ভারত থেকে অনুপ্রবেশকারীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। সেখানে দীর্ঘদিন নাগরিকত্ব না পেয়ে নানা বঞ্চনার শিকার হয়ে ভুক্তভোগীরা সীমান্ত দিয়ে প্রবেশ করছেন বাংলাদেশে।ভারতের আইনশৃংখলা বাহিনী অনেককে আটক করে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিচ্ছে বৈধ কাগজপত্র না থাকার কথা বলে।
ফলে সীমান্ত এলাকায় কঠোর সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বিজিবি।
গত ১০ দিনে ঝিনাইদহের মহেশপুর সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে ঢোকার সময় ২০৩ জনকে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। অনুপ্রবেশের অভিযোগে মামলা দিয়ে তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তবে সীমান্ত এলাকায় এখনও অনেকেই অবস্থান করছে বলে শোনা গেছে।
বিজিবি বলছে, আটক হওয়া ব্যক্তিদের বেশির ভাগই ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের রাজধানী বেঙ্গালুরুর বাসিন্দা। আটক হওয়া লোকজন জানিয়েছেন, ভারতে জাতীয় নাগরিক তালিকার (এনআরসি) আতঙ্ক ও নানা চাপের কারণে তাঁরা ভারত ছেড়ে চলে এসেছেন। তাঁরা আর সে দেশে ফিরতে চান না।
মহেশপুর সীমান্তের কয়েকজন বাসিন্দা জানিয়েছেন,বিজিবির চোখ ফাঁকি দিয়ে গভীর রাতে ভারত ও বাংলাদেশি দালালদের মাধ্যমে বাংলাদেশের ঢুকে পড়ছেন নারী-পুরুষ ও শিশুসহ অসংখ্য মানুষ।
জেলার মহেশপুরে ভারতীয় সীমান্ত রয়েছে ৫৭ কিলোমিটার। এর মধ্যে কাঁটাতারবিহীন এলাকা রয়েছে প্রায় ১১ কিলোমিটার। এই সীমান্ত এলাকার মাটিলা, লেবুতলা, মকধ্বরপুর, বাঁশবাড়ি, পলিয়ানপুরসহ বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে এ অনুপ্রবেশ ঘটছে।
এদিকে এই ‘অনুপ্রবেশে’র ঘটনায় বিজিবি মহেশপুর সীমান্তে টহল বাড়িয়েছে৷ বাড়ানো হয়েছে সতর্কতাও৷ মহেশপুরের সাথে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ২০-২৫ কিলোমিটার সীমান্ত আছে৷ বিজিবি জানায়, তারা মহেশপুরের খোলাসপুর, পালিয়ানপুর ও মাটিলা সীমান্ত দিয়ে প্রবেশ করছে৷ সংলগ্ন এলাকার সাধারণ মানুষকেও সতর্ক করা হয়েছে৷ কেউ ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করলেই বিজিবিকে খবর দিতে বলা হয়েছে৷
শনিবার বিজিবির মিডিয়া উইং থেকে ল্যান্স নায়েক মোমিন বলেন, ‘‘আমরা সীমান্তে কড়াকড়ি ও সতর্কতা বাড়িয়েছি৷ শনিবারও ২২ জনকে আটক করা হয়েছে৷ তারা ভারত থেকে আসছে৷ আটকের পর তাদের নাগরিকত্ব যাচাই করা হচ্ছে৷ বাংলাদেশে যারাই অনুপ্রবেশ করার চেষ্টা করবে তাদেরই আটক করা হবে৷”
উল্লেখ্য, গত আগস্টে ভারতে নাগরিকপঞ্জি প্রকাশের পর সেখানে বাংলাভাষী অনেকেই চাপের মুখে আছেন৷ ২২ নভেম্বর বেনাপোল সীমান্ত দিয়েও বাংলাদেশে প্রবেশের সময় ৫৪ জন নারী ও পুরুষকে আটক করা হয়৷