The news is by your side.

আজ বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৭৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী

0 490

 

 

ছাত্রলীগের ৭৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ। গৌরব, ঐতিহ্য ও সংগ্রামের ৭৪তম বছরে পদার্পণ করলো ছাত্র-সংগঠনটি। ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হাত ধরেই প্রতিষ্ঠিত হয় সংগঠনটি। তার নেতৃত্বেই ঐ দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হলে আনুষ্ঠানিকভাবে এর যাত্রা শুরু হয়।

বিদ্যার সঙ্গে বিনয়, শিক্ষার সঙ্গে দীক্ষা, কর্মের সঙ্গে নিষ্ঠা, জীবনের সঙ্গে দেশপ্রেম এবং মানবীয় গুণাবলির সংমিশ্রণ ঘটিয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ অতিক্রম করেছে পথচলার ৭৩টি বছর। ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠা করেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সময়ের প্রয়োজন মেটাতেই সেখান থেকে এগিয়ে চলা সংগঠনের। জন্মলগ্ন থেকেই ভাষার অধিকার, শিক্ষার অধিকার, বাঙালির স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠা, দুঃশাসনের বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থান, সর্বোপরি স্বাধীনতা ও স্বাধিকার আন্দোলনের সামনে সারিতেই ছিল সংগঠনটি।

বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতা হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের মেধাবী ছাত্র বঙ্গবন্ধু বাংলা ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় রাজপথে ছিলেন সদা সোচ্চার। রাষ্ট্রভাষা হিসেবে উর্দু চাপিয়ে দেওয়ার প্রতিবাদে ধর্মঘটে তিনি ও কয়েকজন সহকর্মীসহ গ্রেফতার হয়েছিলেন। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে আন্দোলন জোরালো করার ক্ষেত্রে ছাত্রলীগের ভূমিকা ছিল প্রণিধানযোগ্য। ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।

১৯৬২ সালে তৎকালীন আইয়ুব খান সরকার কর্তৃক গঠিত শরিফ কমিশন পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর লক্ষ্য ও স্বার্থের অনুকূলে একটি গণবিরোধী শিক্ষানীতি প্রণয়ন করেছিল। সেই শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতৃত্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব প্রধান শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা গণআন্দোলন ও গণজাগরণ তৈরি করে। সেই বাষট্টির রক্তঝরা দিনগুলোতে রক্ত ঝরেছে অসংখ্য ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর। ১৯৬৬ সালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতা কর্মীরাই সারা বাংলার মানুষের কাছে বঙ্গবন্ধুর ঘোষিত ৬ দফা দাবির গুরুত্ব তুলে ধরেন। ১৯৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানেও রাজপথে বিনিদ্র প্রহরী হিসেবেই ছিল বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।

১৯৭০ এর নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বাধীন আওয়ামীলীগের নিরঙ্কুশ জয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭১ সালের ৩ মার্চ বঙ্গবন্ধু ছাত্রলীগের সমাবেশে বলেছিলেন, ‘দানবের সঙ্গে লড়াইয়ে যে কোনো পরিণতিকে মাথা পেতে বরণের জন্য আমরা প্রস্তুত। ২৩ বছর রক্ত দিয়ে এসেছি। প্রয়োজনবোধে বুকের রক্তগঙ্গা বইয়ে দেব। তবু সাক্ষাৎ মৃত্যুর মুখে দাঁড়িয়েও বাংলার শহীদদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করব না।’

স্বাধীনতার পর ১৯৭৫-পরবর্তী বঙ্গবন্ধুবিহীন বাংলাদেশের রাজনৈতিক ভাগ্যাকাশ যে কালো মেঘ গ্রাস করেছিল, সেই মেঘ সরাতে প্রত্যাশার সূর্য হাতে ১৯৮১ সালে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যাবর্তন। সেদিন প্রিয় নেত্রীর পাশে ভ্যানগার্ডের ভূমিকায় ছিল বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। সামরিক শাসনের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে ১৯৮৩ সালে শিক্ষা আন্দোলন ও সর্বদলীয় ছাত্র-ঐক্যের ১০ দফা তৈরিতে নেতৃত্ব দেয় বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। শিক্ষার অধিকার প্রসারে শামসুল হক ও অধ্যাপক কবীর চৌধুরীর কমিশনের রিপোর্ট তৈরিতে ছাত্র সমাজের পক্ষে জোরালো অবস্থান নেয় তারা। ১৯৮৮ সালে শেখ হাসিনার প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণে ভয়াবহ বন্যার ক্ষতি মোকাবেলায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে সংগঠনটি ১৯৯৮ সালের বন্যাসহ সব প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ একই কার্যক্রম নিয়ে বিপর্যস্ত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে।

১৯৯৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র বেতন বৃদ্ধির প্রতিবাদে আন্দোলন, ২০০২ সালে শামসুন্নাহার হলে ঢুকে ছাত্রীদের শারীরিকভাবে নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা করে দোষীদের বিচারের দাবিতে আন্দোলন, ২০০৭ সালে সেনাশাসিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে আটক শেখহাসিনাকে মুক্তির আন্দোলনসহ সব রকম দুর্যোগ মোকাবেলায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সব সময়ই ছিল সামনের কাতারে।

ইতিহাসের বাঁকে বাঁকে বিভিন্ন পর্যায়ে নেতৃত্ব দেওয়া সংগঠনের নেতাকর্মীরা পরে জাতীয় রাজনীতিতেও নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং এখনো দিয়ে যাচ্ছেন। বর্তমান জাতীয় রাজনীতির অনেক শীর্ষ নেতার রাজনীতিতে হাতেখড়ি হয়েছে ছাত্রলীগ থেকে। ছাত্রলীগ জন্মলগ্ন থেকে শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের কল্যাণে কাজ করছে। করোনা ভাইরাস মহামারিকালেও সাধারণ মানুষের পাশে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা দাঁড়িয়েছেন। তারা মৃতদেহ সত্কার করেছেন। হ্যান্ড স্যানিটাইজার, মাস্ক বিতরণসহ করোনাকালে সাধারণ মানুষকে সচেতন করার কাজ করেছে ছাত্রলীগ। কোথাও অক্সিজেন সিলিন্ডারের অভাব দেখা দিলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বিনা মূল্যে সেটি সরবরাহ করেছেন। বোরো মৌসুমে হাওরাঞ্চলে ধান কাটা শ্রমিকের অভাব দেখা দিলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ধান কেটে কৃষকের বাড়ি পৌঁছে দিয়েছেন।

 

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.