অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আগামী ১৯ জানুয়ারির মধ্যে সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার অগ্রগতি প্রতিবেদন আদালতে দাখিলের জন্য ক্যান্টনমেন্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৫ জানুয়ারি) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মোহাম্মদ আছাদুজ্জামানের আদালত এ আদেশ দেন। গ্রেফতার সংক্রান্ত তামিল প্রতিবেদন দাখিলের জন্য এদিন ধার্য ছিল।
দুদকের কোর্ট পরিদর্শক আমিনুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গ্রেফতারি পরোয়ানার তামিল প্রতিবেদন গ্রহণ করেন আদালত। এরপর ক্যান্টনমেন্ট থানার ওসিকে ১৯ জানুয়ারির মধ্যে তারেক ও জোবায়দার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন আদালত।
দুদক কৌসুলি অ্যাডভোকেট মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, তারেক রহমান ও জোবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে আদালতের গ্রেফতারি পরোয়ানা ছিলো। ওই পরোয়ানা সংক্রান্ত তামিল প্রতিবেদন দাখিলের পর আদালত সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ দিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ঘোষিত আয়ের বাইরে ৪ কোটি ৮১ লাখ ৫৩ হাজার ৫৬১ টাকার মালিক হওয়া ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে ২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর কাফরুল থানায় এ মামলা করে দুদক। মামলায় তারেক রহমান, ডা. জোবায়দা রহমান ও তার মা ইকবাল মান্দ বানুকে আসামি করা হয়। ওই বছরই তারেক ও জোবায়দার পৃথক তিনটি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে রুল জারি করে হাইকোর্ট। দীর্ঘ ১৫ বছর পর ওই রুল নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেয় দুদক। দীর্ঘ শুনানি শেষে গত জুন মাসে হাইকোর্ট রুল খারিজ করে নিম্ন আদালতে বিচার কার্যক্রম শুরুর নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। ওই নির্দেশের পরই তারেক রহমান ও জোবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা সংক্রান্ত আদালতের আদেশ তামিলের জন্য বলা হয়। এরপরই পরোয়ানা তামিল সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে পুলিশ। ওই প্রতিবেদন পেয়ে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ দিলো।
বিগত সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৮ সালে দেশত্যাগ করেন তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান। এরপর থেকেই তিনি গত ১৪ বছর ধরে সপরিবারে লন্ডনে অবস্থান করছেন। এ সময়ের মধ্যে তারেক রহমান একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলাসহ তিনটি মামলায় দণ্ডিত হয়েছেন। এই মামলায় তাকে যাবজ্জীবন দণ্ড দিয়েছে ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১।
এছাড়া দণ্ডিত হওয়া বাকি দুটি মামলা হলো দুর্নীতির অভিযোগে দুদকের দায়েরকৃত। এসব মামলায় বিচারের শুরু থেকেই তিনি পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে ঢাকার আদালতগুলো।