The news is by your side.

তাইওয়ান প্রণালী পেরনোর সময়  নিরুদ্দেশ চিনা ডুবোজাহাজ

0 136

 

নিখোঁজ চিনের পরমাণু শক্তিধর ডুবোজাহজ। তাইওয়ান প্রণালী পেরনোর সময় তার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয় পিপলস লিবারেশন আর্মির। কোথায় গেল সেই ডুবোজাহাজ?

রহস্য আরও বাড়িয়েছে চিনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লি শাংফুর অনুপস্থিতি। প্রতিরক্ষামন্ত্রক ডুবোজাহাজের নিখোঁজ হওয়া নিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি। আন্তর্জাতিক মহল বলছে, চিন বিষয়টি খোলসা না করা পর্যন্ত এই বিষয়ে কেউ কিছু জানতে পারবেন না। এটাই সে দেশের দস্তুর।

আমেরিকা মনে করছে, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী লির বিরুদ্ধে তদন্ত করছে শি জিনপিং সরকার। তাঁকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সে কারণে জনসমক্ষে আসেননি শি। এই ঘটনায় চিনের প্রশাসনের অন্তর্দ্বন্দ্বও প্রকাশ্যে।

ডুবোজাহাজের নিখোঁজ হওয়ার সঙ্গে প্রতিরক্ষামন্ত্রীর পদচ্যুতির সম্পর্ক রয়েছে। ডুবোজাহাজ নিখোঁজ হয়েছে বলেই লির বিরুদ্ধে নাকি তদন্ত চলছে।

তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক প্রথম দিকে এই ডুবোজাহাজের নিখোঁজ হওয়া নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চায়নি। পরে তাইওয়ানের প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, এই বিষয়ে তারা মন্তব্য করবে না।

তাইওয়ালের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান মেজর জেনারেল হুয়াং ওয়েংকি জানিয়েছেন, এই বিষয়টি একেবারেই ‘গোপন’। এর সঙ্গে সংবেদনশীলতা জড়িয়ে রয়েছে। সে কারণে তাইওয়ানের মন্তব্য করা ঠিক হবে না।

২১ অগস্ট থেকে ‘নিখোঁজ’ চিনের এই টাইপ ০৯৩ বা শাং ডুবোজাহাজ। এগুলি পরমাণু শক্তিধর। চিনের অন্দরের কিছু রিপোর্ট বলছে, এই ডুবোজাহাজে ছিলেন ১০০ জন সওয়ারি। প্রত্যেকেরই মৃত্যু হয়েছে। চিন যদিও এ বিষয়ে মুখ খোলেনি।

এ ধরনের পরমাণু শক্তিধর ডুবোজাহাজ চিনের কাছে মোট ছ’টি ছিল। এই টাইপ ০৯৩ চিনের দ্বিতীয় প্রজন্মের ডুবোজাহাজ যা পারমাণবিক হামলা করতে পারে। পরে এই টাইপ ০৯৩ ডুবোজাহাজের আধুনিকীকরণ করে ০৯৩এ ডুবোজাহাজ তৈরি করা হয়েছে।

তাইওয়ানের উপর অধিকার ফলানোকে কেন্দ্র করে আমেরিকার সঙ্গে চিনের সংঘাত সম্প্রতি চরমে উঠেছে। তাইওয়ানের চারপাশে চিনের সেনার মহড়াও চলছে। তার মধ্যেই এসেছে এই ডুবোজাহাজ নিখোঁজ হওয়ার খবর।

সামরিক বিশেষজ্ঞেরা জানিয়েছেন, এই পরিস্থিতিতে ডুবোজাহাজ নিখোঁজ হওয়ার খবর প্রকাশ্যে এলে চিনের দুর্বলতা প্রকট হতে পারে। তাতে আমেরিকার হাত শক্ত হতে পারে। সে কারণে চিন সরকার মুখ খুলছে না।

ভারতীয় নৌসেনার প্রাক্তন ইস্টার্ন অ্যান্ড ওয়েস্টার্ন কমান্ডের ভাইস অ্যাডমিরাল এবি সিংহের মতে, এই খবর চিনের পক্ষে বেশি দিন গোপন রাখা সম্ভব নয়। এই প্রসঙ্গে আর এক ভারতীয় নৌসেনা আধিকারিক গালওয়ানের সংঘর্ষের প্রসঙ্গ তোলেন। তিনি জানান, দুই পক্ষের বেশ কয়েক জন জওয়ান হতাহত হওয়ার পরেই বিষয়টি ধামাচাপা দিতে চেয়েছিল চিন।

ঘটনার প্রায় এক বছর পর, ২০২১ সালে চিনে স্বীকার করেছিল যে গালওয়ানে ভারতীয় জওয়ানদের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে তাদেরও অনেকে নিহত হয়েছিলেন।

মনে করা হচ্ছে, ঠিক সেই ভাবেই ডুবোজাহাজের নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টিও কিছু দিন পর প্রকাশ্যে আনবে চিন। তবে প্রশ্ন উঠছে, ডুবোজাহাজের হদিস কেন দিতে পারল না উপগ্রহ? বিশেষজ্ঞেরা মনে করছেন, ডুবোজাহাজ যদি দুর্ঘটনার মুখে পড়ে, সে ক্ষেত্রে উপগ্রহে তা ধরা পড়বে না?

তার পরেই চিন বিষয়টি বেশি দিন গোপন রাতে পারবে না বলে মত বিশেষজ্ঞদের। তাঁদের মতে, দীর্ঘ দিন ডুবোজাহাজ বন্দরে না ফিরলে সওয়ারিদের পরিবার অবশ্যই খোঁজ-খবর শুরু করবেন। তখন বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতে পারে।

২০০৩ সালের মে মাসে চিনের একটি ডুবোজাহাজ নিরুদ্দেশ হয়ে যায়। তাতে সওয়ার ছিলেন ৭০ জন। এ পর্যন্ত সেটিই চিনের নৌবাহিনীর ইতিহাসে সব থেকে বড় বিপর্যয়। এ বার এই টাইপ ০৯৩-এর দুর্ঘটনার বিষয় নিশ্চিত করলে তখনই বোঝা যাবে, এ বারে বিপর্যয় আগের বারের থেকেও বড় কি না।

Leave A Reply

Your email address will not be published.