The news is by your side.

ইসরায়েল:জয়ের পথে নেতানিয়াহু

0 704

 

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এবং তাঁর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বেনি গান্টজ উভয়েই নির্বাচনে নিজেদের বিজয়ী দাবি করছেন। আজ বুধবার পাওয়া প্রাথমিক ফলাফল অনুযায়ী এগিয়ে আছেন অভিজ্ঞ ডানপন্থী নেতা বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। এবার বিজয়ী হলে টানা পাঁচবারের মতো ক্ষমতাসীন হয়ে রেকর্ড গড়বেন তিনি।
ইসরায়েলি আইনসভা নেসেটের ওয়েবসাইট ও ইসরায়েলি চ্যানেল ১২-এর তথ্যানুযায়ী, এ পর্যন্ত প্রায় ৯৫ শতাংশ ভোট গণনা করে আংশিক ফলাফল পাওয়া গেছে। ফলাফলে দেখা গেছে, নেতানিয়াহুর লিকুদ পার্টি গেন্টজের ব্লু অ্যান্ড হোয়াইট পার্টির মতোই পার্লামেন্টে ৩৫টি আসন পেয়েছে। ১২০ আসনবিশিষ্ট নেসেটে এখনো কেউ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে না পারলেও বিচ্ছিন্ন ডানপন্থীদের সঙ্গে জোট সরকার গঠন করে বিজয়ের পথেই হাঁটছেন নেতানিয়াহু।

৬৯ বছর বয়সী নেতানিয়াহু লিকুদের সদর দপ্তরে দাঁড়িয়ে উল্লসিত সমর্থকদের উদ্দেশে বলেন, ‘আজ বিপুল বিজয়ের রাত’। আনুষ্ঠানিক ফলাফল ঘোষণার আগে এখনো ‘দীর্ঘ রাত এবং দিনের প্রতীক্ষা’ বাকি আছে বলে সমর্থকদের সতর্ক করে দেন তিনি। উপস্থিত জনতা নেতানিয়াহুকে “জাদুকর” বলে রব তোলে। বিজয়ী হলে ইসরায়েলের ৭১ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার রেকর্ড গড়বেন তিনি।

নেতানিয়াহুর প্রতিদ্বন্দ্বী গেন্টজও (৫৯) নিজেকে বিজয়ী দাবি করেছেন। লিকুদ পার্টির চেয়ে তাঁর দল বেশি আসনে জয়ী হয়েছে বলে জানান তিনি। সাবেক সামরিক সেনাবাহিনীর প্রধান গেন্টজ তাঁর প্রথম নির্বাচন শেষে বলেন, ‘আমরাই বিজয়ী। জাতির প্রতি নেতানিয়াহুর যে অবদান, এ জন্য তাঁকে ধন্যবাদ জানাতে চাই।’

রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা অবশ্য এখনই থিতু হতে চাইছেন না। তাঁদের মতে, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসার এখনো অনেক দেরি। তবে ছোট দলগুলোর সঙ্গে জোট সরকার গঠন করায় নেতানিয়াহুর লিকুদ পার্টির ভাগ্য বদলে যেতে পারে বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা। ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের প্রবীণ বিশ্লেষক অফার জ্যালজবার্গের মতে, ব্লু অ্যান্ড হোয়াইট পার্টি হয়তো এই একটি দিক থেকেই নির্বাচনে পিছিয়ে পড়বে। তবে শেষ পর্যন্ত কী হয়, তা জানতে অপেক্ষার কোনো বিকল্প নেই।

নেতানিয়াহুর তুরুপের তাস ট্রাম্পের সঙ্গে সুসম্পর্ক

নির্বাচনী প্রচারণার সময় প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলো দুর্নীতি, ধর্মান্ধতা আর নিরাপত্তার বিষয়ে শিথিলতা নিয়ে পরস্পরকে দোষারোপ করে। নেতানিয়াহু তখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের ওপর বিশেষ জোর দেন। ট্রাম্প ২০১৭ সালে জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে ইসরায়েলিদের মনে শান্তির সুবাতাস বইয়ে দেন। গত বছরের মে মাসে আমেরিকার অ্যাম্বাসি সরিয়ে পবিত্র এই শহরে নিয়ে আসার নির্দেশ দেন তিনি।

নির্বাচনের দুই সপ্তাহ আগে নেতানিয়াহুর সঙ্গে এক ইশতেহারে স্বাক্ষর করেন ট্রাম্প। হোয়াইট হাউসে স্বাক্ষরিত সে ঘোষণায় ১৯৬৭ সালে মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধে সিরিয়ার কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া গোলান হাইটসের ওপর ইসরায়েলের আধিপত্যকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতকে কেন্দ্র করে ফিলিস্তিনিদের উৎখাতের হুমকি দিয়েছেন নেতানিয়াহু।

অন্যদিকে প্রচারণার সময় গান্টজ বলেন, তাঁর নেতৃত্বাধীন সরকার শান্তির ওপর বেশি জোর দেবে। কিন্তু ফিলিস্তিনকে নিয়ে কী করবেন সে ব্যাপারে বিশেষ কোনো আশার বাণী তিনি শোনাননি।

ফিলিস্তিনের প্রধান সমঝোতাকারী সায়েব এরেকাত বলেন, ‘স্থিতাবস্থা টিকিয়ে রাখতেই ভোট দিয়েছে ইসরায়েলিরা। শান্তিকে না আর দখলদারিকে হ্যাঁ বলার সিদ্ধান্তই নিয়েছে তারা।’ ইসরায়েল-ফিলিস্তিন শান্তি আলোচনা ২০১৪ সালে ভেস্তে যায়।

নির্বাচনের আসন্ন ফলাফলে ধারণা করা হচ্ছে, ছোট দলগুলো ক্ষমতাসীন হয়ে উঠবে। স্বল্প পরিচিত রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরাই নীতিনির্ধারকের ভূমিকা পালন করবেন। ইসরায়েলের ২১ শতাংশ আরব সংখ্যালঘুর ভোট নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। ২০১৮ সালে ইসরায়েলের জাতিরাষ্ট্র আইনের ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন তাঁরা। এ আইনের প্রতি সমর্থন জানান নেতানিয়াহু। শেষ পর্যন্ত কী ঘটবে তা জানতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে সারা বিশ্ব।

 

 

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.