শুধু গুঞ্জন নয়, একরকম নিশ্চিতই ছিল। ইউরোপীয় সংবাদমাধ্যমগুলোও আগাম জানিয়ে দিয়েছিল সবকিছু। কোনো কোনো সংবাদমাধ্যম তো আগেই ব্যালন ডি’অরের ওপর তাঁর মুখও বসিয়ে দিয়েছিল। অপেক্ষাটা তাই ছিল শুধু আনুষ্ঠানিক ঘোষণার। সেই ঘোষণাটাই আজ উচ্চারিত হলো প্যারিসের তিয়াটর দু শাতলে। অষ্টমবারের মতো ব্যালন ডি’অর জিতেছেন লিওনেল মেসি।
সোমবার প্যারিসে জমকালো আয়োজনে আর্লিং হাল্যান্ড ও কিলিয়ান এমবাপ্পেকে হারিয়ে ফ্রান্স ফুটবল ম্যাগাজিনের এই স্বীকৃতি পেয়েছেন মেসি।
এর আগে সাতবার ব্যালন ডি’অর জয়ের পর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী রোনালদোর থেকে অনেক এগিয়ে গিয়েছিলেন মেসি। ২০২২ বিশ্বকাপ জয়ের পর ৮ম ব্যালন ডি’অর জয় অনেকাংশেই নিশ্চিত করে ফেলছিলেন এই ফুটবল জাদুকর। সেটার জন্যেই দীর্ঘ প্রায় ১১ মাসের অপেক্ষার পর কাঙ্ক্ষিত সোনালি বলটি উঠলো লিওনেল মেসির হাতে।
রোজারিওর সেই ছোট্ট মেসি যখন গ্রোথ হরমোনের কারণে খেলাটাই ছেড়ে দিতে যাবেন তখনই বার্সেলোনা যেন আশীর্বাদ হয়ে আসে। তাই তো সেই স্বপ্নের ক্লাবকে আজও মনে প্রাণে ধারণ করেন, এখনো মনের গহীনে সুপ্ত বাসনা ঈপ্সিত থাকে বার্সেলোনায় ফেরার।
বার্সায় ফিরতে না পারলেও মেসি যে ইন্টার মিয়ামিতে দারুণ খুশি তা তার খেলাতেই স্পষ্ট। এমএলএস ক্লাবটিকে এনে দিয়েছেন ক্লাবটির ইতিহাসের প্রথম শিরোপা।
মেসির অষ্টম ব্যালন ডি’অর জয়ে ফিকে হয়ে গেলো নরওয়ের স্ট্রাইকার আর্লিং হালান্ডের স্বপ্নের মতো কাটানো মৌসুমটি। ট্রেবল জয়ের পাশাপাশি ইউরোপের গোল্ডেন বুটও ছিল তার ঝুলিতে। ২৩ বছর বয়সী এই গোল মেশিন গত মৌসুমে সব ধরণের প্রতিযোগিতায় ৫৩ গোল করেছেন। কিন্তু এক বিশ্বকাপের কাছে যে সবকিছুই অর্থহীন।
পুরস্কারের দৌড়ে দ্বিতীয় স্থানে শেষ করা হাল্যান্ডকে নিয়ে মেসি বললেন, ‘যেমনটা বলেছিলাম, সেও ভালোভাবে ব্যালন ডি’অরের দাবি রাখে। আর্লিং প্রিমিয়ার লিগ ও চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতেছে, সবগুলোতে সে শীর্ষ গোলদাতা ছিল। এই পুরস্কার আজ তোমারও হতে পারতো। আমি নিশ্চিত তুমি আগামীতে এটি জিতবে।’
ব্যালন ডি’অরের জন্য বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে ২০২২ সালের ১ আগস্ট থেকে ২০২৩ সালের ৩১ জুলাই সময়কে। এ সময়ে ৪২ গোল ও ২৬ অ্যাসিস্ট করেন মেসি। এছাড়া ফিফার বর্ষসেরা পুরুষ ফুটবলারও হয়েছেন তিনি। তাছাড়া ফ্রেঞ্চ লিগ, ট্রফি দিস চ্যাম্পিয়নস, লরিস স্পোর্টসম্যান অফ দ্য ইয়ারও হয়েছেন মেসি। সাবেক ক্লাব পিএসজির হয়ে লিগ ওয়ানসহ দুটি শিরোপা জেতেন তিনি। তবে তাকে ব্যালন ডি’অর জয়ের দৌড়ে এগিয়ে রাখা হচ্ছিল বিশ্বকাপ জেতার কারণে।
এদিন ছিল প্রয়াত আর্জেন্টাইন ফুটবল গ্রেটের জন্মদিন। অষ্টম ব্যালন ডি’অর জিতে ম্যারাডোনাকে স্মরণ করে মেসি বলেন,, ‘আজ আমি ডিয়েগোর নাম বলতে চাই। এখানে অনেক ফুটবলপ্রেমী আছেন, তিনিও এমন মানুষদের সঙ্গে থাকতে চাইতেন। আর তাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানানোর মতো এর চেয়ে ভালো জায়গা আর হতে পারে না। আপনি যেখানেই থাকুন না ডিয়েগো, শুভ জন্মদিন। এটা (ব্যালন ডি’অর) আপনার জন্যও।’