যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনে ক্লাস্টার গোলাবারুদ পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে । ১০০টির বেশি দেশ কর্তৃক নিষিদ্ধ এই অস্ত্র মোতায়েন নিয়ে নানা উদ্বেগ থাকা সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্র এ সিদ্ধান্ত নিলো।
১৫৫ মিলিমিটারের হাউইৎজার কামান থেকে ছোড়া ক্লাস্টার গোলাবারুদসহ অস্ত্রের একটি প্যাকেজ খুব শিগগিরই ঘোষণা করা হবে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেনসহ প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী গত সপ্তাহে শীর্ষ জাতীয় নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের বৈঠকে এসব অস্ত্র পাঠানোর সুপারিশ করেন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে আবিষ্কৃত ক্লাস্টার এমন এক ধরণের বোমা, যা ছোড়ার পর মাঝ আকাশ থেকে শত শত ছোট ছোট বোমা বেরিয়ে মাটিতে পড়তে থাকে। এগুলো বিস্তৃত অঞ্চলজুড়ে ধ্বংসযজ্ঞ চালাতে সক্ষম। এগুলো মাটিতে পড়ে না ফাটলেও বহুদিন পর্যন্ত সক্রিয় থাকে এবং পরবর্তীতে ঝুঁকি সৃষ্টি করে।
১২০টির বেশি দেশ ‘ক্লাস্টার মিউনিশন’ বিষয়ক ২০০৮ সালের জাতিসংঘ কনভেনশনে স্বাক্ষর করেছে। ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যের মতো মার্কিন মিত্ররাও এই অস্ত্রের ব্যবহার নিষিদ্ধ করে।
তবে ইউক্রেন, রাশিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেনি। যদিও ২০০৯ সালের একটি আইনে ১ শতাংশের বেশি ক্লাস্টার গোলাবারুদ রপ্তানি নিষিদ্ধ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তবে বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে বিবেচিত ক্ষেত্রে এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা বাতিল করতে পারেন।
এর আগে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) ইউক্রেন ও রাশিয়ার ক্লাস্টার অস্ত্র ব্যবহারের সমালোচনা করে।
মানবাধিকার সংস্থাটি বলেছে, রাশিয়া ব্যাপকভাবে ক্লাস্টার গোলাবারুদ ব্যবহার করেছে, যার ফলে অনেক বেসামরিক লোক মারা গেছে এবং গুরুতর আহত হয়েছে। অন্যদিকে ২০২২ সালে তৎকালীন রাশিয়ান-অধিকৃত শহর ইজিয়ামে ইউক্রেনীয় ক্লাস্টার গোলাবারুদ রকেট হামলায় কমপক্ষে ৮ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং আরও ১৫ জন আহত হয়েছিল। কিন্তু ইউক্রেন হিউম্যান রাইটস ওয়াচকে বলেছে, তারা ওই সময় শহরের আশেপাশে বা এর আশেপাশে ক্লাস্টার গোলাবারুদ ব্যবহার করেনি।
এক মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, যুদ্ধক্ষেত্রের বর্তমান পরিস্থিতি ক্লাস্টার অস্ত্রকে ‘শতভাগ প্রয়োজনীয়’ করে তুলেছে। ক্লাস্টার গোলাবারুদ ইউক্রেনের জন্য উপকারী হবে।
মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইউক্রেনের জন্য নতুন করে মোট ৮০০ মিলিয়ন ডলার মূল্যের অস্ত্রের প্যাকেজের ঘোষণা আসতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে হাই মোবিলিটি আর্টিলারি রকেট সিস্টেম, ব্র্যাডলি ফাইটিং ভেহিকেল ও সাঁজোয়া সেনাদের বাহকের মতো স্থলযান।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার পূর্ণ মাত্রায় আগ্রাসন শুরুর পর এটি হবে ইউক্রেনে ৪২তম সহায়তা প্যাকেজ।