The news is by your side.

রাজনৈতিক সংস্কৃতি পরিবর্তনের সময় এসেছে:  সোহেল তাজ

দুর্নীতির সংস্কৃতি  চারদলীয় জোট, এরশাদ ও জিয়াউর রহমানের সময় থেকেই শুরু হয়েছে

0 185

 

 

সোহেল তাজ রাজনীতিতে ফিরছেন- এমন তথ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পরার পর এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক সংস্কৃতি পরিবর্তনের সময় এসেছে। যে সুযোগ আওয়ামী লীগ নিতে পারে।’ জনসম্পৃক্ততা ও জনসমর্থন ধরে রাখার জন্য সামনের দিনগুলোতে আওয়ামী লীগের রাজনীতি কী ধরনের হওয়া উচিত, তার একটি সুস্পষ্ট ধারণাও দেন সোহেল তাজ।

রাজনীতি থেকে স্বেচ্ছায় অন্তর্ধানে যাওয়া সোহেল তাজ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রতি অবিচল অস্থার প্রমাণ রেখেছেন। দুই পরিবারের পারিবারিক বন্ধন ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক এখনো সুদৃঢ় রয়েছে। তাজউদ্দীন আহমদ পরিবার ও দলীয় একাধিক সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে।

ডিসেম্বরে আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এছাড়া আগামী বছরের শেষে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে জাতীয় নির্বাচন। টানা তৃতীয় মেয়াদে সরকার গঠন করা আওয়ামী লীগ বৈশ্বিক সংকটময় পরিস্থিতির জন্য অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে চ্যালেঞ্জিং সময় পার করছে বলে দলটির কেন্দ্রীয় নেতারাও প্রকাশ্যে স্বীকার করছেন।

বিরোধীদের আন্দোলন মোকাবিলা, দলীয় সম্মেলন ও নির্বাচন নিয়ে যখন নানা ধরনের কথা শোনা যাচ্ছে, ঠিক সেই সময় হঠাৎ করেই আলোচনায় আসে সোহেল তাজের রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ার বিষয়টি।

বৃহস্পতিবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়ে সোহেল তাজের রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ার বিষয়টিকে সামনে আনেন তার ছোট বোন মাহজাবিন আহমদ মিমি। বিষয়টিতে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে আওয়ামী লীগের অনেকে নেতাকর্মী ও শুভাকাঙ্ক্ষী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সোহেল তাজকে অভিনন্দন জানিয়েছেন বোনের সেই স্ট্যাটাসে।

তানজিম আহমদ সোহেল তাজ, তার ভবিষ্যত রাজনৈতিক চিন্তা থেকে রাজনীতির অনেক বিষয় নিয়ে কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। এখন দেশের রাজনীতিতে একটা গুণগত পারিবর্তন আনার সময় এসেছে। তরুণ প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ করে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ার কাজ শুরু করা প্রয়োজন। আর এই কাজ কেবল মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী দল আওয়ামী লীগের মাধ্যমেই সম্ভব। দলের ত্যাগী ও নিবেদিত নেতাকর্মীদের একত্র করে এই কাজ এখনই শুরু করা উচিত।’

আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে কবে থেকে সক্রিয় হওয়ার কথা ভাবছেন জানতে চাইলে বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর তাজউদ্দীন আহমদের সন্তান বলেন, ‘আমার পরিবারের একটা রাজনৈতিক ঐতিহ্য রয়েছে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ তথা বাংলাদেশের জন্য শ্রম ত্যাগ, এমনকি জীবন পর্যন্ত দেয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগের সঙ্গে আমার রক্তের সম্পর্ক। আর আমি কখনো আওয়ামী লীগের বাইরে ছিলাম না, নাই; থাকবও না।

‘আমি আওয়ামী লীগের সঙ্গে আছি, ছিলাম; থাকব এবং বর্তমানেও আছি। কথা হচ্ছে, আমি বরাবরই বলে এসেছি, আওয়ামী লীগের যদি প্রয়োজন হয়, দেশের প্রয়োজন হলে আমাকে ডাক দিলে, আমি সব সময় প্রস্তুত আছি। আমার সাধ্যমতো কাজ করার জন্য প্রস্তুত আছি। আমি এই অবস্থানে আগেও ছিলাম, এখনো আছি।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে, হচ্ছে। পদ্মা সেতু, মেট্রোরেলের মতো অনেক উন্নয়নের সাফল্যের প্রমাণ রাখে। এখন আমি মনে করি এত ত্যাগের বিনিময়ে যেই বাংলাদেশ, আমাদের সবারই কর্তব্য বিশেষ করে আওয়ামী লীগের ওপর এই কর্তব্য বর্তায়, সেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় নতুন প্রজন্মকে প্রস্তুত করা। যাতে আগামী এক দুই তিন জেনারেশন যেন এই চেতনাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে।

