The news is by your side.

মোবাইল নেটওয়ার্কের আওতায় আসছে রোহিঙ্গারা

0 190

 

কক্সবাজার অফিস

কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশের মোবাইল ফোন নেটওয়ার্ক বন্ধ রয়েছে। ফোরজি ও থ্রিজি সেবা পুরোপুরি বন্ধ। আর এই সুযোগে রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের মোবাইল সিম ব্যবহার শুরু করেছে।

কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে খুব ভালোভাবেই মিয়ানমারের নেটওয়ার্ক পাওয়া যায়। দেশের নেটওয়ার্ক ব্যবহার না করায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সেখানকার অপরাধীদের অপরাধ শনাক্ত করতে পারছে না। ফলে এখন রোহিঙ্গাদের শনাক্তকারী নম্বরের বিপরীতে মোবাইল সিমকার্ড দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে সরকার।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) অপরাধীদের বিষয়ে জানানোর পর তারা তদন্ত শুরু করে। সম্প্রতি সেই কমিটি রিপোর্ট দেওয়ার পর বিটিআরসি পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছে রোহিঙ্গারা যেহেতু যে কোনোভাবে মোবাইল ফোন ব্যবহার করে, তাই তাদের বাংলাদেশের সিমকার্ড দেওয়া যেতে পারে। যাতে তাদের নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখতে পারেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এতে অপরাধ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে থাকবে বলে মনে করছেন বিটিআরসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

গত কয়েক দিন আগে ট্রাক সাজিয়ে ঢাকঢোল নিয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সিম বিক্রি করছিল বাংলালিংক। পরে বিটিআরসির নেতৃত্বে সেখানে অভিযান চালিয়ে বাংলালিংকের ঐ ট্রাক জব্দ করা হয়। পরে তাদের জরিমানা করার কথাও জানায় বিটিআরসি।

বিটিআরসির কমিটির পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সরকারের নিয়ম অনুযায়ী বাংলাদেশের মোবাইল সিম ব্যবহারের ক্ষেত্রে সিম নিবন্ধনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। রোহিঙ্গা শরণার্থীরা নিবন্ধন ছাড়া সিম ব্যবহারের সুযোগ নেই। এক্ষেত্রে কেন্দ্রীয়ভাবে ডেটাবেইজে ফ্যামিলি অ্যাটেসটেশন (এফসিএন) বা পরিবার প্রত্যয়নপত্রে উল্লেখিত অভিন্ন ফ্যামিলি কাউন্টিং নাম্বার এবং স্মার্ট কার্ড আইডির বিপরীতে সিম নিবন্ধন করে এই ফ্যামিলি কাউন্টিং নম্বর এবং স্মার্ট কার্ড আইডি নম্বর সংরক্ষণ করলে রোহিঙ্গা শরণার্থীর সিম ব্যবহারকারীর পরিচিতি নিশ্চিত করা যাবে।

তবে রোহিঙ্গাদের সিম দেওয়ার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, আইন প্রয়োগকারী ও গোয়েন্দা সংস্থার অভিমতের ভিত্তিতেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। প্রতিটি ক্যাম্পে কী পরিমাণ পরিবার বা শরণার্থী আছে তার সঠিক সংখ্যা নির্ণয় করতে হবে। সেই সঙ্গে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হতে দেওয়া নম্বরের ডেটাবেইজ এবং এফসিএন নম্বরের ডেটাবেইজ সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য লাগবে।

সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, আইন প্রয়োগকারী ও গোয়েন্দা সংস্থার অভিমতের ভিত্তিতে যদি রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সিম দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় তাহলে প্রতিটি রোহিঙ্গা পরিবারকে পাঁচটি করে সিম দেওয়া যেতে পারে। এক্ষেত্রে প্রতিটি রোহিঙ্গা পরিবারের এফসিএন নম্বরের বিপরীতে সর্বোচ্চ পাঁচটি সিম দেওয়া যায়। যেখানে ১৮ বছর বা তার বেশি বয়সি রোহিঙ্গা শরণার্থীকে সিম দেওয়া হবে। ডকুমেন্ট বা প্রমাণপত্র হিসেবে থাকবে রোহিঙ্গা শরণার্থীর স্মার্ট কার্ড আইডি এবং এফসিএন নম্বর।

প্রতিটি ক্যাম্পে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সিম কার্ড বিক্রিতে অপারেটররা আলাদা আলাদা রিটেইলারের ব্যবস্থা রাখবে। রোহিঙ্গাদের পরিচয় নিশ্চিত করাতে সেন্ট্রাল বায়োমেট্রিক ভেরিফিকেশন মনিটরিং প্ল্যাটফরমে (সিবিভিএমপি) রোহিঙ্গাদের আলাদা আইডি সংযোগিত হতে পারে। মোবাইল অপারেটররা যেন সহজে ও দ্রুত সিম শনাক্ত করতে পারে সেজন্য রোহিঙ্গাদের কিছু নির্দিষ্ট সংখ্যক একই মোবাইল নম্বর সিরিজ বরাদ্দ থাকবে। ক্যাম্পের এলাকা জিও ফেন্সিং কাভারেজের আওতায় থাকবে। যাতে ক্যাম্প এলাকার বাইরে রোহিঙ্গা শরণার্থীরা সিম ব্যবহার না করতে পারে।

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.