The news is by your side.

গোটা পাকিস্তান ‘কিনতে’ পারে ভারতের টাটা!

0 65

২০০৮ সালের ২৬ নভেম্বর। ভয়াবহ জঙ্গি হামলায় কেঁপে উঠেছিল মুম্বই। ২৬/১১ হামলার মূলচক্রী ছিলেন জঙ্গিগোষ্ঠী লস্কর-ই-তইবার প্রতিষ্ঠাতা হাফিজ মহম্মদ সইদ। আর সেই কারণেই হামলার নেপথ্যে পাকিস্তানের হাত ছিল বলে দাবি করেছিল ভারত। যদিও পাকিস্তান তা স্বীকার করেনি।

ভারতের বাণিজ্যনগরীর যে জায়গাগুলিতে জঙ্গিরা হামলা চালিয়েছিল তার মধ্যে অন্যতম ছিল তাজ হোটেল। জঙ্গি হানায় ক্ষতবিক্ষত সেই বিলাসবহুল হোটেলের স্মৃতি এখনও বহু মানুষের মনে তাজা।

সেই তাজ হোটেলের মূল গোষ্ঠী, অর্থাৎ টাটারা চাইলে বর্তমানে পুরো পাকিস্তান দেশটাকেই কিনে নিতে পারে। না, টাটা গোষ্ঠী সে কথা ঘোষণা করেনি। কিন্তু হিসাব বলছে, টাটা গোষ্ঠীর মোট সম্পত্তির পরিমাণ ভারতের প্রতিবেশী দেশের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন (জিডিপি)-কে টপকে গিয়েছে।

বহু দিন ধরেই আর্থিক সঙ্কটের মুখে পড়েছে পাকিস্তান। তা থেকে বেরিয়ে আসার অনেক চেষ্টা করেও বিশেষ সুবিধা করতে পারেনি ভারতের প্রতিবেশী।

তার মধ্যেই সেই দেশের সরকার উল্টেছে। ক্ষমতা গিয়েছে তদারকি সরকারের হাতে। নতুন সরকার গড়ার জন্য নির্বাচন হয়েছে। তার ফল ঘোষণাও হয়েছে। বহু টালবাহানার পর ঘোষিত হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর নাম।

পাক সরকারের সেই দোলাচলের কারণেই পাকিস্তানের অর্থনৈতিক কাঠামো ধীরে ধীরে পতনের মুখ দেখছে বলে মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ।

আবার অনেকের মতে পাকিস্তানে অর্থনৈতির সঙ্কটের জন্য অনেকাংশেই দায়ী চিন। তাঁরা মনে করছেন, ইসলামাবাদকে বিগত কিছু সময় ধরে ‘পুতুলের মতো নাচিয়েছে’ বেজিং। আর সেই কারণেই আর্থিক সঙ্কটের মুখোমুখি এসে দাঁড়িয়েছে পাকিস্তান।

বর্তমানে পাকিস্তানের জিডিপি ৩৪ হাজার কোটি ডলার। অন্য দিকে, ভারতের অন্যতম ব্যবসায়ী গোষ্ঠী টাটার মোট সম্পত্তির পরিমাণ ৩৭ হাজার কোটি ডলার। অর্থাৎ চাইলে, অনায়াসে পাকিস্তানকে ‘কিনে’ নিতে পারে টাটারা।

ভারতের জিডিপি ৩.১৮ লক্ষ কোটি ডলার। পাকিস্তানের জিডিপির থেকে প্রায় ১২ গুণ বেশি। ভারত তো দূরের কথা, উত্তরপ্রদেশের জিডিপিও পাকিস্তানের জিডিপির কাছাকাছি পৌঁছে দিয়েছে। উত্তরপ্রদেশের জিডিপি বর্তমানে ৩০ হাজার কোটি ডলার।

পাকিস্তানে অর্থনৈতিক সঙ্কটের কথা এখন আর কারও অজানা নয়। দেশটি দীর্ঘ সময় ধরে অর্থনৈতিক টানাপড়েনে জর্জরিত। ইসলামাবাদের মাথায় চেপেছে ঋণের পাহাড়প্রমাণ বোঝা।

ইসলামাবাদের একটি চিন্তন শিবিরের সাম্প্রতিক বিশ্লেষণ, পাকিস্তানের অর্থনীতিতে ‘মরার উপর খাঁড়ার ঘা’ ফেলেছে সে দেশের ঋণ পরিস্থিতি। যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে খোদ আন্তর্জাতিক অর্থভান্ডার (আইএমএফ)।

পাকিস্তানের ঋণের বোঝার কারণে ইতিমধ্যেই সে দেশের শেয়ার বাজারে বিরূপ প্রভাব পড়েছে।

বিভিন্ন সমীক্ষার হিসাব বলছে, ২০১১ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে পাকিস্তানের মাথাপিছু ঋণ ৩৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

এই সময়ের মধ্যে, পাকিস্তানের মাথাপিছু জিডিপি হ্রাস পেয়েছে ৬ শতাংশ। পাকিস্তানে ঋণ এবং আয় বৃদ্ধির হারের মধ্যে বৈষম্যের কারণেও পাকিস্তান অর্থনীতির হাল বেহাল বলে মত বিশেষজ্ঞদের।

২০১১ সালে পাকিস্তানে এক জন শিশু মাথায় ৭০ হাজার পাকিস্তানি মুদ্রার ঋণ নিয়ে জন্ম নিত। ২০২৩ সালে সেই পরিমাণ ৩ লক্ষের বেশি।

বিভিন্ন প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১১ সাল থেকে, পাকিস্তানের বাহ্যিক ঋণ প্রায় দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। অভ্যন্তরীণ ঋণ বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ছ’গুণ।

পাকিস্তানে বিদেশি মুদ্রার ভান্ডারও তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কে পড়ে রয়েছে যৎসামান্য বিদেশি মুদ্রা। এই পরিমাণ বিদেশি মুদ্রা দিয়ে এক মাসের আমদানিও ঠিক মতো করা সম্ভব নয় বলে সূত্রের খবর।

বিদেশি মুদ্রার খরচে লাগাম টানতে পাকিস্তান তাই আমদানি প্রায় বন্ধ করে দিয়েছে। যার প্রভাব গিয়ে পড়েছে দেশের বাজারে।

গত কয়েক মাসে পাকিস্তানে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছিল জিনিসপত্রের মূল্য। তার মধ্যেই সরকারের টালমাটাল অবস্থা দেখছে সারা দেশ।

 

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.