The news is by your side.

ঘূর্ণিঝড় ‘হামুনে’ লণ্ডভণ্ড কক্সবাজার

ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ৪ লাখ ৭৬ হাজার ৫৪৯ বাসিন্দা

0 62

‘হামুন’র তাণ্ডবে পুরো কক্সবাজার লণ্ডভণ্ড হয়েছে। বাতাসের তীব্রতায় কক্সবাজার পৌরসভা, উপকূলীয় উপজেলা মহেশখালী, কুতুবদিয়া, উখিয়া, চকরিয়া, পেকুয়া, ঈদগাঁও ও টেকনাফসহ ৭১টি ইউনিয়নে ৩৭ হাজার ৮৫৪টি বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে বেশ কিছু বিধ্বস্ত ও আর কিছু আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ৪ লাখ ৭৬ হাজার ৫৪৯ বাসিন্দা। দেওয়াল চাপায় নিহত হয়েছেন তিনজন।

মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাতটা হতে বিচ্ছিন্ন হওয়া বিদ্যুৎ সরবরাহ সচল হয়েছে বুধবার রাত ১০টায়। বুধবার সারাদিন বিচ্ছিন্ন থাকা ইন্টারনেট ও মোবাইল নেট সংযোগ সন্ধ্যায় এলেও কোনো কাজ করা সম্ভব হয়নি। এতে এক প্রকার কার্যত অচল হয়ে পড়ছিল প্রশাসনিকসহ সব কার্যক্রম।

বুধবার সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

জেলা প্রশাসনের দেয়া তথ্য মতে, ঘূর্ণিঝড় হামুনের আঘাতে জেলার ৭১টি ইউনিয়ন ও কক্সবাজার ও মহেশখালী দুটি পৌরসভাসহ সব ইউনিয়নে ৩৭ হাজার ৮৫৪ পরিবারের ৪ লাখ ৭৬ হাজার ৫৪৯ জন বাসিন্দা ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়েছেন। ভেঙে পড়েছে পল্লী বিদ্যুতের ৩৫৪টি বৈদ্যতিক খুঁটি। বিকল হয়েছে ২৩টি ট্রান্সফরমার। ৪৯৬ স্থানে বৈদ্যুতিক তার ছিঁড়ে গেছে। ৮০০ স্থানে গাছ পড়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। সন্ধ্যায় পৌরসভার ১৫০ ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারে ১ বান করে ঢেউটিন ও নগদ ১ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড়ে নিহতদের পরিচয় কক্সবাজার শহরের পাহাড়তলী এলাকার আবদুল খালেক (৪২), মহেশখালীর উপজেলার বড়মহেশখালী ইউনিয়নের গোরস্তানপাড়ার হারাধন দে (৪৫) ও চকরিয়া উপজেলার বদরখালী গ্রামের আশকার আলী (৪৫)।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার রাত আটটা থেকে আজ বুধবার রাত ১০টা পর্যন্ত শহরের বিদ্যুৎ, টেলিযোগাযোগ ও ইন্টারনেট সেবা বন্ধ ছিল। বিদ্যুৎ না থাকায় শহর থেকে প্রকাশিত ২০টি দৈনিক পত্রিকার কোনোটিই প্রকাশিত হয়নি। আদালতে বিচারিক কার্যক্রমেও পড়েছে প্রভাব। বিদ্যুৎ না থাকায় পানি সংকট দেখা দিয়েছে শহর জুড়ে। তবে সকাল থেকে উপড়ে পড়া গাছ কেটে শহরের প্রধান সড়ক, সৈকত সড়ক ও কলাতলী সড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করা হয়।

স্থানীয়দের অভিযোগ, এবারে ঘূর্ণিঝড় নিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর এবং জেলা প্রশাসন উদাসিনতার পরিচয় দিয়েছে। যার ফলে জনসাধারণের নিরাপদে সরে আসার আগ্রাহ দেখা যায়নি। ফলে ক্ষতির পরিমাণ বেশি হয়েছে।

জেলা প্রশাসন কার্যালয় এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী রানা বলেন, শতবর্ষী বট গাছ পড়ে আমার কম্পিউটার, ফটোস্ট্যাট মেশিনসহ ২০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। সতর্কতা সংকেত জানলে এই ক্ষতি থেকে কিছুটা রক্ষা পাওয়া যেত।

জেলা প্রশাসক বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় হামুন মঙ্গলবার মধ্যরাতের দিকে আঘাত হানবে বলা হয়েছিল। কিন্তু রাত সাড়ে সাতটার দিকে প্রবল গতিবেগে ঘূর্ণিঝড়টি শহরে আঘাত হানতে শুরু করে। মাত্র দুই ঘণ্টার তাণ্ডবে পুরো শহর লন্ডভন্ড হয়ে যায়। ঘূর্ণিঝড়ে এ পর্যন্ত তিনজনের মৃত্যু হয়েছে।’

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) কক্সবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল গণি বলেন, ‘বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের অভ্যন্তরে বেশ কিছু গাছপালা ও বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়েছে। শহরের বিভিন্ন সড়কে বিদ্যুতের ট্রান্সফরমার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব সংস্কার ও ঠিক করতে দুই-তিনদিন সময় লেগে যেতে পারে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সকাল থেকে বিদ্যুৎ বোর্ডের লোকজন মাঠে নেমেছে। কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ সচল হয়েছে, অন্য এলাকাগুলোতেও দ্রুত বিদ্যুতের লাইন ঠিক করার চেষ্টা চলছে।’

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.