প্রবাসীরা দেশে এলে নবাবজাদা হয়ে যান: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ইতালি থেকে ফেরত আসা বাংলাদেশি যেসব নাগরিক আশকোনার হজক্যাম্পে উগ্র আচরণ করেছেন তাদের সমালোচনা করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন, প্রবাসীরা দেশে এলে নবাবজাদা হয়ে যান। তাঁরা কোয়ারেন্টিনে যাওয়ার বিষয়ে খুব অসন্তুষ্ট হন। ফাইভ স্টার হোটেল না হলে তাঁরা অপছন্দ করেন।
রোববার (১৫ মার্চ) রাজধানীর ইস্কাটনে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিস (বিস) মিলনায়তনে এক সেমিনারে শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
এর আগে শনিবার (১৪ মার্চ) ইতালি থেকে ফেরত আসা ১৪২ জনকে আশকোনা হজক্যাম্পের কোয়ারেন্টিনে নিয়ে যাওয়ার পর বেশ কিছু প্রবাসী বিক্ষোভ করেন। তারা নিজেদের বাড়ি ফেরার দাবি জানান।
নিজেদের দুর্বলতার কথা স্বীকার করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদেরতো দৈন্য আছে। এটা তো একটা বিশেষ অবস্থা। আমরা যাঁদের নিয়ে আসি, তাঁদের হজক্যাম্পে রাখি, এখন আরও কয়েকটা হাসপাতালও জোগাড় করেছি।’
গতকাল শনিবার ইতালিফেরত প্রবাসীদের হজ ক্যাম্পে কোয়ারেন্টিনে রাখা হলে তাঁরা বিক্ষোভ করেন। এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘গতকাল খুব অস্থিরতা করেছেন। তাঁরা দেশে আসছেন, কোনো কোয়ারেন্টিনে যেতে চান না। সঙ্গে সঙ্গে বাড়িতে যাবেন, এই আগ্রহে আসছেন। আমরা যেখানে রেখেছিলাম, আগেও রেখেছিলাম, তাঁরা সেটা পছন্দ করেননি। বাংলাদেশে ফ্ল্যাট বাথরুম, তাঁরা কমোড বাথরুম ইউজ করেন, সুতরাং তাঁদের অসুবিধা হয়েছে। আমরা সেখানে পর্যটন থেকে খাবার দিয়েছি, তাঁরা মনে করেন সোনারগাঁও, ফাইভ স্টার থেকে খাওয়ার দেওয়া উচিত। সেটা দিতে পারিনি। সে জন্য তাঁরা অসন্তুষ্ট হয়েছেন। তাঁদের বিভিন্ন রকম অভিযোগ ছিল। তাঁরা মনে করেন এগুলো খুব নোংরা।’
এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সরকারের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে দেশের জনগণকে রক্ষা করা। সুতরাং কয়েকজনের কারণে দেশের সাড়ে ১৬ কোটি মানুষ অসুস্থ হোক- তা সরকার চায় না। সরকার আবেদন করেছিল প্রবাসীরা যেন এখন দেশে না আসেন, তারা যেন আরও কিছুদিন সেখানে থাকেন। কিন্তু তারা শুনেননি। সে জন্য বাধ্য হয়ে ফ্লাইট বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। আজ (রোববার) মধ্যরাত ১২টা ১ মিনিট থেকে এটি কার্যকর হবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোববার রাত ১২টা এক মিনিট থেকে যুক্তরাজ্য ছাড়া ইউরোপের অন্য সব দেশে বিমান চলাচল দুই সপ্তাহের জন্য বন্ধ থাকবে। যেসব দেশ বাংলাদেশের সঙ্গে বিমান চলাচল নিষিদ্ধ করেছে, তাদের সঙ্গেও বিমান চলাচল বন্ধ রাখা হবে। এছাড়া অন-অ্যারাইভেল ভিসা দেয়া বন্ধ রাখবে সরকার।
আরেক প্রশ্নের জবাবে এ কে মোমেন বলেন, স্কুল–কলেজ হিড়িকের মধ্যে বন্ধ করে দেওয়া হলে একটা আতঙ্ক সৃষ্টি হবে। আমাদের দেশে এটা ইমপোর্টেড ভাইরাস। এখানে কোনও শিশুতো আক্রান্ত না। বাহিরেও শিশুরা কম আক্রান্ত হয়েছে। সুতরাং এখনই বন্ধ হচ্ছে না। তবে, সেরকম পরিস্থিতি হলে বন্ধ হবে।