বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাঙালি সংস্কৃতির অন্যতম প্রধান পুরুষ। তার সংগীতের আবেদন অবিস্মরণীয় ও চিরকালীন। বাঙালির স্বাধিকার, বিশেষত স্বাধীনতাসংগ্রামে রবীন্দ্রসংগীত প্রেরণার উৎস। রবীন্দ্রনাথের গান আবহমানকালের বাঙালি সংস্কৃতির মূলধারাকে বিকশিত ও সমৃদ্ধ করে চলেছে।
১৬২তম রবীন্দ্রজয়ন্তী উপলক্ষে রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে আগামী ১২-১৩ মে দুই দিনের ‘চতুস্ত্রিংশ (৩৪তম) জাতীয় রবীন্দ্রসংগীত উৎসব’ আয়োজন করেছে বাংলাদেশ রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী সংস্থা।
এবারের জাতীয় রবীন্দ্রসংগীত উৎসবের প্রতিপাদ্য ‘করিস নে লাজ, করিস নে ভয়,/আপনাকে তুই করে নে জয়…।’ বরাবরের মতো এবারও থাকছে গুণীজন সম্মাননা। এবারের উৎসবে দুই গুণীজনকে বিশেষ সম্মাননা দেওয়া হবে বাংলাদেশ রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী সংস্থার পক্ষ থেকে।
সম্মাননা পাচ্ছেন কিংবদন্তি গিটারশিল্পী এনামুল কবীর ও প্রখ্যাত রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী লিলি ইসলাম।
উদ্বোধনী দিনে এই দুই গুণীর হাতে সম্মাননা তুলে দেবেন উৎসবের উদ্বোধক ও প্রধান অতিথি বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এমপি। সভাপতিত্ব করবেন সংস্থার নির্বাহী সভাপতি আমিনা আহমেদ।
শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থেকে উৎসব ও সংস্থার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরেন সংস্থার নির্বাহী সভাপতি আমিনা আহমেদ। অস্ট্রেলিয়া থেকে ভার্চুয়ালি অংশ নেন সংস্থার সভাপতি ও কণ্ঠশিল্পী তপন মাহমুদ। সংস্থার বর্তমান পরিস্থিতি ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সবিস্তারে তুলে ধরে বক্তব্য দেন সাধারণ সম্পাদক ও কণ্ঠশিল্পী পীযূষ বড়ুয়া।
অতিথি ছিলেন প্রখ্যাত কণ্ঠশিল্পী ও সংস্থার আজীবন সদস্য রফিকুল আলম। অন্যান্যের মধ্যে তানজিমা তমা, অনিকেত আচার্য, কনক খান, আবদুর রশিদ, রিফাত জামাল, শর্মিলা চক্রবর্তী, আহমাদ মায়া আখতারী, জাফর আহমেদ, নির্ঝর চৌধুরীসহ আরো অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
সংস্থার সভাপতি ও কণ্ঠশিল্পী তপন মাহমুদ বলেন, ‘সূচনালগ্ন থেকেই রবীন্দ্রসংগীত সংস্থা যে মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে পরিচালিত হয়ে আসছে তা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে। যতই বাধা-বিপত্তি আসুক না কেন, এই সংস্থা তার মহৎ উদ্দেশ্য থেকে বিন্দুমাত্র সরে আসবে না।’
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, দুই দিনের উৎসবে দেশের খ্যাতনামা বেশ কয়েকজন শিল্পী ছাড়া সংস্থার শতাধিক দলীয় ও একক পরিবেশনায় অংশ নেবেন। অনুষ্ঠানের সূচনা হবে প্রথা অনুযায়ী পর পর তিনটি কোরাসের মধ্য দিয়ে। এরপর দেওয়া হবে গুণীজন সম্মাননা।
প্রথম দিন (১২ মে) অনুষ্ঠান দুই ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে। প্রথম পর্ব উদ্বোধন ও গুণীজন সম্মাননা। দ্বিতীয় পর্ব শুরু হবে সন্ধ্যা ৬টায়। পরের দিন ১৩ মে (শনিবার) অনুষ্ঠান শুরু হবে বিকেলে ৫টায়। এদিনও দেশসেরা আবৃত্তি ও কণ্ঠশিল্পীরা অংশ নেবেন। এদিনের সূচনায়ও থাকবে সংস্থার প্রথা অনুযায়ী পর পর তিনটি কোরাস। উৎসব সবার জন্য উন্মুক্ত।