ভারতীয় গণতন্ত্র নিয়ে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে বিজেপির তোপের মুখে পড়েছিলেন রাহুল গান্ধী। লন্ডনে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক আলোচনা সভায় রাহুল বলেন, ‘কোনওদিন যদি ইউরোপ থেকে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা শেষ হয়ে যায় তাহলে সেটা গণতন্ত্রের পক্ষে বিরাট ধাক্কা। কিন্তু ভারতের গণতন্ত্র আকারে ইউরোপের থেকে কয়েক গুন বড়। অথচ সেখানে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়া নিয়েও কেউ কোনও কথা বলছে না।’
রাহুল বলেন, ‘ভারতে গণতন্ত্র ইতিমধ্যেই মৃত। তবে আমেরিকা এবং ব্রিটেনের মতো গণতন্ত্রপ্রেমী দেশগুলি এই নিয়ে কোনও ইচ্চবাচ্য করছে না। কারণ, এর পিছনে অর্থনীতি এবং বাণিজ্য যুক্ত রয়েছে।’ তিনি ইউরোপের তুলনা টেনে নিয়ে এসে বলেন, ‘আপনাদের কেমন লাগবে যদি আচমকা ইউরোপ থেকে গণতন্ত্র উধাও হয়ে যায়? সবাই হতবাক হয়ে যাবেন। ইউরোপের থেকে সাড়ে তিন গুণ বড় ভারতে ইতিমধ্যেই গণতন্ত্র মৃত। তবে এর প্রেক্ষিতে কোনও প্রতিক্রিয়া নেই কারও। ইউরোপে এমনটা হলে অনেকেই প্রতিক্রিয়া দিত।’
প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি আরও বলেন, ‘ভারতে গণতন্ত্র বিপন্ন হওয়া নিয়ে প্রতিক্রিয়া না আসার একটা কারণ রয়েছে। এর নেপথ্যে বাণিজ্য রয়েছে, অর্থ রয়েছে। ভারত বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্র। সংখ্যার নিরিখে আমেরিকা বা ইউরোপের থেকে অনেক বড় ভারত। ভারতের মানুষের কাছে এই গণতন্ত্রই সবথেকে বড় বিষয়। তবে তথাকথিত গণতন্ত্রের রক্ষাকর্তা – আমেরিকা এবং ইউরোপ চুপ রয়েছে। আমি তাতে অবাক। তারা এটা দেখতেই পারছেন না। তারা দেখতে পারছেন না যে গণতন্ত্রের একটি বড় অংশ অকেজো হয়ে পড়েছে। এটা একটা অনেক বড় সমস্যা।’
রাহুল গান্ধী আরও বলেন, ‘ভারত এবং বিশ্বের রাজনীতি নিয়ে আমায় কেমব্রিজে বলতে দেওয়া হয়েছিল। সেটা করতে পেরে আমার খুবই ভালো লেগেছে। কিন্তু ভারতে এখন এমন একটা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে সেখা একজন নেতা কেমব্রিজ বা হার্ভার্ড থেকে বলার জন্য ডাক পান কিন্তু নিজের দেশের কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে আলোচনায় অংশ নিতে পারেন না।
রাহুল বলেন, ‘যেখানেই দেশে বিরোধের সুর শোনা গিয়েছে, সেখানেই একটা অজুহাতও গড়ে উঠেছে। আমি যে যাত্রাটি করেছিলাম, সেটা মুক্তকণ্ঠকে উৎসাহিত করার জন্য ছিল. কারণ দেশে সর্বত্র কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে। এরই এক উদাহরণ হল বিবিসি।’
রাহুল গান্ধী বলেন, ‘বিবিসি যদি সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলা বন্ধ করে দেয়, তাহলে সব আমার আগের জায়গায় ফিরে যাবে। সব স্বাভাবিক হয়ে যাবে।’