The news is by your side.

আইএমএফের ঋণ: শর্ত পূরণে ছাড় চাইবে বাংলাদেশ

0 55

 

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণ কর্মসূচির আওতায় আগামী জুন নাগাদ বৈদেশিক মুদ্রার নিট রিজার্ভ ও কর রাজস্বের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা সম্ভব হবে না। তাই ঋণের চতুর্থ কিস্তির জন্য জুনভিত্তিক দুই লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে আনতে ছাড় চাইবে শর্ত বাস্তবায়ন পর্যবেক্ষণে আসা আইএমএফ মিশনের কাছে বাংলাদেশ।

২৪ এপ্রিল ঢাকায় সফরে আসা আইএমএফের  ডেভেলপমেন্ট মাইক্রোইকোনমিক্স ডিভিশনের প্রধান ক্রিস পাপাগেওর্জিউর নেতৃত্বে প্রতিনিধি দল ইতোমধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক করেছে। আগামী ৮ মে পর্যন্ত তারা সরকারের বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করবে।

আইএমএফের ৪৭০ কোটি ডলারের প্রতিশ্রুত ঋণের তৃতীয় কিস্তি ছাড়ের আগে বর্তমান মিশন ঢাকায় অবস্থান করছিল। তৃতীয় কিস্তির অর্থ ছাড় হবে আগামী মাসে। এই কিস্তির জন্য  গত ডিসেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন শর্তের বাস্তবায়ন পর্যালোচনা করছে মিশন। আর চতুর্থ কিস্তির অর্থ ছাড়ের জন্য আগামী জুনভিত্তিক শর্ত পরিপালনের কথা রয়েছে।

গত ডিসেম্বর নাগাদ পরিপালনের জন্য মোটা দাগে সংশোধিত যেসব শর্ত দেওয়া  হয়েছিল, তার মধ্যে বৈদেশিক মুদ্রার নিট রিজার্ভ ছাড়া অন্য সব শর্ত পূরণ হয়েছে। রিজার্ভের ঘাটতিও খুব বেশি নয়। তাই ঋণের তৃতীয় কিস্তি পেতে কোনো সমস্যা হবে না বলে মনে করছে সরকার। তবে বর্তমান গতি-প্রবৃদ্ধি পর্যালোচনা করে সরকার মনে করছে, আগামী জুনভিত্তিক লক্ষ্যমাত্রার ক্ষেত্রে রিজার্ভ ও রাজস্বের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা প্রায় অসম্ভব। তাই আবারও এ দুই ক্ষেত্রে ছাড় চাইবে বাংলাদেশ।

প্রাথমিকভাবে আইএমএফের তৃতীয় কিস্তি ছাড়ের জন্য গত ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে নিট বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২৬ দশমিক ৮১ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়। কিন্তু  বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে রিজার্ভে বড় ধরনের উন্নতি না হওয়ায় বাংলাদেশের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে তা কমিয়ে ১৭ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলারে নামিয়ে আনা হয়। তারপরও বাংলাদেশ এ লক্ষ্য থেকে ৫৮ মিলিয়ন ডলার পিছিয়ে ছিল।

দ্বিতীয় কিস্তি ছাড়ের জন্য গত জুন পর্যন্ত রিজার্ভের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৩ দশমিক ৭৪ বিলিয়ন ডলার। তখনও লক্ষ্য পূরণ সম্ভব হয়নি। তখন দেশে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ১৯ দশমিক ৫৬ বিলিয়ন। তখন রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রাও পূরণ হয়নি। এরপর দ্বিতীয় কিস্তির আগে আসা মিশনকে এসব লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়ার পেছনে যৌক্তিকতা যথাযথ বোঝাতে সমর্থ হওয়ায় দ্বিতীয় কিস্তি পায় বাংলাদেশ।

চতুর্থ কিস্তির জন্য আগামী জুন নাগাদ নিট রিজার্ভ ২০ দশমিক ১০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করতে হবে। তবে বর্তমানে দেশে রয়েছে প্রায় ১৫ বিলিয়ন ডলার। এদিকে গত ডিসেম্বর পর্যন্ত করের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা ১ লাখ ৪৩ হাজার ৬৪০ কোটি টাকার বিপরীতে ১ লাখ ৬২ হাজার ১৬৪ কোটি টাকা আদায় করেছে সরকার। তবে অর্থবছর শেষে আগামী জুন পর্যন্ত ৩ লাখ ৯৪ হাজার ৫৩০ কোটি টাকা কর রাজস্ব আহরণ করতে হবে। এর প্রায় পুরোটাই আহরণ করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। চলতি অর্থবছরের ৯ মাসের রাজস্ব আহরণ প্রবৃদ্ধি বিশ্লেষণ করে এনবিআর নিজেই জানিয়েছে, জুন শেষে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় অন্তত ১০ হাজার কোটি টাকা পিছিয়ে থাকতে পারে।

চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) এনবিআরের নিজস্ব রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ লাখ ৮১ হাজার ৭৪৫ কোটি টাকা। আদায় হয়েছে ২ লাখ ৫৯ হাজার ৮৮৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ নিজের লক্ষ্যমাত্রা থেকেই সংস্থাটি পিছিয়ে রয়েছে প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকা।

আইএমএফ গত বছরের ৩০ জানুয়ারি বাংলাদেশের জন্য ৪৭০ কোটি ডলার ঋণ প্রস্তাব অনুমোদন করে। ইতোমধ্যে দুই কিস্তিতে ১১৫ কোটি ৮২ লাখ ডলার ছাড় করেছে। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী মে মাস নাগাদ তৃতীয় কিস্তির ৬৮ কোটি ২০ লাখ ডলার ছাড় করা হতে পারে। শর্ত বাস্তবায়নসাপেক্ষে সমপরিমাণ চতুর্থ কিস্তি ছাড় করার পরিকল্পনা রয়েছে আগামী নভেম্বর নাগাদ। ২০২৬ সাল পর্যন্ত সাড়ে তিন বছরে মোট সাত কিস্তিতে পুরো অর্থ দেওয়ার কথা। এ ঋণ কর্মসূচির আওতায় বাংলাদেশকে বেশকিছু শর্ত পরিপালন করতে হচ্ছে।

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.