মৃত্যুর আড়াই মাস পেরিয়ে গেছে। এর মধ্যে মুম্বাই পুলিশ, পাটনা পুলিশ, ইডি (ইনপোর্সমেন্ট ডাইরেকটরেড) বা সিবিআই (সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন) কেউ কোনো উপসংহার টানতে পারেনি। তদন্তে উঠে এসেছে, মাদকাসক্ত ছিলেন সুশান্ত। ফলে তদন্তে যুক্ত হয়েছে নার্কোটিকস কন্ট্রোল ব্যুরো এনসিবি বা মাদকবিষয়ক তদন্ত বিভাগ।
ইতিমধ্যে এনসিবি দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে। হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটের মাধ্যমে জানা যায়, এদের সঙ্গে যোগসাজশ রয়েছে রিয়া চক্রবর্তীর ভাই শৌভিক চক্রবর্তীর।
এর আগে সুশান্তের বাড়ির রাঁধুনি নীরজ দাবি করেছিলেন, গাঁজার নেশা ছিল সুশান্তের। তিনি নাকি মাঝেমধ্যে বানিয়েও দিতেন। সিবিআই সুশান্তের ম্যানেজার শ্রুতি মোদিকে বেশ কয়েক দফায় জেরা করেছে।
বৃহস্পতিবার শ্রুতি জানান, সুশান্ত ও রিয়া একসঙ্গে বসেই গাঁজা খেতেন। তিনি সিবিআইকে জানান, দিনের মধ্যে অনেকটা সময় বাড়ির ছাদেই সময় কাটাতেন সুশান্ত ও রিয়া। সেখানে এসে যোগ দিতেন রিয়ার ভাই শৌভিক এবং বাড়ির ম্যানেজার স্যামুয়েল মিরান্ডা।
এরপর একসঙ্গে বসেই এই চারজন ঘণ্টার পর ঘণ্টা গাঁজা খেতেন আর আড্ডা দিতেন। তবে সেই আড্ডা যে কেবল গাঁজায় শুরু হয়ে গাঁজায় শেষ হতো, তা নয়। এসব ছাড়াও নানান রকমের ড্রাগস নিয়ে হাজির হতেন শৌভিক ও স্যামুয়েল।
মাত্র এক সপ্তাহ আগে ভাইরাল হওয়া একটি সাক্ষাৎকারে রিয়া জানিয়েছিলন যে তিনি কোনো দিন গাঁজা খাননি। শুধু গাঁজা কেন, কোনো ধরনের ড্রাগসের সঙ্গে তাঁর পরিচয় নেই। জীবনে কখনোই কোনো ধরনের মাদক নেননি তিনি। এমনকি তা প্রমাণ করার জন্য সব ধরনের রক্ত পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত তিনি। এই একই কথা বলেছেন রিয়ার আইনজীবী সতীশ মানশিন্ডে। তাঁর মক্কেল কোনো দিন মাদকদ্রব্য কী জিনিস, তা চেখেই দেখেননি!
অন্যদিকে ইডি এনসিবিকে জানিয়েছে যে তারা গত এক বছর চার মাসে রিয়ার ফোনের সব মেসেজ দেখেছে। সেখানে ড্রাগসংক্রান্ত বেশ কিছু তথ্যের উল্লেখ রয়েছে। কয়েকজনের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথাও হয়েছে রিয়ার। তবে রিয়া বলেছেন, সুশান্তের জন্যই তাঁকে মাদকের খোঁজ করতে হয়েছিল। অন্যদিকে সুশান্তের বাবা কে কে সিং সুশান্তের মাদকাসক্ত হওয়ার দায় রিয়ার ওপর চাপিয়ে আসছেন।
১৪ জুন মুম্বাইয়ের বান্দ্রায় নিজ বাসা থেকে উদ্ধার করা হয় বলিউডের এই তরুণ নায়কের লাশ। যদিও প্রাথমিক ও চূড়ান্ত তদন্ত শেষ মুম্বাই পুলিশ জানিয়েছিল, সুশান্তের অপমৃত্যু আত্মহত্যাই। কিন্তু সুশান্তের পরিবারসহ ভক্তরা এই মৃত্যুকে আত্মহত্যা মানতে নারাজ। সেই তালিকায় রয়েছেন বলিউডের অসংখ্য তারকা থেকে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বও। এমনকি বিহার পুলিশের ডিজিও তদন্ত শুরুর পর থেকে আত্মহত্যার কথা মেনে নিতে পারছিলেন না।
অন্যদিকে একের পর এক প্রেমে ব্যর্থতা, মাদক, বাইপোলার ডিজঅর্ডার, নিম্নমুখী ক্যারিয়ার, পরিবারের সঙ্গে বিচ্ছিন্নতা—সবকিছু সুশান্তকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছিল বলে দাবি রিয়ার।