The news is by your side.

একশ কোটি কবি / কোন যৌনউদ্দীপক সুন্দরীর প্রেমে পড়বেন না

0 241

 

 নির্মলেন্দু গুণ

 

কোন যৌনউদ্দীপক সুন্দরীর প্রেমে পড়বেন না।

প্রেম ও কামের রড়শিতে গেঁথে সে আপনাকে তার একান্ত আপন উপগ্রহে পরিণত করবে।

আপনি অসহায় পৃথিবীর মতো তাঁর কক্ষপথে ঘুরতে-ঘুরতে ক্লান্ত হয়ে পড়বেন।

 

তখন আপনি প্রথমে গোপনে,

পরে একসময় প্রকাশ্যেই তাঁকে নিয়ে

কবিতা লিখতে শুরু করবেন।

কবিতার নেশা পেয়ে বসবে আপনাকে।

 

“আর কত দূরে নিয়ে যাবে মোরে, হে সুন্দরী–” বলে আপনি যতো চিৎকারই করেন না কেন, আপনার কোনো আর্তনাদই তাঁর কর্ণকুহরে পৌঁছাবে না।

 

আপনি দুঃখ করে বলবেন,  “আমার কথা কি শুনতে পাওনা তুমি?  কেন তবে মিছে

আমাকে এমন মরীচিকার  পিছে ছোটালে জীবনভর? আমি তো শুধু তোমাকেই,

শুধু তোমাকেই ভালোবাসিয়াছি, প্রিয়তমা।’

 

মুচকি হেসে তখন আপনার প্রিয়তমাটি বলবে– “জানি বন্ধু জানি, তোমার আছে তো হাতখানি।”

 

আপনি খুশি হয়ে বলবেন, “তবে দাও,

তোমার হাতখানি আমার হাতে দাও। তোমার হাতের দোলায় আমাকে দোলাও।”

 

সে বলবে, “হ্যাঁ, দোলাচ্ছি তো। দোলাচ্ছি বলেই তো তোমার কাব্যসাধনা আজ পূর্ণ হয়েছে–

এবার তুমি তোমার আপন কক্ষপথ খুঁজে নাও, আমার রয়েছে কাজ। আমি আসি।

আরও বহু কবি রয়েছেন আমার প্রতীক্ষায়।”

 

“না, আমি আর কোনো ভিন্ন কক্ষপথ সৃষ্টি করবো না। আমি এই বটবৃক্ষতলে তোমার জন্য ধ্যানে বসলাম।”

 

আপনার কথার উত্তরে ঐ রমণী বলবে– “আমাকে আমার কর্তব্য সাধিতে দাও।

তুমি কবি হয়ে গ্যাছো, –তুমি যাও।

পৃথিবীর একশ কোটি পুরুষকে কবি বানাবার পরই আমার ছুটি।

পৃথিবীতে কবির সংখ্যা কমে   গেলে ধ্বংস হয়ে যাবে এই মানবসভ্যতা। এটা জানো?

তাই আমার ঈশ্বর এই কঠিন দায়িত্ব দিয়ে আমাকে মর্ত্যধামে পাঠিয়েছেন।

আমি ইন্দ্রের সভার প্রিয় নর্তকী ছিলাম।”

 

কান্নাজড়িত কন্ঠে তখন আপনি  বলবেন- “এই বুঝি আমার প্রেমের পুরস্কার?

আমি কবি হতে চাই না। আমি ফিরে পেতে চাই আমার অকবিত্বের সেই মুক্ত-পৃথিবী।

অথবা তোমাকে, হে সুন্দরীতমা।” এবার আপনার কথার আর কোনো উত্তর আসবে না। উড়ন্ত মেঘের আড়াল থেকে শুধু ভেসে আসবে বক্ষচেরা বজ্রের বিদ্যুত।

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.