The news is by your side.

বিশ্বব্যাপী সংহতি জোরদার করতে হবে:  প্রধানমন্ত্রী

0 195

 

 

বৈশ্বিক সংকট মোকাবেলায় চার দফা প্রস্তাব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুক্রবার রাতে খাদ্য, জ্বালানি ও অর্থসংক্রান্ত ‘গ্লোবাল ক্রাইসিস রেসপন্স গ্রুপের (জিসিআরজি)’ প্রথম বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী এই প্রস্তাব দেন। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের আহ্বানে প্রধানমন্ত্রী ভার্চুয়ালি জিসিআরসি বৈঠকে যোগ দেন।

প্রধানমন্ত্রী তাঁর প্রথম প্রস্তাবে বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই বিশ্বব্যাপী সংহতি জোরদার করতে হবে এবং একটি সুসমন্বিত প্রতিক্রিয়া গ্রহণ করতে হবে।

জি-৭, জি-২০, ওইসিডি এবং আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। ’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই গ্রুপের স্টিয়ারিং কমিটি সব বড় আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে গঠিত। এটি দেখে আমি খুশি হয়েছি। আমরা সংকট মোকাবেলায় কার্যকর সুপারিশগুলো সাজানোর জন্য তাদের প্রচেষ্টায় পূর্ণ সমর্থন দেব। ’

প্রধানমন্ত্রী তাঁর দ্বিতীয় প্রস্তাবে বৈশ্বিক লজিস্টিক এবং সরবরাহ শৃঙ্খল ব্যবস্থায় ব্যাঘাত তাত্ক্ষণিকভাবে মোকাবেলার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, এটি পণ্যের ক্রমবর্ধমান মূল্য নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করবে। বৈশ্বিক বাণিজ্য ও রপ্তানি আয়, বিশেষ করে স্বল্পোন্নত দেশ এবং অন্য দুর্বল দেশগুলোকে পুনরুজ্জীবিত করার ক্ষেত্রে লক্ষ্য অর্জনে আন্তর্জাতিক সমর্থনও থাকতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, উন্নত অর্থনীতি ও বহুপক্ষীয় আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে এবং শুল্কমুক্ত-কোটামুক্ত বাজারে প্রবেশাধিকার এবং আরো সহজলভ্য অর্থায়ন প্রদান করতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী তাঁর তৃতীয় প্রস্তাবে বলেন, কার্যকর খাদ্য সঞ্চয় ও বিতরণ ব্যবস্থার জন্য কৃষি খাতের জন্য প্রযুক্তি সহায়তা এবং বিনিয়োগের ওপর আরো বেশি মনোযোগ দেওয়া জরুরি। তিনি বলেন, নবায়নযোগ্য শক্তির ক্ষেত্র, বিশেষ করে স্বল্পোন্নত দেশগুলোতে অনেক অব্যবহৃত ব্যবসার সুযোগ রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী ৪৮ সদস্যের জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ ফোরামের (সিভিএফ) সভাপতি হিসেবে বলেন, ‘আমরা অনেক উন্নয়নশীল ক্ষুদ্র দ্বীপরাষ্ট্র ও সাগর পৃষ্ঠের কাছাকাছি উচ্চতায় অবস্থিত জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পেয়েছি। সেসব দেশে কৃষি-খাদ্য ব্যবস্থা গুরুতর চাপের মধ্যে রয়েছে। ’

শেখ হাসিনা তাঁর বক্তৃতার শেষদিকে আরেকটি প্রস্তাবে বলেন, ‘আমাদের জাতীয় উন্নয়ন যাত্রা অনেক উদ্ভাবনী জলবায়ু কর্মের নেতৃত্ব দিয়েছে। আমরা অন্যদের সুবিধার জন্য জলবায়ু পরিবর্তন, জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি এবং পরিবেশগত অবক্ষয়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আমাদের জ্ঞান, বোঝাপড়া এবং অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিতে চাই। ’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশ বহুপক্ষীয়তায় দৃঢ় বিশ্বাসী। আমরা সর্বদা বিশ্ব শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং উন্নয়নে অবদান রাখার জন্য জাতিসংঘের আহ্বানে সাড়া দিয়েছি। এই গ্রুপকে সমর্থন করার জন্য আমাদের প্রতিশ্রুতি সেই প্রত্যয় থেকে উদ্ভূত হয়েছে। ’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা আমাদের রপ্তানি খাত এবং এসএমইকে সমর্থন করার জন্য বাস্তবসম্মত উদ্যোগও নিয়েছি। ২৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের উদ্দীপনা প্যাকেজ চালু করা হয়েছিল। এই পদক্ষেপগুলো আমাদের গত অর্থবছরে ৬.৯৪ শতাংশ জিডিপি বৃদ্ধির হার অর্জনে সহায়তা করেছে। ’

তিনি বলেন, ‘আমরা খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছি এবং জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছি। তবে ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতিকে অত্যন্ত অস্থিতিশীল করে তুলেছে। স্বল্প সরবরাহ এবং খাদ্য, জ্বালানি ও অন্যান্য পণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি এরই মধ্যে সাধারণ মানুষের জীবনে মারাত্মক চাপ সৃষ্টি করেছে। ’

প্রধানমন্ত্রী ‘গ্লোবাল সাউথের’ একজন প্রতিনিধি হিসেবে সংকটের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত লক্ষাধিক মানুষের কণ্ঠস্বরকে সামনে আনছি। এলডিসি এবং এসআইডিগুলো সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য তাদের অবিলম্বে এবং লক্ষ্যযুক্ত সহায়তা ব্যবস্থার প্রয়োজন।

শেখ হাসিনা বলেন, প্রস্তাবগুলো এগিয়ে নিতে আমরা বিদ্যমান উত্তর-দক্ষিণ, দক্ষিণ-দক্ষিণ এবং ত্রিভুজাকার সহযোগিতার সুবিধা নিতে পারি। এ ক্ষেত্রে বেসরকারি খাতের সঙ্গে সম্পৃক্ততাও গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে।

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.