেশিরাই তাদের ভবিষ্যৎ ঠিক করবে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে ওই ব্রিফিংয়ের লিখিত বিবরণীও প্রকাশিত হয়েছে।
ভারতের পররাষ্ট্রসচিবের ওই বক্তব্যের পর তিন দিন পেরিয়ে গেলেও এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য দেয়নি যুক্তরাষ্ট্র। ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসও এ বিষয়ে চুপ।
কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, ভারত-যুক্তরাষ্ট্র পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের বার্ষিক বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় বিষয়সহ স্বার্থসংশ্লিষ্ট অনেক বিষয়ে আলোচনা হয়। কিন্তু সেগুলো যৌথ বিবৃতিতে আসে না।
বিশেষ করে কৌশলগত স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় তো নয়ই।
একান্ত আলোচনা’ বলে যুক্তরাষ্ট্র যা গোপন রাখতে চাইছে, ভারত কেন তা প্রকাশ করল তার সম্ভাব্য কারণ ব্যাখ্যা করেছেন ওয়াশিংটন ডিসির শীর্ষস্থানীয় নীতি গবেষণা প্রতিষ্ঠান উইলসন সেন্টারের দক্ষিণ এশিয়া ইনস্টিটিউটের পরিচালক মাইকেল কুগেলম্যান। গতকাল রবিবার সন্ধ্যায় তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ভারত সম্ভবত বিষয়টি প্রকাশ্যে এনে জোরালো বার্তা দিতে চেয়েছিল। বাংলাদেশ নিয়ে আলোচনা হয়েছে কি না এ বিষয়ে একজন সাংবাদিক প্রশ্ন করেছিলেন। তিনি এর জবাব এড়িয়ে যেতে পারতেন।
কিন্তু তা না করে তিনি ভারতের অবস্থান বিশদভাবে ব্যাখ্যা করেছেন। এর মাধ্যমে ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বুঝিয়েছেন বাংলাদেশকে ভারত কতটা গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে।
বাংলাদেশ নিয়ে আলোচনার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নীরবতার কারণ প্রসঙ্গে মাইকেল কুগেলম্যান বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান হলো উচ্চ পর্যায়ের একান্ত আলোচনায় কী কথাবার্তা হলো সে বিষয়ে প্রকাশ্যে কিছু না বলা। যৌথ বিবৃতির বাইরে যুক্তরাষ্ট্র সাধারণত আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলে না।
উল্লেখ্য, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে চাপে রেখেছে। গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বাধা দেওয়া বাংলাদেশিদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার নীতি নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। অন্যদিকে ভারত বাংলাদেশে অন্য কোনো দেশের হস্তক্ষেপ চায় না।