আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘বিএনপি যে অগ্নিসন্ত্রাস, নৈরাজ্যের পথ থেকে বের হয়নি, সেটির বহি:প্রকাশ তারা চট্টগ্রামে দেখিয়েছে। ঢাকায় খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলছেন তারা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করতে চান। আর অপরদিকে চট্টগ্রামে তাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের নমুনা হচ্ছে পুলিশের ওপর হামলা, গাড়িঘোড়া ভাংচুর এবং অগ্নিসংযোগ।’
মঙ্গলবার অপরাহ্নে সচিবালয়ে তথ্য অধিদফতর সম্মেলন কক্ষে মোনায়েম সরকার সম্পাদিত ‘আবদুল গাফফার চৌধুরী স্মারক গ্রন্থে’র মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী একথা বলেন।
‘বিএনপির রাজনীতি জনমুখী নয়, বিদেশিমুখী’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তারা রাতের অন্ধকারে বিদেশি কূটনীতিকদের কাছে ছুটে যাওয়া, তাদের পদলেহন করা এই নীতি গ্রহণ করেছে। তবে এ সব করে কোন লাভ হয়নি সেটি তারা বুঝেছে যখন অতি সম্প্রতি মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশ সফরে এসে বলে গেছেন যে বাংলাদেশে নিরাপত্তা বাহিনীর কাজের গুণগত উন্নতি হয়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্র আমাদের নিরাপত্তা বাহিনীকে সহায়তা করতে চায়, প্রশিক্ষণ দিতে চায়। এতে তাদের মাথাটা খারাপ হয়ে গেছে। ফলে এখন তারা আবোল-তাবোল বকা শুরু করেছে।’
বিএনপির ওপর দমন নিপীড়নের অভিযোগ খন্ডন করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সরকার বিএনপির ওপর দমন নিপীড়ন চালাচ্ছে না। বিএনপিকে বলবো তারা যখন ক্ষমতায় ছিল, কি করেছিল সেটা দেখতে পেছনে তাকানোর জন্য। তারা অপারেশন ক্লিনহার্টের নামে ২০০২ সালে ডজন ডজন মানুষ হত্যা করেছিল, আওয়ামী লীগের গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিআরআই অফিসের মালামাল লুট করে সীল করে দিয়েছিল।’
ড. হাছান বলেন, ‘বিএনপি আমাদের সমাবেশগুলোতে ভয়াবহ গ্রেনেড ও বোমা হামলা চালিয়ে বহু মানুষকে হতাহত করেছিল, আমাদের পার্টি অফিসের সামনে কাঁটাতারের বেড়া দিয়েছিল, রাসেল স্কয়ারে জ্যেষ্ঠ রাজনীতিক মতিয়া চৌধুরী, মোহাম্মদ নাসিমসহ বহু নেতা-কর্মীকে লাঠিপেটা করেছিল। কিন্তু তাদের কোনো অফিস তো সরকার বন্ধ করেনি, তাদের কোনো সমাবেশে হামলা হয়নি, ফখরুল-আব্বাস-মোশাররফ সাহেবদের গায়ে তো কোনো আঁচড়ও পড়েনি।’
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘যে বা যারাই ক্ষমতায় থাকুক, যখনই কোনো অসংগতি দেখেছেন, সেটির ব্যাপারে আব্দুল গাফফার চৌধুরী কলম ধরেছেন, এমন কি আমাদের সরকারকে পরামর্শ দিতে গিয়ে কলম ধরেছেন, প্রয়োজনে আমাদের সমালোচনাও করেছেন’ বলেন ড. হাছান। তিনি বলেন, ‘একজন কলমযোদ্ধা তেমনই হওয়া উচিত। তিনি তেমনই একজন মানুষ ছিলেন। তার মৃত্যুর এক বছরের মাথায় এই বইটি সম্পাদনা করার জন্য বইয়ের সম্পাদনা পরিষদে যারা ছিলেন, তাদেরকে ধন্যবাদ জানাই। সুলতান শরীফ ভাইয়ের বয়স ৮৩ বছর। এখানে আসার জন্য তাকে ধন্যবাদ জানাই।’
বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন ফর ডিভালপমেন্ট রিসার্চের সহায়তায় আগামী প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত ৪১৬ পৃষ্ঠার ‘আবদুল গাফফার চৌধুরী স্মারক গ্রন্থ’টিতে প্রায় ৮০টি নিবন্ধ, সাক্ষাৎকার, গাফফার চৌধুরীর কবিতা ও গল্প রয়েছে।