তুরস্কে প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ানের বিরোধী কুর্দিরা আশঙ্কা করছে, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তার জয়ের ফলে দেশটিতে জাতীয়তাবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে। তাদের বিরুদ্ধে বিগত বছরগুলোর চলমান দমন-পীড়ন আরও তীব্র হবে। সোমবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দ্বিতীয় দফা ভোটের আগে কুর্দিদের এই আশঙ্কার বিষয়টি উঠে এলো।
তুরস্কের মোট জনসংখ্যার এক-পঞ্চমাংশ কুর্দিরা। এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তারা আশা করছিল এরদোয়ানের ২০ বছরের ক্ষমতার ইতি ঘটবে। এই শাসনামলের শুরুতে তিনি কুর্দিদের সমর্থন পেয়েছিলেন। কিন্তু পরে তাদের ওপর দমন অভিযান শুরু করেন।
দ্বিতীয় দফা ভোটের আগের এগিয়ে রয়েছে তুর্কি প্রেসিডেন্ট। প্রথম ধাপের ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বি কেমাল কিলিচদারোগলুর চেয়ে ভালো ব্যবধানে এগিয়ে ছিলেন। তার প্রতি সমর্থন জানিয়েছিল কুর্দিপন্থি দল এইচডিপি।
অনেক কুর্দি ভোটার মনে করছেন, দ্বিতীয় দফা ভোটে জিততে এরদোয়ান নিজের জাতীয়তাবাদী কণ্ঠসর আরও জোরদার করবেন।
ইতোমধ্যে প্রথম ধাপের ভোটে তৃতীয় হওয়া প্রার্থী সিনান ওগান তুর্কি প্রেসিডেন্টকে সমর্থনের ঘোষণা দিয়েছেন।
১৪ মে অনুষ্ঠিত পার্লামেন্ট নির্বাচনে এইচডিপি দিয়ারবাকির এলাকায় ৬১ শতাংশ ভোট পেয়েছে। এরদোয়ানের একেপি পেয়েছে ২৩ শতাংশ। দেশজুড়ে এইচডিপির ভোটের পরিমাণ ৮ দশমিক ৯ শতাংশ। বৃহস্পতিবার কিলিচদারোগলুর নাম উল্লেখ না করে তার প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছে।
ক্ষমতার শুরুর দিকে এরদোয়ান কুর্দিদের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অধিকার বাড়িয়েছিলেন। তুরস্ক, ইরান, সিরিয়া ও ইরাকে বসবাসরত কুর্দি জনগোষ্ঠীর কোনও নির্দিষ্ট দেশ নেই। তিনি কুর্দি ভাষা ব্যবহারের ওপর বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করেন এবং কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি (পিকেকে)-এর সঙ্গে একটি শান্তি প্রক্রিয়ার দেখভাল করেন। ১৯৮৪ সালে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রাম শুরু করেছিল পিকেকে। তুরস্ক ও দেশটির পশ্চিমা মিত্ররা গোষ্ঠীটিকে সন্ত্রাসী হিসেবে বিবেচনা করে।
কিন্তু ২০১৫ সালে অস্ত্রবিরতি চুক্তি ভেঙে পড়লে এরদোয়ান নীতি পাল্টান। এইচডিপির হাজারো কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। দলটির অনেক আইনপ্রণেতা ও মেয়রকে উৎখাত করে জেলে পাঠানো হয়।
এইচডিপির সমর্থন পাওয়া কিলিচদারোগলুর বিরুদ্ধে এরদোয়ান বারবার সন্ত্রাসের পক্ষ নেওয়ার অভিযোগ করেছেন। দলটি জঙ্গিবাদের সঙ্গে সম্পর্ক অস্বীকার করে আসছে। সমালোচনা করেছেন তার প্রতিদ্বন্দ্বীও।
এরদোয়ানের অবস্থানের কারণে কট্টরপন্থী জাতীয়তাবাদী সিনান ওগানের সমর্থন পেয়েছে। ওগান বলেছেন, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অবিরত লড়াইয়ের কারণে তিনি এই সমর্থন দিয়েছেন।