ভারতে থাকা বাংলাদেশিরা চাইলে তাদের দেশে ফিরিয়ে আনা হবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে নিজ দফতরের সভাকক্ষে সমসাময়িক ইস্যুতে সাংবাদিকদের সামনে তিনি এ সব কথা বলেন।
এর আগে ভারতের আসাম রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সানোওয়াল বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে আর কেউ আসামে ঢুকতে পারবে না’। বিষয়টি উল্লেখ করে, সেখানকার বাংলাদেশিরা দেশে ফিরতে চাইলে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘তারা চাইলে তাদের দেশে ফিরিয়ে আনা হবে।’
তিনি বলেন, ২০০১ সালে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর যে হামলা হয়েছিল, স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়ের বর্বরতাকেও তা হার মানিয়েছে। সেই সময় অনেকেই জান-মালের নিরাপত্তা রক্ষায় দেশ ছেড়ে পালিয়েছিলেন।
এ সময় এই বিষয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের এক মন্তব্যের প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, তিনি শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করছেন। শাক দিয়ে মাছ ঢাকা যায় না। বিএনপির সময়ই সবচেয়ে বেশি হামলা হয়েছে।
এ সময় ডাকসুতে হামলার বিষয়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক এবং সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, ডাকসুতে যে হামলা হয়েছে তা নিন্দনীয়। হামলার সঙ্গে যারাই জড়িত হোক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। দলের পক্ষ থেকে এ হামলায় তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।
নুরুর ওপর হামলার বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, এ ধরনের ঘটনায় সরকার অবশ্যই বিব্রত হয়। তবে কোনো ঘটনাতেই সরকার নির্বিকার থাকেনি। ঘরের লোক দলের লোকের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। অনুপ্রবেশকারীরাও অনেক সময় অবাঞ্ছিত ঘটনা ঘটায়। সার্বিক বিষয়গুলো সিরিয়াসলি দেখা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ সরাসরি আমাদের দলের সঙ্গে জড়িত নয়। মঞ্চের একজন ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কৃত। এ ধরনের নিন্দনীয় ঘটনা যারা ঘটায় তাদের ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বিষয়টা শেয়ার করেছি।
সেতুমন্ত্রী বলেন, ভিন্ন মত প্রকাশের অধিকার প্রত্যেকেরই রয়েছে। ডাকসুর ভিপি আমাদের সমালোচনা করতে পারে, সরকারের সমালোচনা করার অধিকার তার আছে। এখানে অন্য বহিরাগতরা আসে এ সব কথা অনেকে বলে। যতকিছুই হোক যে হামলাটা হয়েছে এটা নিন্দনীয় এবং আমি এটার নিন্দা করি।
এ ব্যাপারে আমাদের প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সোমবার আমাদের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাছিম হাসপাতালে গিয়েছিলেন তাদের চিকিৎসার খোঁজ-খবর নেয়ার জন্য।
নেত্রী (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) সুস্পষ্টভাবে বলে দিয়েছেন এ ঘটনার সাঙ্গে যারাই জড়িত, তারা যদি দলীয় পরিচয়েরও কেউ হন, তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। একই সঙ্গে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে এ ব্যাপারে প্রশাসিক ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধ আমাদের অহংকারের জায়গা, অথচ সেটাকে ব্যবহার করে মুক্তিযুদ্ধ মুঞ্চ এ ধরনের কাজ করছে- এ বিষয়ে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সঙ্গে কেবিনেটে কথা বলেছি। এ ধরনের নিন্দনীয় ঘটনা যারা ঘটায়, তাদের বিষয়ে অবশ্যই আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সিরিয়াসলি দেখা উচিত।
মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সেক্রেটারি আল মামুন ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির সহ-সভাপতি। এ বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, যেই হোক, আমি তো বলেছি যে পরিচয়েরই হোক, অপকর্মকারীকে আমরা অপকর্মকারী হিসেবেই দেখব, অপরাধীকে অপরাধী হিসেবেই দেখব। এখানে কোনো প্রকার ছাড় দেয়ার প্রশ্নেই আসে না।
ডাকসুর ভিপি নুরের ওপর এর আগেও আটবার হামলা হয়েছে, তার কোনো দৃশ্যমান বিচার দেখা যায়নি- এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এবার ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়টা কতটা বাস্তবায়ন হবে বাস্তবেই দেখুন।