‘তার মানে আমাদের  মানবিক পরিবর্তন দরকার, গুণগত মান উন্নয়ন করা প্রয়োজন। নতুন প্রজন্মকে যুক্ত করা প্রয়োজন। এটা সম্ভব হবে। যেই সমাজের জন্য আমরা যুদ্ধ করেছিলাম সেই সমাজ যেখানে, ন্যায়বিচার থাকবে, দুর্নীতি থাকবে না, অব্যবস্থাপনা থাকবে না। আওয়ামী লীগের পবিত্র দায়িত্ব সেই কাজগুলো করা। আমার বিশ্বাস সেই কাজটা একমাত্র আওয়ামী লীগই করতে পারে।

‘আওয়ামী লীগের তৃণমূলের ত্যাগী নেতাকর্মীরা এই দেশটাকে আনেক ভালোবাসে। আমরা সঠিক নেতৃত্ব দিতে পারলে সেই লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারব। আমি বিশ্বাস করি, আমাদের প্রধানমন্ত্রীও একই জিনিস চান। আমাদের দলের ভালো মানুষ, ত্যাগী ও নিবেদিতপ্রাণ নেতাকর্মীদের উৎসাহিত করে এগিয়ে নিয়ে আসতে হবে। সেটার অংশ হিসেবে আমিও প্রস্তুত আছি। যদি প্রয়াজন হয় তবে আমিও একাত্ম হবো।’

আওয়ামী লীগের ভবিষ্যত রাজনীতি নিয়ে নিজের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরে তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ বলেন, ‘প্রতিটি দলের ক্ষমতার আসল উৎস হচ্ছে সেই দেশের জনগণ। আর সরকার ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের চিন্তা থেকে সৃষ্ট কার্যক্রমের প্রতিপালন ঘটায়। মাঠ পর্যায় থেকে নেতৃত্বস্থানীয় পর্যায় পর্যন্ত নেতৃত্বকে ঠিকভাবে পরিচালনা করতে পারি, আমাদের নিবেদিতপ্রাণ মাঠকর্মীদের সম্পৃক্ত করে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যেতে পারি, নির্বাচন কোনো ব্যাপার হবে না। জনগণ তাহলে এমনিতেই ভোট দেবে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের এখন জনগণের সামনে তুলে ধরতে হবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে নিজেদের শক্ত অবস্থান, অনিয়মের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান; ভোটাধিকারের পক্ষে শক্ত অবস্থান; অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে অবস্থান, ন্যায়বিচারের পক্ষের অবস্থানের কথা। এটা একমাত্র সম্ভব হবে তৃণমূল পর্যায়ে দল সক্রিয় ও ঐক্যবদ্ধ থাকলে। সেই দিকেই আমাদের মনোযোগ দেওয়া উচিত।’

রাজনৈতিক সংস্কৃতি পরিবর্তনের সময় এসেছে জানিয়ে সোহেল তাজ বলেন, ‘এই সমস্যাগুলো আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতি। এই সংস্কৃতির পরিবর্তনের সময় এসেছে। এই সুযোগটা আওয়ামী লীগ নিতে পারে। এটা আমাদের সুযোগ। দলকে শক্তিশালী করে এই দুর্নীতি-অনিয়নের বিরুদ্ধে কথা বলতে হবে। যেটা এখন থেকে নয়, দুর্নীতির এই সংস্কৃতি সেই চারদলীয় জোট, এরশাদ ও জিয়াউর রহমানের সময় থেকেই শুরু হয়েছে।

‘ছাত্ররাজনীতিতে দুর্নীতি সেই সময় থেকেই শুরু হয়েছে। এই বিষয়গুলোকে চিহ্নিত করে কাজ করতে হবে। উন্নয়ন ব্যাপকভাবে হয়েছে। এখন বাকি কাজগুলো দলীয়ভাবে করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত মূল্যবোধগুলো তরুণ প্রজন্মকে বোঝাতে হবে। আওয়ামী লীগের জন্য এটা সুবর্ণ সুযোগ। কারণ এই চেতনার মাধ্যমে সমাজের ৯৯ শতাংশ সমস্যা সমাধান করতে সক্ষম হবো। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাভিত্তিক কর্মসূচি ও দেশের প্রতি ভালোবাসার আদর্শে উদ্বুদ্ধ করার জন্য কর্মসূচি নেওয়া ও সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। ভালো মানুষ তৈরি করতে পারলেই ভালো দেশ পাব। জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ত কর্মসূচি নিতে হবে।’

কবে রাজনীতির মাঠে সক্রিয়ভাবে দেখতে পারব জানতে চাইলে সোহেল তাজ বলেন, ‘আমি সচেতন নাগরিক হিসেবে মাঠে আছি, রাজনীতির বাইরে, ঠিক সেটা বলা যায় না। একজন রাজনৈতিক পরিবারের সদস্য হিসেবে আমি রাজনীতির ভেতরেই আছি। আমি সর্বদাই প্রস্তুত আছি।’

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.