আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি এক বছর পূর্ণ হতে চলছে ইউক্রেনে চলা রাশিয়ার যুদ্ধ। বর্ষপূতিকে কেন্দ্র করে কিছুদিন ধরে ইউক্রেনের ডনবাস সীমান্তসহ বিভিন্ন শহরে নতুন করে হামলা জোরদার করেছে মস্কো। এমন বাস্তবতায় মঙ্গলবার মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতরের প্রধান লয়েড অস্টিন জানান, ‘আগামী মাসে রুশ বাহিনীর ওপর ইউক্রেনের প্রত্যাশিত হামলা শুরু হতে পারে। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কিয়েভকে সহায়তায় প্রয়োজনীয় সামরিক সরঞ্জাম দ্রুত পাঠানোর চেষ্টা চলছে’।
ডনবাসের সীমান্ত এলাকাগুলোয় প্রচণ্ড লড়াই চলছে রুশ-ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীর। নিজেদের ভূখণ্ড ধরে রাখতে ফ্রন্টলাইনে এখনও প্রতিরোধ অব্যাহত রেখেছে ইউক্রেনীয় যোদ্ধারা। তবে কৌশলে ধীরে ধীরে এগুচ্ছে রুশ বাহিনী। এর মধ্যে কঠিন লড়াই চলছে বাখমুতে।
বাখমুত দখলের জন্য সর্বোচ্চ মনোযোগ দিচ্ছে মস্কো। ইউক্রেন ও দেশটির পশ্চিমা মিত্ররা গত সপ্তাহ থেকে বলে আসছেন,রাশিয়া নতুন একটি আক্রমণ শুরু করেছে। বসন্তের আগে নতুন পশ্চিমা অস্ত্রের সরবরাহ পৌঁছার আগে তারা নিজেদের অবস্থান শক্তিশালী করতে চাইছে। সে অনুযায়ী তারা কিছুটা কৌশলে অবস্থান নিয়েছে।
ইউক্রেনের হাতে গোলাবারুদ থাকলেও প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী নতুন সামরিক চালান পাঠাতে তোড়জোড় চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এ বিষয়ে পেন্টাগনের প্রধান অস্টিন বলেন, ‘ইউক্রেন এখন যুদ্ধে নিজেদের গতি বাড়াতে চায়। যুদ্ধক্ষেত্রে এমন পরিস্থিতি তৈরি করতে চায় যা তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকে। ফলে রুশ বাহিনীর ওপর পাল্টা আক্রমণের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম, ট্যাংক, গোলাবারুদ দ্রুত পাঠাতে কঠোর পরিশ্রম করছে ওয়াশিংটন এবং তাদের মিত্ররা।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘আমরা আশা করি তারা আগামী বসন্তের কোনও এক সময়ে হামলা চালাবে।’
বাখমুত দখলে রাশিয়ার লড়াই শুরু হয়েছে জুন মাসে। এটি যুদ্ধের একটি রক্তাক্ত সংঘাতে পরিণত হয়েছে। শহরটি দখলে সামরিক শক্তি কেন্দ্রীভূত করেছে মস্কো। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পোস্টে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে, শহরটিতে ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী ব্যাপক হতাহতের শিকার হয়েছে। বিশেষ করে অক্টোবরে হাজারো নতুন সেনা রাশিয়া মোতায়েনের পর। ইউক্রেনের প্রকাশিত ড্রোন ফুটেজে রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে কবরস্থান দেখা গেছে। যা ইঙ্গিত দিচ্ছে রাশিয়ারও প্রাণহানি ব্যাপক।
চলতি বছরের শেষদিকে ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে লেপার্ড-২ উন্নতপ্রযুক্তির ট্যাংক এবং দূরপাল্লার অস্ত্র সহায়তার ঘোষণা দিয়েছে জার্মানি, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা। ইউক্রেনকে সহায়তা ঘোষণার পর থেকেই নতুন করে হামলার গতি বাড়িয়েছে মস্কো।
মঙ্গলবার কানাডার পররাষ্টমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েছে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির। ইউক্রেনের বাহিনীকে প্রয়োজনীয় সহায়তার বিষয়ে কানাডার মন্ত্রী মেলানিয়ার জোলির সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ বৈঠক হয়। ইউক্রেন ও দেশটির সাধারণ মানুষের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি পুর্ন্যবক্ত করেছেন তিনি।