বিক্রি হয়ে যাচ্ছে রবীন্দ্রনাথের লন্ডনের বাড়ি
এশিয়ার প্রথম নোবেল পুরস্কারের আঁতুড়ঘর বলা যায় হ্যাম্পস্টেডের এই বাড়িটিকে
বিক্রি হয়ে যাচ্ছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিধন্য লন্ডনের বাড়ি। এই বাড়িতে বসেই তিনি গীতাঞ্জলির ইংরেজি অনুবাদ পাঠিয়েছিলেন বন্ধু রদেনস্টাইনের কাছে। বাকিটা ইতিহাস। এশিয়ার প্রথম নোবেল পুরস্কারের আঁতুড়ঘর বলা যায় হ্যাম্পস্টেডের এই বাড়িটিকে।
২০১৫ সালে লন্ডনে এসে বাড়িটি দেখে সরকারিভাবে তা কিনে নেওয়ার জন্য ভারত সরকারকে চিঠি লিখেছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। কিন্তু নানা আইনগত কারণে তা সম্ভব হয়নি। সম্পত্তিটি ব্যক্তিগত হাতে থাকায় বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বর্তমান মালিক।
সাহিত্যপ্রেমী বাঙালি পর্যটকেরা কেউ কেউ লন্ডন গেলে এই বাড়িটি দেখতে যান। কলকাতার বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ সত্যম রায়চৌধুরী কয়েক বছর আগে ওই বাড়িটির সামনে এক শ্রদ্ধার্ঘ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন। নামী শিল্পীরা গানে, কবিতায় ভরিয়ে তুলেছিলেন হ্যাম্পস্টেডের আকাশ বাতাস।
২০১৫ এবং ২০১৭ সালে দু’বার বাড়িটি কিনে নিয়ে সংরক্ষণের আবেদন জানালেও ভারত সরকারের তরফে কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি। মুখ্যমন্ত্রী বাড়িটিতে রবীন্দ্রনাথের স্মারক সংগ্রহশালা তৈরি করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। ব্যক্তিগত সম্পত্তি হলেও হেরিটেজ হিসেবে তাকে রক্ষা করার কথা বললেও কার্যক্ষেত্রে তার কিছুই হয়নি, এটাই আক্ষেপের বলে মনে করছেন অনুরাগীরা।
১৯১২ সালে যখন লন্ডন এসেছিলেন, তখন পুত্র রথীন্দ্রনাথ ও পুত্রবধূ প্রতিমাকে নিয়ে এখানেই ছিলেন কবিগুরু।
১৯১৩ সালে গীতাঞ্জলির জন্য নোবেল সম্মান পান রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তাঁর স্মৃতিবিজড়িত এই তিন শয়নকক্ষের বাড়িটির দাম উঠেছে ২৭ লক্ষ পাউন্ড অর্থাৎ ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ২৭.৩০ কোটি টাকা। উত্তর লন্ডনের হ্যাম্পস্টেড হিথে অবস্থিত
এই বাড়িটি বিক্রির দায়িত্বে রয়েছেন ইউরোপিয়ান কোম্পানি গোল্ডস্মিথ অ্যান্ড হাওল্যান্ড। এতদিন ওই বাড়িটি হেরিটেজ হিসেবেই মান্যতা পেত, কিন্তু হেরিটেজ ট্রাস্টের মেয়াদ শেষ হতে তা আর বাড়ানো হয়নি। ফলে ১৮৬৩ সালে তৈরি এই ভিক্টোরিয়ান ভিলা ব্যক্তিগত সম্পত্তিতে পরিণত হয়। তাতে যদিও এর ঐতিহাসিক মহত্ত্ব কোনওভাবে কমে না।