The news is by your side.

উপজেলা পরিষদ নির্বাচন : কড়া বার্তার পরও মাঠে এমপি-মন্ত্রীর স্বজন

0 22

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে ১৬০ উপজেলায় ২ হাজার ৫৫ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তবে দলীয়ভাবে এ নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিলেও প্রথম ধাপের মতো দ্বিতীয় ধাপেও অনেক স্থানে বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায় থেকে মন্ত্রী-এমপির স্বজনকে প্রার্থী না হতে কড়া বার্তা দেওয়া হলেও তারা তা মানছেন না। রোববার ছিল দ্বিতীয় পর্বে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন। আর ভোট হবে আগামী ২১ মে।

গতকাল বেশ কিছু উপজেলায় আওয়ামী লীগ এমপির স্বজন প্রার্থী হয়েছেন বলে খবর মিলেছে। উপজেলা ভোটে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নিবন্ধিত দলগুলোর তরফ থেকে দলীয় প্রতীক বরাদ্দের নিয়ম থাকলেও আওয়ামী লীগ থেকে কাউকেই মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে না। অন্যদিকে বিএনপি-জামায়াত এই নির্বাচন বর্জন এবং দলীয় নেতারা প্রার্থী হলে বহিষ্কারের হুমকি দিয়েছে। তবু দ্বিতীয় ধাপে অনেক বিএনপি নেতা প্রার্থী হয়েছেন। ১৬০ উপজেলার মধ্যে ২১টিতে তাদের প্রার্থী রয়েছে। যদিও বেশির ভাগই উপজেলা শাখার সাবেক সভাপতি।

প্রথম ধাপে ১৫০ উপজেলায় বিএনপির ৩৫ ও জামায়াতের ২৫ প্রার্থী চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। এর মধ্যে জামায়াত নেতারা কেন্দ্রের নির্দেশ মেনে মনোনয়ন প্রত্যাহারের ঘোষণা দিলেও বিএনপি নেতাদের অনেকেই নির্বাচনী লড়াইয়ে থাকছেন। আজ প্রথম ধাপের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিএনপির কুমিল্লা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া বলেন, আমরা এ সরকার ও ইসির অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ নেব না– এটি দলীয় সিদ্ধান্ত। এ নির্দেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর মধ্যে গতকাল ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের অভিযোগে পটুয়াখালী সদর থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনির রহমান ও কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলমগীর তাজ জনিকে দলের প্রাথমিক সদস্যপদসহ সব পর্যায় থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

এদিকে গতকাল দ্বিতীয় ধাপে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় শেষ হওয়ার পর নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ জানান, ১৬০ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ৭৩০ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৭৬৩ জন ও মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫৬২ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

উপজেলা নির্বাচন প্রভাবমুক্ত রাখতে দলীয় প্রতীক বরাদ্দ না দেওয়ার পাশাপাশি মন্ত্রী ও এমপির স্বজনকে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। গতকাল দলীয় সভাপতির ধানমন্ডির কার্যালয়ে সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এ ব্যাপারে আবারও কড়া বার্তা দিয়েছেন। এ জন্য দলের সাংগঠনিক সম্পাদকদের সারাদেশ থেকে তথ্য নিয়ে তালিকা তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। গতকাল রোববার তালিকা তৈরির কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। আগামী ৮ মে প্রথম ধাপে দেশের ১৫০ উপজেলায় নির্বাচন হবে।

মাঠ পর্যায় থেকে ইসিতে আসা তথ্য অনুযায়ী, এ ধাপে কুমিল্লা আদর্শ সদর ও চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলায় চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে একজন করে মনোনয়ন দাখিল করেছেন। অর্থাৎ একক প্রার্থী থাকায় এ দুই উপজেলায় নির্বাচনের প্রয়োজন পড়ছে না। এ ছাড়া চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান, নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান, মৌলভীবাজার সদরে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও রাঙামাটির রাজস্থলীতে ভাইস চেয়ারম্যান পদে একজন করে প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। অর্থাৎ তিন পদে মোট ১১ জন একক প্রার্থী রয়েছেন। বাছাইয়ে মনোনয়ন বৈধ হলে তারা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হবেন। প্রথম ধাপে ১২ জন একক প্রার্থী ছিলেন।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের গতকাল জানিয়েছেন, মন্ত্রী-সংসদ সদস্যদের নিকটাত্মীয়দের সরে যেতেই হবে। যারা প্রার্থী হতে চান (পরবর্তী পর্বে), তাদের নির্বাচনী প্রক্রিয়া থেকে দূরে থাকতে বলা হয়েছে। প্রথম পর্বে যারা প্রার্থী হয়েছেন, তাদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে।

নির্দেশনা দেওয়া হলেও অনেকে এখনও নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াননি– সে বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রত্যাহারের তারিখ শেষ হোক; তার আগে এ বিষয়ে কীভাবে বলা যাবে! সংসদ সদস্য পরিবারের সদস্য হলেই উপজেলা নির্বাচন করা যাবে না, বিষয়টি কতটুকু যুক্তিযুক্ত– এ প্রশ্নে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এটি ঠিক নয়, আপনি সব যুক্তি উত্থাপন করতে পারেন; তবে আপনার যুক্তি জনগণ কী চোখে দেখছে? দেশের ভোটাররা কী চোখে দেখছে? আওয়ামী লীগের এ সিদ্ধান্তে তৃণমূল পর্যন্ত মানুষ কিন্তু খুশি হয়েছে। দলের তৃণমূলের কর্মীরা তাদের মত-প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। তার কারণ হচ্ছে, একটা দলে আমি এমপি, আমি মন্ত্রী, আবার আমার ভাই, ছেলে– এরাও পদ নিয়ে যাবে সব, তাহলে তৃণমূলের কর্মীরা কী করবেন? তাদের পদে যাওয়ার কোনো অধিকার নেই? সে সুযোগ করে দেওয়ার জন্যই এই সিদ্ধান্ত।’

 

 

 

 

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.