২০২৪ সালের ২৭ জানুয়ারি যাত্রা শুরু করবে পৃথিবীর সব থেকে বড় প্রমোদতরী
জাহাজে রয়েছে ইনফিনিটি পুল, যেখানে সাঁতার দিতে দিতে নীল আকাশ আর নীল সমুদ্র উপভোগ করতে পারবেন যাত্রীরা
পৃথিবীর সব থেকে বড় প্রমোদতরী সাগরে ভাসতে প্রায় প্রস্তুত। অপেক্ষা আর মাত্র কয়েক মাস। ২০২৪ সালের ২৭ জানুয়ারি যাত্রা শুরু করবে এই প্রমোদতরী। আমেরিকার ফ্লরিডার মায়ামি থেকে। যাবে পূর্ব এবং পশ্চিম ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জে। জাহাজটির নাম ‘আইকন অফ দ্য সিজ়’।
জাহাজের প্রথম সফরের সব টিকিট ইতিমধ্যে বিক্রি হয়ে গিয়েছে। হাজার হাজার মানুষ এই বিখ্যাত জাহাজের প্রথম সফরের সাক্ষী হতে চেয়েছেন। সাত দিন ধরে ঘুরে বেড়াতে চেয়েছেন সমুদ্রের নীল জলরাশিতে।
জাহাজে চাপতে পারবেন প্রায় ৭,৯৬০ জন। তাঁদের মধ্যে ৫,৬১০ জন যাত্রী এবং ২,৩৫০ জন কর্মী। সব ধরনের পরিবারই এই প্রমোদতরীর যাত্রা উপভোগ করবেন। আরাম করা বা রোমাঞ্চ উপভোগ, সবটাই হবে সেখানে। কমবয়সি পরিবারের জন্যও রয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। পানাহার, বিনোদনের জন্য ৪০ রকমের ব্যবস্থা থাকছে।
জাহাজের দৈর্ঘ্য প্রায় ১,২০০ ফুট। ওজন ২ লক্ষ ৫০ হাজার ৮০০ টন। যেখানে টাইটানিকের দৈর্ঘ্য ছিল ২৬৯ মিটার বা ৮৮২.৫৪ ফুট। টাইটানিকের থেকেও কতটা বড় এই জাহাজ, তা এর থেকেই স্পষ্ট। জাহাজে রয়েছে ছ’টি ওয়াটার স্লাইড। তার পাশাপাশি রয়েছে সাতটি সুইমিং পুল এবং ন’টি বিশেষ ধরনের পুল, যার মধ্যে ঘূর্ণাবর্ত চলবে।
রয়্যাল ক্যারিবিয়ান সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, এখন তাদের সব থেকে বড় জাহাজ হল ‘ওয়ান্ডার অফ দ্য সিস’। নতুন প্রমোদতরী ‘আইকন অফ দ্য সিস’ তার থেকেও ৬ শতাংশ বড়। দৈর্ঘ্যে ১০ ফুট বেশি।
২০২২ সালের এপ্রিলে জাহাজটির নির্মাণ শুরু হয়েছিল। সেই থেকে ফিনল্যান্ডের মেয়ের টুর্কু জাহাজ নির্মাণ কেন্দ্রে রয়েছিল সেটি। সেখানেই চলছিল নির্মাণকাজ। ওই জাহাজ নির্মাণ কেন্দ্র থেকেই পরীক্ষামূলক সফরের জন্য রওনা হয়েছে জাহাজটি। আগামী বছর ২৭ জানুয়ারি বাণিজ্যিক সফর শুরু।
পরীক্ষামূলক সফরের সময় চার দিন ধরে জাহাজের প্রধান ইঞ্জিন, প্রযুক্তি, কম্পন পরীক্ষানিরীক্ষা করে দেখেছেন ৪৫০ জন বিশেষজ্ঞ। চলতি বছরের শেষে আরও এক বার পরীক্ষামূলক যাত্রা করবে ‘আইকন অফ দ্য সিজ়’। তার পরেই চূড়ান্ত সফরের ছাড়পত্র পাবে সে। যোগ দেবে রয়্যাল ক্যারিবিয়ান সংস্থার কাজে। ২০২৫ সালের এপ্রিল পর্যন্ত মায়ামি থেকে ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের উদ্দেশে যাত্রা করবে। তার পর জাহাজের গতিপথ পরিবর্তন করা হতে পারে।
জাহাজে যাত্রীদের আরাম, বিলাসের ব্যবস্থার কোনও অভাব রাখা হয়নি। রয়েছে ইনফিনিটি পুল, যেখানে সাঁতার দিতে দিতে নীল আকাশ আর নীল সমুদ্র উপভোগ করতে পারবেন যাত্রীরা। জাহাজের মধ্যে রয়েছে আস্ত ওয়াটার পার্ক। সেখানে শিশু থেকে প্রবীণ, ইচ্ছামতো জলক্রীড়া করতে পারবেন।
অ্যাকোয়া থিয়েটারও রয়েছে। যেখানে পুলের ধারে রয়েছে দর্শকাসন। ২২০ ডিগ্রি ভিউ রয়েছে। জাহাজের ভিতরে রয়েছে পার্ক, যেখানে রয়েছে আসল গাছ। সাঁতার দিতে দিতে সুরাপানের ব্যবস্থাও থাকছে যাত্রীদের জন্য। অর্থাৎ সুইম-আপ বার।
সাত রাতের পূর্ব-ক্যারিবিয়ান সফরে ঘোরানো হবে মায়ামি, ফিলিপসবার্গ, শার্লটি আমালি, কোকো কে। আর পশ্চিম-ক্যারিবিয়ান সফরে ঘোরানো হবে মায়ামি, রোয়াটান, কোস্টা মায়া, কোজুমেল, কোকো কে। প্রমোদতরীতে ২৮ ধরনের কেবিন থাকবে। ৮২ শতাংশ ঘরেই তিন বা তার বেশি সংখ্যক মানুষ থাকতে পারবেন। ৭০ শতাংশ ঘরে ব্যালকনি থাকবে।
সংস্থার সিইও জেসন লিবার্টি জানিয়েছেন, যাত্রীরা এই জাহাজে পা দিলে অন্য রকম অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করবেন। তাঁদের সেরা ছুটি উপহার দেওয়ার কথা মাথায় রেখে তৈরি করা হয়েছে এই প্রমোদতরী।