নিবন্ধন বাতিলের পরও জামায়াতে ইসলামী সভা-সমাবেশ চালিয়ে যাচ্ছে। বিষয়টি আপিল বিভাগের নজরে আনলে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেন, অপেক্ষা করুন, আদালতের হাত অনেক লম্বা। চিন্তাভাবনা করেই এ বিষয়ে আদেশ দেবো।
এদিকে, রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন বাতিলের পর জামায়াতের সভা-সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে করা আবেদনের শুনানিতে বারবার সময় নেওয়ায় উষ্মা প্রকাশ করেছেন প্রধান বিচারপতি।
জামায়াতের অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড জয়নুল আবেদীন তুহিনের উদ্দশ্যে প্রধান বিচারপতি বলেন, কেন বার বার সময় নিচ্ছেন। সময় নিয়ে কোর্টে আসেন না কেন। এখানে সময় নেবেন আর অন্য কোর্টে মামলা করবেন তা হতে পারে না। আমরা সবই সিসি ক্যামেরায় দেখতে পাই।
প্রধান বিচারপতি বলেন, আমরা শেষ বারের মতো সময় দিচ্ছি। এটা মনে রাখবেন আদালতের হাত অনেক লম্বা।
৬ নভেম্বর এই মামলা শুনানির জন্য দিন ধার্য করে দেন প্রধান বিচারপতির নের্তৃত্বাধীন আপিল বিভাগের চার বিচারপতির বেঞ্চ।
আবেদনের পক্ষে ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর অন্তবর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞার আবেদন করেন। তিনি বলেন, আদালতের রায়ে জামায়াতের নিবন্ধন অবৈধ ঘোষিত হয়েছে। সেই রায় বহাল আছে। কিন্তু রায় বহাল থাকার পরেও জামায়াত সভা-সমাবেশ করে যাচ্ছে। যা সুপ্রিম কোর্টের রায়ের লঙ্ঘন। এজন্য শুনানি না হওয়া পর্যন্ত সভা-সমাবেশ যাতে না করতে পারে সেজন্য নিষেধাজ্ঞা চাচ্ছি। এসময় তিনি পত্রিকার কিছু ছবি ও প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেন।
প্রধান বিচারপতি বলেন, আমরা এ বিষয়ে চিন্তাভাবনা করে আদেশ দেব।
জামায়াতের পক্ষে অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড জয়নুল আবেদীন তুহিন বলেন, প্রস্তুতির জন্য সময় দরকার। প্রধান বিচারপতি বলেন, কিসের প্রস্তুতি। যদি কেস না চালান তাহলে বলবেন তাহলে আমরা সেভাবে আদেশ দেবো।
প্রধান বিচারপতি বলেন, অবকাশের খোলার পর এই মামলাটি শুনবো।
প্রসঙ্গত, রাজনৈতিক দল হিসাবে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করেছেন হাইকোর্ট। বৃহত্তর বেঞ্চের দেওয়া ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে দলটি। সেই আবেদন আপিল বিভাগে বিচারাধীন। বিচারাধীন এই আপিলের নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত জামায়াতে ইসলামী যেন সভা-সমাবেশ, মিছিলসহ কোনো ধরনের রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করতে না পারে সেই বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে গত ৬ জুলাই আবেদন করা হয়।
আবেদনে বলা হয়েছে, জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল সংক্রান্ত হাইকোর্টের রায় এখন পর্যন্ত বহাল রয়েছে। রায় বহাল থাকাবস্থায় গত ১০ জুন জামায়াতে ইসলামী ঢাকায় সভা-সমাবেশ করেছে। উচ্চ আদালতের রায়ের পর দলটির এ ধরনের কর্মসূচি পালন বেআইনি। একইসঙ্গে উচ্চ আদালতের রায়ের লঙ্ঘন। কারণ রায়ে বলা হয়েছে, দল হিসাবে জামায়াতের নিবন্ধন সংবিধান ও গণ-প্রতিনিধিত্ব আদেশের পরিপন্থী। অতএব কোনভাবেই দলটি সভা-সমাবেশ করার অনুমতি পেতে পারে না। এছাড়া নিবন্ধন বাতিল হওয়ায় তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণে অযোগ্য। কিন্তু এরপরেও সভা-সমাবেশে দলটির নিবন্ধন দাবি করে বক্তব্য প্রদান আদালত অবমাননার শামিল।