বাংলা নববর্ষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দকে বরণ করে নিতে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে রাজধানীর রমনার বটমূলে। রমনা বটমূলে বর্ষবরণের মূল আয়োজনের শেষ সময়ের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন ছায়ানটের শিল্পী-কলাকুশলীরা। যন্ত্রশিল্পীরা পরখ করে নিচ্ছেন তাদের বাদ্যযন্ত্রসমূহ।
রোববার ভোরে রমনা বটমূলে বরাবরের মতো ছায়ানটের আয়োজনে বৈশাখকে আমন্ত্রণ জানানো হবে।
‘ছায়ানট’ এর সাধারণ সম্পাদক লাইসা আহমদ লিসা বলেন, “আমরা শেষ সময়ের প্রস্তুতি নিয়ে কাজ করছি। আমাদের শিল্পী-কলাকুশলীরা এখন নববর্ষের অনুষ্ঠানে কাজগুলো ঠিক করে নিচ্ছেন।”
“এবারের নববর্ষের প্রথম প্রভাতে আমরা মানুষের জয়গান করব।”
শনিবার (১৩ এপ্রিল) রমনায় সরেজমিনে দেখা যায়, ছায়ানটের একঝাঁক শিল্পি ব্যস্ত গানের রিহার্সাল করতে। র্যাব এবং পুলিশের সদস্যরা ব্যস্ত সময় পার করছেন শতভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে। আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর মহড়া চলছে বটমূল প্রাঙ্গণে। সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে পুরো রমনা পার্কসহ আশপাশের এলাকাগুলো। গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরাও ব্যস্ত সময় পার করছেন আগামীকাল যেন জনসাধারণ নির্বিঘ্নে পহেলা বৈশাখ উদযাপন করতে পারেন।
রমনার বটমূল প্রাঙ্গনের সার্বিক পরিস্থিতি পরিদর্শন শেষে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান জানিয়েছেন, পহেলা বৈশাখকে কেন্দ্র করে আয়োজিত উৎসবে নিরাপত্তার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
বর্ষবরণ ঘিরে হামলার শঙ্কা নেই জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন,
তিনি বলেন, সারা দেশের মানুষ পহেলা বৈশাখ উদযাপনের জন্য উন্মুখ হয়ে আছে। রাজধানীতে বিভিন্ন সংগঠন বিভিন্ন আয়োজন করবে। যেসব জায়গায় প্রোগ্রাম হচ্ছে, ডিএমপির পক্ষ থেকে সেসব জায়গা পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। ডিবি, এসবিসহ গোয়েন্দা তৎপরতা জোরদার করা হয়েছে।
র্যাব মহাপরিচালক এম খুরশীদ হোসেন বলেছেন, ‘পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান ঘিরে পুলিশ, র্যাবসহ গোয়েন্দা বাহিনী সম্মিলিতভাবে কাজ করছে। দেশব্যাপী গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। টিএসসি, শাহবাগ, রমনা, হাতিরঝিলসহ যেসব জায়গায় জনসমাগম হবে, সেখানে র্যাবের পর্যাপ্ত সদস্য মোতায়েন থাকবে।‘
বৈশাখের অনুষ্ঠানে নারীদের হেনস্তা ঠেকানো ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সাধারণ মানুষকে হয়রানি, নারীদের উত্ত্যক্তের বিষয়ে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে থাকবে র্যাব। কারণ, প্রতিবারই জনসমাগমস্থলে নারীদের হেনস্তার ঘটনা ঘটে। এ জন্য ইভটিজিং রোধে র্যাবের মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বৈশাখের অনুষ্ঠান ঘিরে জঙ্গি হামলার কোনো আশঙ্কা নেই। তারপরও জঙ্গিদের যে কোনো তৎপরতা নস্যাৎ করে দিতে র্যাব প্রস্তুত রয়েছে। ভার্চুয়াল জগতে কেউ যেন কোনো গুজব রটাতে না পারে, সে জন্য র্যাবের সাইবার টিম সার্বক্ষণিক তৎপর রয়েছে।‘
পহেলা বৈশাখকে কেন্দ্র করে নগরীতে যাতায়াত পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ট্রাফিক নির্দেশনা দিয়েছে ডিএমপি। এ সংক্রান্ত নির্দেশনায় বলা হয়, পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে রোববার (১৪ এপ্রিল) ভোর ৫টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত রমনা বটমূল ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় কিছু রাস্তা বন্ধ বা রোড ডাইভারশন করে দেয়া হবে।
সম্ভাব্য ডাইভারশন পয়েন্টগুলো হলো: বাংলামোটর ক্রসিং, মিন্টোরোড ক্রসিং, অফিসার্স ক্লাব ক্রসিং, কাকরাইল চার্চ ক্রসিং, কদমফোয়ারা ক্রসিং, ইউবিএল ক্রসিং, দোয়েল চত্বর ক্রসিং, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টার ক্রসিং, জগন্নাথ হল ক্রসিং, ভাস্কর্য ক্রসিং, নীলক্ষেত ক্রসিং এবং কাঁটাবন ক্রসিং।