অথর্নীতি ভেঙে পড়ায় দারিদ্র সীমার নিচে বসবাস করছে আফগানিস্তানের জনগণ। ফলে দেশটিতে অনেকের পক্ষে খাবার কিনে খাওয়ার সক্ষমতা নেই। এরই মধ্যে শুরু হয়েছে পবিত্র রমজান মাস। ফলে এমন পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বিপাকে পড়েছে দেশটির নারীরা। অনেকের খাবার প্লেটে জুটছে শুধু চা আর রুটি।
২০২১ সালের আগস্টে তালেবান ক্ষমতা নেওয়ার পর দেশটিতে দৈনন্দিন ব্যয় আর খাবারের দাম আকাশচুম্বী হয়ে যায়। অধিকাংশ মানুষ কর্মক্ষম হলেও বেকার হয়ে পড়েছেন।
জাতিসংঘের তথ্যমতে, দেশটির ২ কোটি ৮০ লাখ মানুষ খাদ্য সহায়তার জন্য অন্যের ওপর নির্ভরশীল। তবে সেই সহায়তাও সীমিত। কারণ, বড় বড় আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো তালেবান সরকারের সঙ্গে কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে।
অর্থনৈতিক দুরবস্থার কারণে আফগান পরিবারগুলোর সুস্বাদু খাবার তৈরি করার সামর্থ্য নেই।
কাবুলের একটি কিন্ডারগার্টেনের প্রধান ও সাবেক নারী মানবাধিকার কর্মী শামসিয়া হাসানজাদা একটি গণমাধ্যমকে বলেন, তাদের ভাষ্য ‘আগে আমরা ইফতার ও সেহরি তৈরি করতাম একসঙ্গে এবং শুধু নিজেদের জন্য নয়। নিরাপত্তাকর্মী ও আমাদের আশপাশে বসবাসকারী লোকজনকে নিয়েও ইফতারের আয়োজন করা হতো। কিন্তু গ্রিন-টি ও শুকনো রুটি ছাড়া এখন আমাদের কিছুই নেই।
মোহাম্মদ নাঈম নামে কাবুলের এক বাসিন্দা বলেন, মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের পর থেকে দেশটি নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণ ছিল। কিন্তু অর্থনৈতিক সংকট আমাদের অশান্তির বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অভাবের কারণে কাপড় পর্যন্ত কিনতে পারছি না।
তিনি বলেন, আগে ইফতারে অনেক খাবারের আয়োজন থাকতো। সেহরিতেও থাকতো কয়েক ধরনের খাবার। কিন্তু এখন আমাদের কোনো খাবার নেই। বাজার থেকে মাংস কেনার সার্মথ্যও নেই। তালেবান ক্ষমতা গ্রহণের আগে মোহাম্মদ নাঈম তৎকালীন প্রশাসনের অধীনে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের গাড়িচালক ছিলেন।
২০ বছরের আফগান যুদ্ধের অবসান ঘটিয়ে ২০২১ সালের ৩১ আগস্ট দেশটি থেকে সেনা প্রত্যাহার সমাপ্তি ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র। এরপর রাজধানী কাবুল দখল করে নেয় তালেবান। তবে পরিস্থিতি শান্ত হলেও অর্থনৈতিক দুরবস্থা সেই মানুষের শান্তি কেড়ে নিয়েছে।