The news is by your side.

লকডাউনে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখুন

0 446

 

 

যাঁদের রক্তচাপ ঊর্ধমুখী, লকডাউনের এই আবহে তাঁদের সমস্যা আর বেশি। এই লাইফস্টাইল ডিজিজকে নিয়ন্ত্রণে না রাখতে পারলে আচমকা বিপদে পড়ার ঝুঁকি থাকে। বিশেষ করে গৃহবন্দি মানুষজনের মর্নিংওয়াক সমেত হাঁটাচলা সীমিত হয়ে গিয়েছে। এই নিঃশব্দ ঘাতকের তেমন কোনও নির্দিষ্ট উপসর্গ নেই যা দেখে মানুষজন সচেতন হবেন। আর সেই কারণেই আচমকা স্ট্রোক বা হার্ট অ্যাটাকের সম্মুখীন হতে হয়। তাই রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিয়ম করে বাড়িতে থেকে হাঁটাহাঁটি ও হালকা এক্সারসাইজ করতেই হবে। তার সঙ্গে খাবারের ব্যাপারেও খেয়াল রাখা উচিত।

ব্লাড প্রেশার বাড়লে বাড়তি নুন খাওয়ার ব্যাপারে নিয়ম মেনে চলার কথা বলা হয়। অনেকে বাড়তি সতর্কতা হিসেবে খাবারের তালিকা থেকে নুন ছেটে ফেলেন। এর ফলে সমস্যা বাড়ে। সম্প্রতি আইসিইউ-তে থাকা রোগীদের অনেকেরই অসুস্থতার প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে হাইপোন্যাট্রিমিয়া। অর্থাৎ শরীরে সোডিয়ামের পরিমাণ ভীষণ ভাবে কমে গিয়ে সল্ট বা লবণের পরিমাণের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলার মতো সমস্যা দেখা যাচ্ছে, বললেন দীপঙ্করবাবু। গরমের দেশে একেবারে নুন খাওয়া বন্ধ করলে এই সমস্যায় ঝুঁকি বাড়ে।

হাই ব্লাডপ্রেশার এমনই এক রোগ যে কোনও লক্ষ্মণ ছাড়াই একে একে বিকল করে দিতে পারে হার্ট, ব্রেন, কিডনি, চোখ সমেত শরীরের নানান অঙ্গপ্রত্যঙ্গ। তাই কোনও শারীরিক অসুবিধা না থাকলেও বছরে এক বার হেলথ চেকআপের সময় ব্লাড প্রেশার মেপে নেওয়া দরকার। আমাদের দেশের প্রতি পাঁচ জন প্রাপ্তবয়স্কর মধ্যে এক জন উচ্চ রক্তচাপের শিকার, অথচ অনেকেই তা জানেন না। হাইপারটেনশন থাকলে করোনার ঝুঁকি এড়াতে বাড়ির বাইরে যাবেন না, আর হাতে সাবান দেওয়ার মতো অভ্যাস মেনে চলতেই হবে। ঘাড়ে বা মাথায় ব্যথা বা মাথা ঘোরার মতো অসুবিধা হলে ফোনে ডাক্তারের পরামর্শ নিন। নিতান্ত দরকার না হলে হাসপাতাল বা ক্লিনিকে যাওয়ার দরকার নেই। যাঁরা দীর্ঘ দিন উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন তাঁরা অবশ্যই নিয়ম করে হার্ট, কিডনি, চোখ পরীক্ষা করাবেন বলে পরামর্শ দিলেন দীপঙ্কর সরকার।

রক্তচাপ বেড়ে গেলে মাথা, ঘাড় ব্যথা, মাথা ঘোরা, মেজাজ হারিয়ে বা কখনও দুর্বল বোধ করলে। সামান্য পরিশ্রমে শ্বাসের কষ্ট ও বুক ধড়ফড় করে। আবার আপনা থেকে তা ঠিকও হয়ে যায়। বেশির ভাগ মানুষই এই ধরনের উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসকের কাছে যেতে চান না। লাগাতার এই ভাবে অনিয়ন্ত্রিত রক্তচাপ নিয়ে জীবনযাপন করলে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ একে একে বিকল হতে শুরু করে। শহর-গ্রাম নির্বিশেষে বহু মানুষই রক্তচাপের সমস্যায় ভুগছেন। আচমকা মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ, অর্থাৎ স্ট্রোকের জন্যও দায়ী রক্তচাপ। এ ছাড়া লাগাতার হাই ব্লাড প্রেশারের কারণে কিডনি বিকল ও চোখের রেটিনা নষ্ট হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। এ ছাড়া কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত হলে এদের ফুসফুসের অবস্থা মারাত্মক হওয়ার ঝুঁকি ভীষণ ভাবে বেড়ে যায়। লকডাউনে বাড়িতে থাকার সময় অনেকে প্রেশার কমে গিয়েছে ভেবে ওষুধ খাওয়া বন্ধ করে দেবেন না।

 

  • বাড়িতে থাকলেও নিয়ম করে ৪৫ মিনিট থেকে এক ঘণ্টা ঘাম ঝরানোর হাঁটাচলা আর ব্রিদিং এক্সারসাইজ এবং প্রাণায়াম করতে হবে। স্নান-খাওয়ার মতোই এক্সারসাইজকে জীবনের অংশ করে নিলে সুস্থ থাকবেন।
  • সোডিয়াম রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয়। আবার সোডিয়ামের অভাবেও আচমকা স্ট্রোক হতে পারে। প্রতি দিন সব মিলিয়ে ৫ গ্রামের বেশি নুন খাওয়া উচিত নয়। চানাচুর, চিপস সমেত প্রিজারভেটিভ দেওয়া খাবারে নুন থাকে, তাই এ সব খাবেন না।
  • পাকা কলা, কমলালেবু, বিনস, মসুর ডাল, পালং শাক, রাঙালু ইত্যাদিতে প্রচুর পটাশিয়াম থাকে। নিয়মিত এ সব খেলে প্রেশার নিয়ন্ত্রণে থাকবে। তবে ওষুধ খেতে ভুললে চলবে না।
  • লকডাউনের কারণে বাড়িতে থাকতে হচ্ছে বলে অনেকেরই ঘুমের সমস্যা হচ্ছে। ছাদে, বারান্দায় বা ঘরের মধ্যে হাঁটাচলা করলে ঘুমনোর সমস্যা হবে না। ঘুমোতে যাওয়ার আগে প্রাণায়াম করলে ভাল ঘুম হবে। উত্তেজক সিনেমা বা সিরিয়াল দেখলে ঘুমের অসুবিধা হতে পারে। তাই রাতে এ সব না দেখাই ভাল।

 

 

 

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.