‘বীরকন্যা প্রীতিলতা’ সিনেমার প্রিমিয়ার শো
মুক্তি পেলো তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অনুদানে নির্মিত ‘বীরকন্যা প্রীতিলতা’ চলচ্চিত্র।
বুধবার দুপুরে রাজধানীর পান্থপথে বসুন্ধরা বিপণন কেন্দ্রে স্টার সিনেপ্লেক্সে সিনেমাটির প্রিমিয়ার শো উদ্বোধন করেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের নারী পথিকৃত চট্টগ্রামের প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারকে নিয়ে কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেনের উপন্যাস অবলম্বনে এ সিনেমার পরিচালক প্রদীপ ঘোষ, প্রীতিলতা চরিত্রের অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশা, অভিনেতা মনোজ প্রামাণিক, শেখ শাকি প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন। পরিচালক প্রদীপ জানান, সিনেমাটি স্টার সিনেপ্লেক্সসহ সারাদেশে প্রথম ধাপে ১০টি হলে মুক্তি পাচ্ছে।
সম্প্রচারমন্ত্রী এ সময় সিনেমার শিল্পী-কলাকুশলীদের অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, ‘প্রীতিলতার চরিত্রে অভিনয় করেছে তিশা, তাকেও আমি অভিনন্দন জানাই, কারণ প্রীতিলতা একটি ঐতিহাসিক চরিত্র। প্রীতিলতা এ উপমহাদেশে আন্দোলন, সংগ্রাম, স্বাধীনতা সংগ্রামের এক অফুরন্ত প্রেরণার উৎস। পরিচালক প্রদীপ ঘোষকেও অভিনন্দন জানাই।’
ড. হাছান তার কৈশোরের স্মৃতিচারণ করে বলেন, ‘প্রীতিলতা এবং চট্টগ্রামের বিপ্লবী আন্দোলনের বইপত্রগুলো আমি কৈশোরে পড়েছি এবং প্রীতিলতা, সূর্যসেন ও তার বিপ্লবী আন্দোলনের সমস্ত সদস্য যারা ছিলেন এবং তাদের কর্মকান্ড সবকিছুর ওপর আমার এমন অনুরাগ জন্মে ছিল যে, সেই বয়সে স্বপ্ন দেখতাম- কিশোর বিপ্লবী হবো। সেই স্বপ্নের তাড়না থেকে পরবর্তীতে ছাত্র রাজনীতি এবং রাজনীতিতে যোগদান।’
মন্ত্রী বলেন, ‘প্রীতিলতা সূর্যসেনের বিপ্লবী আন্দোলনের একজন সদস্য ছিলেন। তার ওপর দায়িত্ব পড়েছিল চট্টগ্রামের ইউরোপীয়ান ক্লাবে আক্রমণ করা, যেখানে লেখা ছিল ‘ইন্ডিয়ানস এন্ড ডগস আর নট এলাউড’।
ইউরোপীয়ানরা সেই ক্লাবে যেতো এবং শুধু তাদের প্রবেশাধিকার ছিল, কুকুর এবং ভারতীয়দের কোনো প্রবেশাধিকার ছিল না। সেখানে আক্রমণ করার দায়িত্ব পড়েছিল প্রীতিলতার ওপর। প্রীতিলতা পুরুষের বেশে সেখানে আক্রমণ করে ফিরে আসার সময় আহত হন এবং তখন পটাসিয়াম সায়ানাইড খেয়ে আত্মহত্যা করেন। আত্মহত্যা করার কারণ ছিল এই যে, প্রীতিলতা যদি ধরা পড়তো তাহলে তাকে নির্যাতন করে তাদের বিপ্লবী আন্দোলনের সমস্ত পরিকল্পনা ব্রিটিশরা জেনে যেতো। সেটি যাতে না হয়, সে জন্য তিনি নিজের জীবনটাই সঁপে দিয়েছেন। তার কাপড়ের ভেতর ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের আন্দোলনের ৩২ পৃষ্ঠার জবানবন্দি পাওয়া গিয়েছিল। এই যে কাহিনী এটি কোন গল্প নয়, এটি সত্য কাহিনী, সত্য ঘটনা।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি এই সিনেমা তরুণ-তরুণীদের মধ্যে এবং বিশেষ করে যারা ইতিহাস জানতে চায়, যারা দেশকে ভালবাসতে চায়, ভালোবাসে, তাদের মধ্যে প্রেরণা যোগাবে। এই সিনেমা শুধু এখানে আগ্রহ তৈরি করেছে তা নয়, কিছু দিন আগে ভারতের ৩০ জন সাংবাদিক আমাদের দেশে এসেছিল তারা যখন শুনেছে, তারাও উন্মুখ হয়ে বসে আছে কখন ভারতে এই সিনেমাটা দেখাতে পারবে। আমি আপনাদের এই সিনেমাটা দেখার জন্য অনুরোধ জানাই।’