ক’দিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও ওয়ালে ওয়ালে ঘুরছে। যে ভিডিওতে প্রয়াত নায়ক সালমান শাহকে নিয়ে ফারুক বলছেন, ‘সালমান শাহ কি এমন? হাজারো সালমান শাহকে বিট করে দিয়েছে শাকিব।’ এমন মন্তব্যের কারণে সমালোচিতও হচ্ছেন অভিনেতা ও মাননীয় সাংসদ ফারুক। তবে গতকাল জানান বক্তব্যটি তার নয়।
তবে বক্তব্য তার নয় বলে মন্তব্য করলেও ভক্তরা সেটা মানতে চাইছেনা। বিষয়টি নিয়ে সালমান শাহর বিপরীতে অভিনয় করা শাবনূরের সঙ্গে কথা হয়।
শাবনূর বলেন, আসলে সালমান শাহকে তুলনা করে আমাদের জনপ্রিয় অভিনেতা ফারুক সাহেব কি বলেছেন সেটা আমার চোখে পড়েনি। যদি শাকিব খানের সঙ্গে তুলনা করে থাকেন। সেটা তার ব্যপার। তবে আমি মনে করি সালমান শাহর চলে গেছেন। আমাদের মাঝে আর সে নেই। তাকে নিয়ে কারও সঙ্গে এখন তুলনা চলেনা। তেমন শাকিব খানও তার জায়গায় সফল। তাকেও কার সঙ্গে তুলনা করলে হবেনা। দুই জনই আমাদের চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় নায়ক। সালমান শাহর সময়ে সালমান শাহ শাকিবের সময়ে শাকিব।
ঢাকাই চলচ্চিত্রে অমর নায়ক সালমান শাহর আবির্ভাব এক ধ্রুবতারার মতো। সালমানের আগমনটা ছিল অনেকটা- এলাম, দেখলাম আর জয় করলাম।
মাত্র চার বছরের চলচ্চিত্র ক্যারিয়ারে যে কোনো চরিত্রে দারুণ অভিনয়শৈলী দেখিয়েছেন সালমান। তার অভিনয়গুণে স্থান করে নেন অগণিত দর্শক হৃদয়।
অভিনয় করেছেন ২৭টি সিনেমায়। যার প্রায় প্রতিটি ছবি সুপারহিট। দর্শক হুমড়ি খেয়ে পড়ত প্রেক্ষাগৃহে।
১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর এই অভিনেতার রহস্যজনক মৃত্যু হয়। সালমান শাহর বেশিরভাগ ছবির নায়িকা ছিলেন শাবনূর।
সালমান শাহর স্মৃতি নিয়ে কথা বলতেই কণ্ঠ ভারী হয়ে আসে তার নায়িকা শাবনূরের। স্মৃতিকাতর হয়ে পড়েন। শাবনূর বলেন, অভিনয় জীবনে অনেকে ছিলেন সহশিল্পী। কিন্তু কেউ কেউ ছিলেন সহশিল্পীর চেয়ে বেশি কিছু। সালমান শাহ তাদেরই একজন। যে শুধু সহশিল্পী নন, ছিলেন বন্ধু, সুহৃদ ও পরামর্শকসহ অনেক কিছু।
নিজের অভিনয় জীবনের শুরুর গল্পটা সামনে এনে ঢাকাই সিনেমার একসময়কার নাম্বার ওয়ান এই নায়িকা বলেন, অল্প বয়সে আমার চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু হয়েছিল। পরিচালক যেভাবে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন, সেভাবেই কাজ করে গেছি। কাজ ভালো বা মন্দ– কেমন হচ্ছে তা স্পষ্ট করে বলার মতো কাউকে পাশে পাইনি।
সালমান চোখ খুলে দিয়েছেন জানিয়ে শাবনূর বলেন, সালমানের সঙ্গে জুটি হয়ে কাজ শুরু করার পর থেকে ভালো-মন্দের বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে। একে অন্যের অভিনয় নিয়ে যেমন সমালোচনা করতাম, তেমনি অভিনয়ে নিজেকে ভেঙে আরও কতভাবে উপস্থাপন করা যায়, তা নিয়ে পরিকল্পনা করতাম আমরা।
‘এভাবেই মাত্র চার বছরে আমরা ১৪টি ছবিতে জুটি হয়েছি। কিন্তু স্বপ্নেও ভাবিনি এ জুটির ভাঙন ধরবে, একজন আরেকজনকে ছেড়ে পাড়ি দেবে না ফেরার দেশে। সালমানের এই চলে যাওয়া তাই কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। কারণ তার আরও বহু কিছু দেয়ার ছিল’-যোগে করেন শাবনূর।