The news is by your side.

যুদ্ধ নয়, ভালবাসায় মিশর দখল করেছিলেন হিকসসরা!

0 917

 

কোনও দেশকে দখল করার জন্য তা হলে গায়ের জোর লাগে না? দরকার হয় না সেনাবাহিনীর? শুধুই ভালবাসা দিয়ে, বৈবাহিক সম্পর্কের মাধ্যমেই দখল করে নেওয়া সম্ভব কোনও দেশ?

কথাটা এখনকার দিনে আমার, আপনার পক্ষে বিশ্বাস করাটা খুব কঠিন হতে পারে। কিন্তু হালের একটি গবেষণা বলছে, সেই ঘটনাই ঘটেছিল সাড়ে তিন হাজারেরও বেশি বছর আগে, মিশরে

আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন অফ ফিজিক্যাল অ্যানথ্রোপলজিস্টস-এর বার্ষিক বৈঠকে গত ২৯ মার্চ এই আবিষ্কারের কথা ঘোষণা করেছেন ব্রিটেনের বোর্নমাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জীব নৃতাত্ত্বিক ক্রিশ্চিনা স্ট্যানটিস। জানিয়েছেন, তাঁরা এমন কিছু প্রমাণ পেয়েছেন, যার ভিত্তিতে বলা যায়, মধ্যপ্রাচ্যের তেল এল-দাবা থেকে ওই সময় মূলত সুন্দরী মহিলারাই ঢুকে পড়েছিলেন মিশরের উত্তর কেমেতে। ওই মহিলারা সকলেই ছিলেন হিকসস জনগোষ্ঠীর। ওই সময় হিকসসরা এলাকায় সম্ভ্রান্ত, অভিজাত বলেই পরিচিত ছিলেন।

যুদ্ধ নয়, রক্তপাত নয়, শুধুই ভালবাসা...

হিকসসদের সেই সুন্দরী মহিলারা মিশরে ঢুকে পড়েছিলেন কোনও যুদ্ধ বা রক্তপাত ছাড়াই। না, তাঁদের কেউ বাধা দেননি। ভালবাসাকে কি কখনও কোনও বাধা দিয়ে দূরে হঠিয়ে দেওয়া যায়? হিকসস জনগোষ্ঠীর ওই সুন্দরী মহিলাদের সঙ্গে যে বিবাহ হয়েছিল মিশরের তখনকার রাজবংশের সদস্যদের। নীল নদের উপত্যকায় তেল এল-দাবা বলে জায়গাটিই ছিল হিকসস জনগোষ্ঠীর রাজধানী। পরে নিজেদের জনগোষ্ঠীর সুন্দরী মহিলাদের বৈবাহিক সম্পর্তের দৌলতে নীল নদের উপত্যকায় তেল এল-দাবার খাসমুলুকটি ছেড়ে দিয়েছিলেন হিকসসরা। হিকসস জনগোষ্ঠীর প্রায় পুরোটাই চলে যায় মিশরের উত্তর কেমেতে। মিশরের ‘ফারাও’ (সম্রাট) তখন আমেনেমহেত।

 

ঘটনাটা ঘটেছিল আজ থেকে ৩ হাজার ৫৪০ বছর কি ৩ হাজার ৬৫০ বছর আগে। পরে অবশ্য মিশরের ফারাওরা ওই হিকসস জনগোষ্ঠীর মানুষদের চিহ্নিত করেছিলেন ‘বহিরাগত’ বলে। শুধু তাই নয়, মিশরের ফারওরা পরে উত্তর কেমেতে থেকে হঠিয়ে দেন হিকসসদের। তেল এল-দাবাও দখল করে নেন।

কী ভাবে সেই ঘটনার কথা জানতে পারলেন গবেষকরা?

মূল গবেষক ক্রিশ্চিনা স্ট্যানটিস জানিয়েছেন, তেল এল-দাবায় মাটি খুঁড়ে হিকসস জনগোষ্ঠীর ৭১ জনের কঙ্কাল উদ্ধার করা হয়েছিল। যাঁদের অর্ধেকই মারা গিয়েছিলেন হিকসসদের মিশর দখলের কয়েক শতাব্দী আগে। বাকি অর্ধেকদের মৃত্যু হয়েছিল সেই সময়ে যখন হিকসসরা মিশর দখল করে নিয়েছেন। ওই কঙ্কালগুলির দাঁতে পাওয়া স্ট্রনসিয়াম মৌলের সন্ধান পেয়েই গবেষকরা এই সব জানতে পেরেছেন। দাঁত থেকে ওই স্ট্রনসিয়াম মৌলের কণা কঙ্কালগুলির হাড়ে পৌঁছেছিল। দেখা গিয়েছে, ওই সময়ের মিশরে হিকসস জনগোষ্ঠীর যে ক’টি কঙ্কালের হদিশ মিলেছে, তার প্রায় সবগুলিই মহিলাদের। পুরুষ নেই বললেই চলে। স্ট্যানটিসের কথায়, ”এটাই ইঙ্গিত দেয়, ওই সময় মিশরের রাজবংশের সদস্যদের সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্কে আবদ্ধ হয়েছিলেন বলেই উদ্ধার হওয়া হিকসস জনগোষ্ঠীর মানুষের কঙ্কালের মধ্যে মহিলাদের সংখ্যা এত বেশি, পুরুষের সংখ্যা এতটাই নগণ্য।”

স্ট্যানটিস জানিয়েছেন, কঙ্কালের দাঁত ও হাড়ে পাওয়া স্ট্রনসিয়াম মৌল থেকেই তাঁরা বোঝার চেষ্টা করছেন হিকসস জনগোষ্ঠীর মানুষ কোথা থেকে এসেছিলেন নীল নদের উপত্যকায় তেল এল-দাবায়?

 

 

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.