জান্নাতুল ফেরদৌস, নিউইয়র্ক
যত বই, তত প্রান- স্লোগান নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে শুরু হল ৩৪তম নিউইয়র্ক আন্তর্জাতিক বাংলা বইমেলা। মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে জ্যামাইকা পারফর্মিং আর্টস সেন্টারে আয়োজিত এই বইমেলায় বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রকাশক, লেখক, কবি ও সাহিত্যিকদের আগমন ঘটে ।
শুক্রবারের বৃষ্টিস্নাত বিকেলের প্রতিকুল আবহাওয়াও বাধ সাধতে পারেনি বইমেলায় । প্রতি বছরের মতো এবারও বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের অভিবাসী লেখক, প্রকাশক ও সংস্কৃতি অনুরাগী ব্যক্তির পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে মেলা প্রাঙ্গন। বইমেলার উদ্বোধন করেন বাংলা সাহিত্যের অন্যতম নন্দিত ও জনপ্রিয় লেখক সাদাত হোসাইন।
মেলার উদ্বিধন ঘোষণা করে তিনি আশা প্রকাশ করেন বাংলা ভাষা এবং সংস্কৃতিকে বিশ্ব দরবারে ছড়িয়ে দেওয়ার এই ভুমিকা অব্যাহত থাকবে।
তিন দশকের বেশি সময় ধরে এই বইমেলা শুধু বইয়ের প্রদর্শনী নয়, এটি বাংলা ভাষা, সংস্কৃতি ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার এক শক্তিশালী ধারক ও বাহক হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে। মেলার আহবায়ক রোকেয়া হায়দার জানান প্রবাসে বাঙালি পাঠক- লেখককে যুক্ত করাই বইমেলার সার্থকতা।
উদ্বোধনের পর পাঠকদের স্টল ঘুরে ঘুরে বাংলা বই সংগ্রহ করতে দেখা যায়। অনেক অভিভাবকরা সন্তানদেরকে বাংলা ভাষায় আগ্রহি করে তুলে তাদের কিনে দেন বাংলা বই।
নিউইয়র্ক আন্তর্জাতিক বই মেলা শুধু বইমেলা না, সংস্কৃতি আর আনন্দ উৎসবের মেলা। বই বিক্রির পাশাপাশি বৈচিত্র্যময় সব আয়োজনে জ্যামাইকার পারফর্মিং আর্টস সেন্টার যেন হয়ে ওঠে বিশ্ব বাঙালির মিলন উৎসবে।
জ্যামাইকা আর্টস সেন্টারের অডিটরিয়ামে শুরু হয় অনুষ্ঠানের দ্বিতিয় পর্ব যেখানে বই মেলার প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ‘ব্লকেড’ খ্যাত আমেরিকান বন্ধু ফিলিস টেইলর।
তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে বাংলা সংস্ক্রিতিকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরার এই প্রচেষ্টাকে সাধুবাদ জানান খ্যাতিমান লেখক , অর্থনীতিবিদ রেহমান সোবহান ।
মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন জিয়াউদ্দীন আহমেদ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন মুক্তিযুদ্ধকালীন ফিল্ড হাসপাতালের নেতৃত্বদানকারী বীর প্রতীক ক্যাপ্টেন (অব.) ডা. সিতারা বেগম , সাহিত্য সমালোচক, দার্শনিক ও কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গায়ত্রী চক্রবর্তী স্পিভাক ও অধ্যাপক রওনক জাহান।
এ বছর বইমেলায় ২৫টির বেশি স্বনামধন্য প্রকাশনা সংস্থা অংশগ্রহণ করছে। ২৬ মে পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে মেলা প্রাঙ্গন।