The news is by your side.

কক্সবাজার হোটেল মোটেল জোনে ৩০০ কোটি টাকার সরকারি  জমি ভূমিদস্যুদের দখলে

0 269

 

কক্সবাজার অফিস

সৌন্দর্য্যের জন্য বিখ্যাত । বিশ্বের দীর্ঘতম অবিচ্ছিন্ন প্রাকৃতিক বালুময় সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার , কিন্তু দিনের পর দিন অবৈধভাবে দখলের কারণে সৌন্দর্য্য হারাচ্ছে সমুদ্র এ নৈসর্গিক  সৈকত ।

হোটেল মোটেল জোনের প্রায় ৩০০ কোটি টাকার সরকারি খাস জমি ভূমিদস্যুদের দখলেই রয়েছে।  সমুদ্র সৈকতের লাগোয়া সরকারি জমিতে এভাবে  দখল করে গড়ে তুলেছে একেকটা বিশাল সাম্রাজ্য।

সৈকতে পাশে অবৈধভাবে গড়ে তুলেন ড্রাগন মার্কেট লাবনি পয়েন্টে ছাতা মার্কেট, সুগন্ধা পয়েন্টের সী-ইন মার্কেট, হার্ডি রেস্তোরাঁ, তরঙ্গ রেস্তোরাঁ, চিয়ার্স সহ অসংখ্য স্থাপনা।

সময়ের প্রয়োজনে ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের হাত করে বিএনপি জামায়াত  দখলদারিত্বকে টেকসই করেছেন দিনেদিনে। তাই বিভিন্ন সময় এই অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে গিয়ে উল্টো বাঁধার শিকার হয় প্রশাসন।

সমুদ্রসৈকতে ২০১৬ সালের দিকে প্রায় শতকোটি টাকার মূল্যের সরকারি খাস জমি দখল করে প্রভাবশালী একটি মহল নির্মাণ করা অবৈধ ভাবে ড্রাগন মার্কেট। উক্ত মার্কেট নির্মাণ শতাধিক দোকানঘর ভাগবাটোয়ারা করে প্রভাবশালী একটি  সিন্ডিকেট হাতিয়ে নিয়েছে কোটি কোটি টাকা। অবৈধ দখলদারদের মধ্যে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতাকর্মী এবং সরকারি কর্মচারী ছিল বলে জানা যায়। যদিও এখন উক্ত ভাগবাটোয়ারা করা মার্কেটের মালিকগন বর্তমানে উক্ত দোকানঘর গুলো বিক্রি করে টাকা হাতিয়ে নিয়ে নিরাপদে চলে গেছে বলে বর্তমানের দোকান মালিকগন জানান।

সৈকতের গুরুত্বপূর্ণ এলাকা সুগন্ধা পয়েন্টে খাস খতিয়ানের প্রায় ৪০ শতক জমি দখল করে প্রভাবশালী এই সিন্ডিকেট উক্ত মার্কেট নির্মাণ করে। স্থানীয় ভূমি অফিস শুরুতে নির্মাণকাজ বন্ধ করার জন্য লোকদেখানো অভিযান চালিয়েছিল। পরে তারা নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে প্রত্যক্ষদশীর্রা জানান।

সূত্র জানায়, এই মার্কেট নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে কোনো অনুমোদন নেওয়া হয়নি। সৈকতের সী—ইন পয়েন্টে একাধিক ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, সরকারি এই জমি দখলে নেতৃত্ব দিয়েছেন স্থানীয় বিএনপি নেতা ও ডিভাইন

ইকো রিসোর্ট নামে একটি প্রতিষ্ঠানের উদ্যোক্তা মোয়াজ্জেম হোসাইন শাওন। দখল করা জমিতে টিনের ছাউনি দিয়ে গড়ে তোলা দুটি আধাপাকা বিশাল স্থাপনায় তৈরি হয়েছে শতাধিক দোকানঘর। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এই মার্কেট নির্মাণে জড়িত ছিলেন শহর ও জেলা আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী কয়েক ব্যক্তি। দুটি স্থাপনায় চার সারিতে তৈরি মার্কেটে দখলদাররা প্রতিটি দোকান বিক্রি করছে ৪০ থেকে ৫০ লাখ টাকায়। অভিযোগ রয়েছে, ভূমি অফিসের কর্মকর্তা—কর্মচারীরা গোপনে দোকানের ভাগ পেয়েছিল।

স্থানীয় লোকজন জানান, মার্কেট নির্মাণে সরকারি কোনো অনুমোদন না থাকলেও জমির ভুয়া কাগজপত্র দাখিল করে বিদ্যুৎ সংযোগ নেওয়া হয়েছে শুরু থেকে। এ ব্যাপারে উক্ত মার্কেট নির্মাণে জড়িত থাকা পৌর বিএনপির এক নেতা জানিয়েছেন, দলীয় পরিচয়ে নয়, একান্ত ব্যক্তিগতভাবে কয়েকজন অংশীদারের সঙ্গে তিনি এই মার্কেট নির্মাণকাজে জড়িত ছিলেন, বর্তমানে তার অংশের দোকান বিক্রি করে দিয়েছেন বলে জানান। এই জমি সরকারি নয় দাবি করেন তিনি। তবে এই মার্কেট নির্মাণে কোনো অনুমোদন রয়েছে কি—না, তা জানাতে পারেননি তিনি।

এই মার্কেট নির্মাণকাজে নেতৃত্বদানকারী বিএনপি নেতা মোয়াজ্জেম হোসাইন শাওনের বিরুদ্ধে রয়েছে সরকারি আরও জমি দখলের অভিযোগ। এই জমির দক্ষিণ পাশে সৈকত তীরে সরকারি আরও জমি দখল করে গড়ে তুলেছেন ডিভাইন ইকো রিসোর্ট নামে পর্যটন স্পট। কিন্ত ড্রাগন মার্কেটে ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী নেতারা জড়িত থাকায় প্রশাসন শুরু থেকে নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছিল বলে জানা যায়।

জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শাহিনুল হক মার্শাল বলেন, আইন সবার জন্য সমান হওয়া দরকার,খাস জমি উচ্ছেদের ক্ষেত্রে বৈষম্য করা হচ্ছে,হোটেল মোটেল জোনে রাস্তার উপর নির্মাণ করা ড্রাগন মার্কেট অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের ব্যাপারে জিরো ট্রলান্সে নীতি গ্রহণ করা কথা বলেন তিনি। এ ব্যাপারে মোয়াজ্জেম হোসাইন বলেন, মার্কেটটি অবৈধ নয় এটি তার বাবার সম্পত্তি। ১৯৮০ সালে দলিল আছে জমিটি এখন কিনা নয়। এটি ব্যক্তিমালিকানাধীন জমি, তাদের কাছে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র রয়েছে। মার্কেট নির্মাণে সরকারি অনুমোদন নেওয়া হয়েছে কি—না জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান।

সদর উপজেলা ভূমি অফিস সূত্রে জানা যায়,জমিটি ১৯৮০ সালে জমিটি ব্যক্তি মালিকানাধীন হওয়ার সম্ভাবনা নেই। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়,কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে উচ্ছেদ অভিযান হচ্ছেনা কখনো হবেনা, মহামান্য হাইকোর্টের আদেশ বাস্তবায়নের সমুদ্র সৈকত এলাকায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের ধারাবাহিক অংশ হিসেবে সমস্ত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে সরকারি সম্পদ উদ্ধার ও রক্ষা করা হবে। এ বিষয়ে উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমোডর নুরুল আবছার বলেন, নিয়মের বাহিরে এক বিন্দুও কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.