The news is by your side.

ক্ষমা চাইলেন একরামুল, ক্ষমা করলেন ওবায়দুল কাদের

0 180

 

৫ ডিসেম্বর নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন। সম্মেলনকে ঘিরে জেলায় আওয়ামী লীগের রাজনীতির পালে ঐক্যের হাওয়া বইছে। বিবাদের পরিবর্তে মিলেমিশে চলার নীতি এখন সবার মধ্যে।

আর এই সুযোগে ফেসবুক লাইভে যিনি দলের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে রাজাকার পরিবারের সন্তান বলেছেন, তিনি প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইছেন। স্লোগান দিচ্ছেন ‘কাদের ভাই’, ‘কাদের ভাই’ বলে। আবার ওবায়দুল কাদেরও ক্ষমা করে দেওয়ার ঘোষণা যেমন দিয়েছেন, তেমনি বলেছেন, তিনি কোনো কিছুই ভুলে যাননি। তবু বড় হিসেবে ক্ষমা করে দিয়েছেন।

একরামুল করিম চৌধুরীকে দল থেকে বহিষ্কার ও তাঁর সব অপকর্মের বিচারের দাবিতে গত বছরের ২২ জানুয়ারি সন্ধ্যা থেকে কোম্পানীগঞ্জের মুজিব চত্বরে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছিলে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। একই দাবিতে জেলার দ্বীপ উপজেলা হাতিয়া, কবিরহাট, সদরসহ বিভিন্ন উপজেলায় প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করা হয়। প্রতিটি কর্মসূচিতেই দলের শীর্ষ নেতাকে নিয়ে অশোভন মন্তব্য করার ঘটনায় অভিযুক্ত নোয়াখালী-৫ আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ একরামুল করিম চৌধুরীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়েছিল।

জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির একাধিক সদস্য বলেন, শাস্তির প্রশ্ন যদি আসে, তাহলে একরামুল করিম চৌধুরী শাস্তি পেয়েছেন। তিনি যে শাস্তি পেয়েছেন, তা সাম্প্রতিক সময়ে নোয়াখালী আওয়ামী লীগের কেউ পাননি। টানা ১৭ বছরের সাধারণ সম্পাদককে বাদ দিয়ে গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটি গঠন একটি বড় শাস্তি। এ ছাড়া সর্বশেষ গত ২৯ জানুয়ারি আহ্বায়ক কমিটির সদস্যপদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে কেন্দ্রে চূড়ান্ত বহিষ্কারের সুপারিশ পাঠানোর প্রস্তাব গ্রহণ করাও আরেকটি শাস্তি।

 

ক্ষমা চেয়েছেন একরামুল করিম

২৩ নভেম্বর কবিরহাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নোয়াখালী-৪ আসনের (সদর ও সুবর্ণচর) সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরী। তাঁর গ্রামের বাড়ি কবিরহাট উপজেলায়। ওই সম্মেলনে ভার্চ্যুয়ালি প্রধান অতিথি হিসেবে যুক্ত হন ওবায়দুল কাদের। বক্তব্য দেওয়ার সময় তিনি বলেন, ‘আমি ওবায়দুল কাদের ভাইকে ফোন করে বলেছি, আমি আপনার কাছে ক্ষমা চাই। উনি আমাকে বললেন, ঠিক আছে। কাজ করো। সমসাময়িক কারণে আমাদের কিছুটা ভুল–বোঝাবুঝি হতে পারে। আমরা পরিবারের সদস্যরা ঠিক করেছি, আমরা যে কয়দিন বাঁচব, ওবায়দুল কাদেরের পেছনে থেকে রাজনীতি করব। একটা কথা বলি, আমার কোনো কথা কাদের ভাইয়ের বিরুদ্ধে গেলে আমি প্রকাশ্যে কবিরহাট উপজেলার মানুষের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি।’

 

ক্ষমা করলেন ওবায়দুল কাদের

শুক্রবার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে ভার্চ্যুয়ালি বক্তব্য দেওয়ার সময় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমি একরামকে ক্ষমা করে দিয়েছি। ভুলিনি। ক্ষমা মহত্ত্বের লক্ষণ। আমি বড় হয়েছি, বড় গাছে বড় আঘাত। সেটা সহ্য করার ক্ষমতা আল্লাহ আমাকে দিয়েছেন। আমি অনেক কষ্ট পেয়েছি। এখানকার (কোম্পানীগঞ্জের) সংকটের সময় এমনও দিন গেছে, আমি ঘর থেকে বের হইনি। লজ্জায় নেত্রীর সঙ্গে দেখা করিনি। কারও বিরুদ্ধে একটা কথা বলিনি। কারও অভিযোগের একটা জবাবও দিইনি। চুপ করে ছিলাম। কিছুই বলিনি। আমি শুধু একটা কথা বলব, আমি ক্ষমা করে দিয়েছি। কিন্তু যে মানুষ কোম্পানীগঞ্জে আতঙ্কে ছিল, যে ব্যবসায়ীরা অতিষ্ঠ হয়ে আমাকে বারবার ফোন করেছেন, তাদের কাছে আমি ক্ষমা চাই। কোম্পানীগঞ্জবাসীর কাছে আমি ক্ষমা চাই। আমি প্রতিনিধি, আমি কিছু করতে পারিনি। আমি বলব, আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দেরও জনগণের কাছে ওই সব দিনের যে দুর্ভোগ, যে আতঙ্ক, যে যন্ত্রণা সে জন্য ক্ষমা চাওয়া উচিত। আমি তো রাজনীতি করি মানুষের জন্য।’

Leave A Reply

Your email address will not be published.