The news is by your side.

রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে  স্থানান্তর প্রক্রিয়া বন্ধের আহ্বান এইচআরডব্লিউ-অ্যামনেস্টির

0 577

 

কক্সবাজারের শিবির থেকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ভাসানচরে স্থানান্তর বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) ও  অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ।

বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সরকারের প্রতি এই মানবাধিকার সংস্থা দূটির পক্ষ থেকে  এ আহ্বান জানানো হয়। দুটি সংগঠনই তাদের ওয়েবসাইটে এ-সংক্রান্ত বিবৃতি প্রকাশ করেছে।

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ ৪ হাজার রোহিঙ্গাকে চট্টগ্রাম বন্দর নগরী থেকে ভাসানচর পাঠানোর প্রস্তুতি নিয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের উচিৎ হবে, শিগগিরই রোহিঙ্গাদের প্রত্যন্ত ভাসানচরে স্থানান্তর প্রক্রিয়া বন্ধ করা।

এর আগে ২ ডিসেম্বর ভাসানচরে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের স্থানান্তরকরণ প্রসঙ্গে জাতিসংঘ এক বিবৃতি জানায়, বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক রোহিঙ্গা শরণার্থীদের কক্সবাজার থেকে বঙ্গোপসাগরে অবস্থিত ভাসানচরে প্রারম্ভিক স্থানান্তরের কাজ আগামী কিছুদিনের মধ্যে শুরু করার সম্ভাবনা বিষয়ক কিছু প্রতিবেদন সম্পর্কে জাতিসংঘ অবগত রয়েছে।

ওই স্থানান্তরের প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রমে, অথবা শরণার্থীদের শনাক্ত করার প্রক্রিয়ায় জাতিসংঘকে সম্পৃক্ত করা হয়নি। স্থানান্তরের সার্বিক কর্মকাণ্ড সম্পর্কে জাতিসংঘের কাছে পর্যাপ্ত তথ্য নেই।

এইচআরডব্লিউর এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক ব্র্যাড অ্যাডামস বলেছেন, মানবিক বিশেষজ্ঞদের সবুজ সংকেতের আগে কোনো রোহিঙ্গা শরণার্থীকে ভাসানচরে স্থানান্তর না করার বিষয়ে জাতিসংঘের কাছে দেওয়া প্রতিশ্রুতি থেকে বাংলাদেশ সরকার সক্রিয়ভাবে সরে যাচ্ছে। সরকার যদি দ্বীপটির বসবাসযোগ্যতা সম্পর্কে সত্যিই আত্মবিশ্বাসী হয়, তাহলে এ ব্যাপারে তাদের স্বচ্ছ হওয়া উচিত।

যেসব শরণার্থী ভাসানচরে স্বেচ্ছায় স্থানান্তরিত হতে চাইবেন উক্ত দ্বীপে তাদের শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা এবং জীবিকার নিশ্চয়তা এবং উক্ত দ্বীপ থেকে মূল ভূখণ্ডে চলাচলের স্বাধীনতাসহ সকল মৌলিক অধিকার, এবং মৌলিক সেবা সমূহ নিশ্চিত করতে জাতিসংঘ গুরুত্বারোপ করেছে। এটি ভাসানচরে একটি কার্যক্ষম ও নিরাপদ জনপদের ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে।

বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ভাসানচর প্রকল্পের ঘোষণার সময় থেকে এই পরিকল্পনা সম্পর্কে সম্যক ধারণা সৃষ্টির লক্ষ্যে জাতিসংঘ গঠনমূলক আলোচনার প্রস্তাব রেখেছে এবং সরকারের সঙ্গে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নীতিগত, পদ্ধতিগত এবং বাস্তবায়ন সম্পর্কিত বিষয়গুলো বিবেচনা করেছে। এই আলোচনা চালিয়ে যেতে জাতিসংঘ এখনও আগ্রহী।

এছাড়াও, ভাসান চরে যেকোনো স্থানান্তরের পূর্বে সর্বাঙ্গীণ সুরক্ষা বিষয়ক একটি প্রায়োগিক মূল্যায়ন (টেকনিক্যাল প্রোটেকশন এসেসমেন্ট) করার জন্য জাতিসংঘ বরাবর আহ্বান জানিয়েছে।

জাতিসংঘের এই নিরপেক্ষ মূল্যায়নে শরণার্থীদের বাসস্থান হিসেবে ভাসানচরের নিরাপত্তা, প্রায়োগিক সম্ভাব্যতা, স্থায়িত্ব এবং শরণার্থীদের সুরক্ষা কাঠামো এবং তাদের সহায়তা ও সেবা-গ্রহণের অবকাঠামোর সার্বিক পর্যালোচনা করা হবে।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক ক্যাম্পেইনার সাদ হামাদি বলেছেন, বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের অবিলম্বে ভাসানচরে আরও রোহিঙ্গা শরণার্থীর স্থানান্তর বন্ধ করা উচিত। যারা সেখানে আছে, তাদের মূল ভূখণ্ডে ফিরিয়ে আনা উচিত।

অ্যামনেস্টির দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক ক্যাম্পেইনার বলেছেন, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের (রোহিঙ্গা) সম্পূর্ণ ও অবহিতপূর্বক সম্মতি ছাড়া তাদের ভাসানচর বা অন্য কোনো জায়গায় স্থানান্তরের কোনো পরিকল্পনা নেওয়া যাবে না।

এছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়ন জানিয়েছে, ভাসানচর স্থানান্তর নিয়ে জাতিসংঘের কারিগরি কমিটির মূল্যায়নের পরিপ্রেক্ষিতে তাদের প্রতিক্রিয়া জানাবে।

উল্লেখ্য, কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের একটি দলকে বৃহস্পতিবার ভাসানচর পাঠানো হচ্ছে। প্রথম দলে প্রায় ৫০০ রোহিঙ্গাকে পাঠাতে সরকার উদ্যোগ নিয়েছে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.